জেলা

পড়ুয়াদের সাসপেনশনের মেয়াদ ৩মাস বৃদ্ধির খবর সামনে আসতেই ফের ক্ষোভ বিশ্বভারতীতে

পড়ুয়াদের সাসপেনশনের মেয়াদ বৃদ্ধির খবর সামনে আসতেই ফের ক্ষোভের আগুন জ্বলল বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে। এই নিয়ে তিন বার, তিন মাসের জন্য, তিন পড়ুয়ার সাসপেনশনের নির্দেশ সামনে এল। মঙ্গলবার বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফ থেকে নোটিস দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়, সাসপেন্ড হওয়া পড়ুয়াদের সাসপেনশের সময়সীমা আরও ৩ মাস বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এরপরেই প্রত্যাহারের দাবিতে বিশ্বভারতী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে প্রতিবাদ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে বিশ্বভারতী ছাত্রছাত্রী ঐক্য। এই নিয়ে নানা মহলে ইতিমধ্যেই আলোচনা শুরু হয়েছে। সাসপেন্ড হওয়া ছাত্রছাত্রীরা জানিয়ে দিয়েছে, তদন্তের নাম করে দফায় দফায় সাসপেনশন বাড়িয়ে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ শুধু শিক্ষাজীবনকে বিপন্ন করছে তাই না, এমন অবস্থায় হতাশা থেকে কোনও ছাত্রছাত্রী আত্মহননের পথ বেছে নিলে, তার জন্য দায়ী থাকবেন উপাচার্য এবং বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। বিশ্বভারতীর প্রক্টর শঙ্কর মজুমদারের স্বাক্ষরিত একটি নির্দেশিকা সামনে আসে মঙ্গলবার। সেখানেই তিন পড়ুয়ার সাসপেনশনের মেয়াদ আরও তিন মাসের জন্য বাড়ানোর কথা জানানো হয়। এই ঘটনার সূত্রপাত চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে। বিশ্বভারতীর অর্থনীতি ও রাজনীতি বিভাগের এক অধ্যাপককে সাসপেন্ড করে কর্তৃপক্ষ। এমনকি তাঁর বসার ঘরে তালা দিয়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনার প্রতিবাদে গত ৯ জানুয়ারি ছাতিমতলায় আন্দোলন করেন পড়ুয়ারা। ১৪ জানুয়ারি বিশ্বভারতীর তরফে অর্থনীতি ও রাজনীতি বিভাগের দুই ছাত্র ফাল্গুনী পান ও সোমনাথ সৌ এবং হিন্দুস্থানী শাস্ত্রীয় বিভাগের ছাত্রী রূপা চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ আনা হয়। তিন মাসের জন্য অর্থাত্‍ ১৪ই মার্চ পর্যন্ত সাসপেন্ড করা হয় তাঁদের। মার্চ মাসে ফের তিন মাসের জন্য অর্থাত্‍ ১৪ই জুলাই পর্যন্ত সাসপেনশনের মেয়াদ বাড়ানো হয়। গত ২২ এপ্রিল সাসপেনশন প্রত্যাহারের দাবিতে অবস্থানে বসেন এক পড়ুয়া। প্রায় ২০০ ঘণ্টারও বেশি চলে অবস্থান। করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে শেষ পর্যন্ত অবস্থান তুলে নেন তাঁরা। ছাত্রছাত্রীদের সাসপেনশন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন অশান্তি চরমে তখন ফের তৃতীয় বার সাসপেনশনের মেয়াদ বাড়ানোর নির্দেশ সামনে আসে। বিশ্বভারতীর তরফে জানানো হয়েছে, আজ বুধবার ১৪ জুলাই থেকেই এই সাসপেনশন কার্যকর হবে। আগামী তিন মাস এই সাসপেনশন বহাল থাকবে। নির্দেশিকায় আরও বলা বয়, তদন্ত প্রক্রিয়া যতদিন চলবে ততদিনই এই সাসপেনশন কার্যকরী থাকবে। বস্তুত এর পরেই প্রশ্ন উঠেছে, তদন্ত প্রক্রিয়া কতদূর? কীসের ভিত্তিতে বারবার পড়ুয়াদের সাসপেন্ড করা হচ্ছে? তার কোনও ব্যাখ্যা নির্দেশিকায় ছিল না। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের তরফে এদিনও তার কোনও জবাব মেলেনি। এদিকে, বহিস্কৃত পড়ুয়াদের বিষয়টি নিয়ে কর্তৃপক্ষের তরফে আদৌ কোনও তদন্ত হয়েছে কিনা সে বিষয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন অনেক পড়ুয়া। মাসের পর মাস এমন সাসপেনশনের নির্দেশিকাকে অনৈতিক ও অমানবিক বলে দাবি করেছেন অনেক পড়ুয়াই।