সমাজকর্মী এরেন্দ্র লিচোংবাম-এর মুক্তির পাঁচদিন পরেই মুক্তি পেলেন একই ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া সাংবাদিক কিশোরচন্দ্র ওয়াংখেম। শুক্রবার হাইকোর্টের নির্দেশে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এর আগে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে মুক্তি পেয়েছিলেন এরেন্দ্র লিচোংবাম। রাজ্যের এক বিজেপি নেতার মৃত্যুর পর ‘গোবর’ ও ‘গোমূত্র’ প্রসঙ্গে করা এক ফেসবুক পোষ্টের জেরে এই দুই ব্যক্তিকে জাতীয় সুরক্ষা আইনে গ্রেপ্তার করা হয়েছিলো। সরকারি সূত্র অনুসারে, শুক্রবার মণিপুর হাইকোর্টের এক ডিভিশন বেঞ্চ কিশোরচন্দ্র ওয়াংখেমের মুক্তির নির্দেশ দেয়। এই বেঞ্চের নেতৃত্ব দেন বিচারপতি সঞ্জয় কুমার। বেঞ্চের অন্য সদস্য ছিলেন বিচারপতি কে এইচ নবীন সিং। এদিনই সাজিওয়ার মণিপুর সেন্ট্রাল জেল থেকে এনএসএ-তে আটক কিশোরচন্দ্রকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। কিশোরচন্দ্রের মুক্তির দাবীতে হাইকোর্টে পিটিশন দাখিল করেছিলেন তাঁর স্ত্রী রঞ্জিতা এলাংবাম। তাঁর আবেদনের ভিত্তিতে আদালত বিকেল ৫টার আগে কিশোরচন্দ্রকে মুক্তি দেবার নির্দেশ দেয়। এর পাশাপাশি সাংবাদিক কিশোরচন্দ্রকে ক্ষতিপূরণ দেবার বিষয়ে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত জানাবে আদালত। এদিন ৩ পাতার নির্দেশে আদালত জানায়, আমরা দেখেছি মণিপুরী ভাষায় করা এক ফেসবুক পোষ্টের জন্য আবেদনকারীর স্বামীকে জাতীয় সুরক্ষা আইন ১৯৮০তে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যে পোস্টে ব্যাঙ্গাত্মকভাবে তিনি জানিয়েছিলেন গোবর এবং গোমূত্র দিয়ে করোনা ভাইরাসের চিকিৎসা করা সম্ভব নয়। আদালত আরও জানায়, এই একই ধরণের ফেসবুক পোষ্ট করেছিলেন এরেন্দ্র লিচোংবাম। তাকেও জাতীয় সুরক্ষা আইনে গ্রেপ্তার করা হয়েছিলো গত ১৭ মে। আমাদের পর্যবেক্ষণ অনুসারে এই দুই মামলায় কোনো পার্থক্য নেই। এঁরা দুজনেই একই ধরণের ফেসবুক পোষ্ট করেছিলেন। যেখানে করোনা ভাইরাসের চিকিতসায় গোমূত্র এবং গোবরের ব্যবহারের সমালোচনা করা হয়েছিলো।গত ১৩ মে রাতে সাংবাদিক কিশোরচন্দ্র ওয়াংখেম এবং সমাজকর্মী এরেন্দ্র লিচোমবামকে গ্রেপ্তার করে মণিপুর পুলিশ। রাজ্য বিজেপি সাধারণ সম্পাদক পি প্রেমানন্দ মিটি এবং বিজেপি সহ সভাপতি উষম দেবাং-এর অভিযোগের ভিত্তিতে এই দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। রাজ্য বিজেপি সভাপতি অধ্যাপক সাইখোম টিকেন্দ্র সিং-এর মৃত্যুর পর কিশোরচন্দ্র ওয়াংখেম তাঁর ফেসবুক পোষ্টে যা লিখেছিলেন তার বঙ্গানুবাদ করলে দাঁড়ায় – গোবর এবং গোমূত্র কাজ করেনা। ভিত্তিহীন বিতর্ক। আগামীকাল আমি অবশ্যই মাছ খাবো। সমাজকর্মী এরেন্দ্র তাঁর ফেসবুক পোষ্টে লেখেন – গোবর এবং গোমূত্রে করোনা সারেনা। করোনা সারে বিজ্ঞানে এবং সাধারণ জ্ঞানে। প্রফেসরজীর আত্মা শান্তি লাভ করুক।