টানা বৃষ্টিতে জলের তলায় হুগলির খানাকুল, আরামগ্রামের একাধিক গ্রাম। শুধু বৃষ্টিপাতেই রক্ষে নেই, বিপদ বাড়াচ্ছে দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে ছাড়া জল। দুর্গাপুর ব্যারেজ সহ একাধিক ড্যাম থেকে ছাড়া হচ্ছে জল। ফলে একাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়ে পড়েছে। সড়ক ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কার্যত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে একাধিক গ্রাম। রূপনারায়ণ ও দ্বারকেশ্বরের জলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়ে গিয়েছে খানুকুলের একাধিক গ্রামে। স্বাভাবিক জীবনযাপন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে খানাকুলের গ্রামবাসীদের। এদিন সকাল থেকেই খানাকুলের বিভিন্ন গ্রামে জলের তলায় আটকে থাকা মানুষজনকে উদ্ধারে নামে সেনাবাহিনীর কপ্টার। খানাকুলের ধান্যঘরির বেড়াপাড়ার ১১ জনকে উদ্ধার করতে সফল হয়েছে সেনা বাহিনীর জওয়ানরা। উদ্ধার করার পর কপ্টারে করে তাঁদের আনা হয়েছে আশ্রয় শিবিরে। আরামবাগের একাধিক গ্রামেও নামে সেনাবাহিনীর কপ্টার। গ্রামবাসীদের উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে এনে রাখা হয়েছে। খানাকুল থেকে যে ১১ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে তাঁদের মধ্যে শিশু ও কিশোরের সংখ্যা ৮ জন মহিলা রয়েছে ২ জন। গ্রামীণ হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর সড়ক গুলি বন্ধ হয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে ফলে স্বাভাবিক জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। টানা বৃষ্টিপাতের জেরে গ্রামীণ হাওড়া, পশ্চিম বর্ধমান, ঝাড়গ্রাম জেলার একাধিক গ্রাম জলের তলায় চলে গিয়েছে। এর পাশাপাশি পুরুলিয়া এবং পশ্চিম বর্ধমান জেলাতেও ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে কয়েকদিন ধরেই। ফলে একাধিক নদীতে বাড়ছে জল। নদীগুলিতে জল বাড়ায় একাধিক সড়ক পথ রয়েছে বন্ধ। মাইথন এবং পাঞ্চেত জলাধারেও জল বাড়তে শুরু করে দিয়েছে। পাশের রাজ্য ঝাড়খণ্ডেও বৃষ্টি হচ্ছে। ফলে গ্রামীণ এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়ে গিয়েছে। জলের চাপ বেড়েছে দুর্গাপুর ব্যারেজের উপরও আর দুর্গাপুর ব্যারেজের জলধারণ ক্ষমতা অনেকটাই কম তাই বাধ্য হয়ে জল ছাড়া হচ্ছে। একদিকে ভারী বৃষ্টিপাতের জেরে নদীতে জল বাড়ছে আর দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকেও জল ছাড়া হয়েছে তার ফলে আসানসোলের ঘাঁঘর বুড়ি মন্দির চলে গিয়েছে জলের তলায়। বন্যার আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে আসানসোল,গ্রামীণ হাওড়ার একাধিক গ্রামে। বর্ধমানের একাধিক গ্রামেও ঢুকেছে জল। আসানোসেলর বেশ কিছু জায়গায় প্রবল বৃষ্টিতে বাড়িঘরও ভেঙে গিয়েছে। দ্বারকেশ্বরের বাঁধ ভেঙে বন্যায় ভাসছে খানাকুল। জলবন্দি মানুষজনকে উদ্ধারে নেমেছে বিপর্যয় মোকাবিলা দলের সদস্যরা। জল ছাড়ছে ডিবিসি আর তার জেরে জল বাড়ছে ভাগীরথী নদীতে। পূর্ব বর্ধমানের কালনার নদী গুলিতে বাঁধ ভেঙে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে পূর্বস্থলীর গ্রাম গুলিতে। চাষের জমি গুলি জলের তলায় চলে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষতির মুখে কৃষকরা। গ্রামবাসীদের কথায়, এখনই ভাঙনের কাজ শুরু না হলে জলের তলায় চলে যেতে পারে হাওড়া-কাটোয়া রেললাইনও।