অসুস্থতার কারণেই মাল্টিঅর্গান ফেলিওর হয় বাঁকুড়ার ডিওয়াইএফআই-এর সদস্য মইদুল মিদ্যার। পুলিশের মারে মৃত্যু হয়নি মইদুলের। আজ, মঙ্গলবার ময়নাতদন্তের রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পরে এমনটাই জানাল পুলিশ। সূত্রের খবর, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বলছে, আগে থেকেই অসুস্থ ছিলেন মইদুল। তার জেরেই তাঁর একের পর এক অঙ্গ বিকল হয়ে যায়। পুলিশের লাঠির সঙ্গে এর সম্পর্ক নেই। রিপোর্টে বলা হয়েছে, মৃতের শরীরে ফুসফুস, হার্ট, কিডনির মতো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলি আগেই বিকল হয়ে যায়। গত ১১ ফেব্রুয়ারি নবান্ন অভিযানের দিন হাসপাতালে ভরতি হয়েছিলেন বাঁকুড়ার ডিওয়াইএফআই নেতা মইদুল মিদ্দার। ১৫ তারিখে শেক্সপিয়র সরণির একটি নার্সিংহোমে মৃত্যু হয় তাঁর। সিপিএমের পক্ষ থেকে অভিযোগ তোলা হয়, পুলিশের লাঠির ঘায়ে পড়ে যান মইদুল। তাঁর শরীরে প্রচুর লাঠির আঘাত লাগে। পুলিশের লাঠিতেই মৃত্যু হয়েছে তাঁরা। কলকাতা পুলিশ মর্গে তাঁর দেহের ময়নাতদন্ত হয়। ময়নাতদন্তের সময় ভিডিওগ্রাফিও হয়েছিল। সোমবার ময়নাতদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্ট পুলিশের কাছে আসে। সেই রিপোর্টে বলা হয়েছে, মৃতের শরীরে হৃত্পিণ্ড, ফুসফুস, কিডনির মতো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গ আগেই অসুস্থতার কারণে বিকল হয়ে গিয়েছিল। সেই কারণেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। মৃতের হাঁটুতে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। সেই আঘাত পড়ে যাওয়ার কারণে হতে পারে। কিন্তু ওই আঘাত মৃত্যুর কারণ নয় বলে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে দাবি চিকিত্সকদের। লালবাজারের গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, মইদুল মিদ্দাকে প্রথমে পার্ক স্ট্রিটের একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাঁকে ভরতি করা হয় শেক্সপিয়র সরণির নার্সিংহোমে। কিন্তু পার্ক স্ট্রিটের নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ পুলিশকে কিছু জানায়নি কেন? তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। এই ব্যাপারে কয়েকজন সিপিএম নেতাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তদন্তের জন্য গোয়েন্দা পুলিশ ময়নাতদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছিল। এই রিপোর্টের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।মৈদুলের মৃত্যুর খবর পেয়ে উল্লেখ্য, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মৃত বাম যুব কর্মীর স্ত্রীকে সরকারী কাজের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এই মর্মে তিনি বাম নেতা ও বিধায়ক সুজন চক্রবর্তীকে ফোন করেও সহায়তার আশ্বাস দেন। সেই প্রতিশ্রুতি মেনেই দেওয়া হয়েছে সরকারী কাজের নিয়োগপত্র। ১৯ ফ্রেব্রুযারী বিকেল প্রায় ৫টা নাগাদ রাজ্যের প্রতিমন্ত্রী শ্যামল সাঁতরা, বাঁকুড়ার জেলাশাসক, পুলিশ সুপার চোরকোলা গ্রামে এসে মৃত মৈদুলের স্ত্রীর হাতে তুলে দিলেন চাকরীর নিয়োগপত্র। তাঁকে কোতুলপুর থানার পোস্টিং দেওয়া হয়েছে।