আগামীকাল অর্থাৎ সোমবার সকাল ৭টা ৫৩ মিনিট ১৫ সেকেন্ডে মায়ের প্রবৃত্তি এবং চারদিন পর বৃহস্পতিবার রাত ৮টা ১৬ মিনিট ৫৫ সেকেন্ড নিবৃত্তি। সম্পূর্ণ প্রচলিত আধ্যাত্মিক রীতি মেনে এই কয়দিন চলবে দেবী কামাখ্যার অম্বুবাচি পার্বণ। প্রতিবছর মহাশক্তিপীঠ কামাখ্যাধামে ধুমধাম করে পালন করা হয় অম্বুবাচি। তবে এবার কামাখ্যায় ভক্তের প্রবেশ নিষেধ করেছে কর্তৃপক্ষ। হবে না মেলাও। খুব কমসংখ্যক সেবাইতের উপস্থিতিতে এবার সম্পন্ন করা হবে মায়ের পুজো। কামাখ্যা দেবালয় পরিচালন সমিতি ৩০ জুন পর্যন্ত দর্শনার্থীর জন্য মন্দির বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এর পর পরিস্থিতি বিবেচনা করে মন্দিরের দরজা খোলা বা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান দলৈ কবীন্দ্রপ্রসাদ শর্মা। উল্লেখ্য, কথিত আছে হিন্দুসমাজে এই অম্বুবাচির গুরুত্ব অসীম ।গুয়াহাটির নীলাচল পাহাড়ে অবস্থিত কামাখ্যা মন্দির সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৮০০ মিটার উপরে। দেবীর ৫২ শক্তিপীঠের মধ্যে অন্যতম শক্তিপীঠ। তন্ত্রমন্ত্রের স্পর্শ সংবলিত মন্দির সম্পর্কে অনেক প্রাচীন ও অলৌকিক কথা প্রচলিত রয়েছে। পৌরাণিক মতে, ভগবান বিষ্ণু যখন চক্র দিয়ে সতীর দেহকে টুকরো টুকরো করেছিলেন, তখন এই নীলাচল পাহাড়ে কামাখ্যাধামে দেবীর যোনি কেটে পড়ে। সেই অনাদি যুগ থেকে প্রতি বছর অম্বুবাচির সময় তিন বা চারদিন বিশেষভাবে মন্দিরের দরজা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ সময় পূজা-পার্বণ সমস্ত কিছু বন্ধ থাকে। বলা হয়, মা কামাখ্যা এ সময় রজঃস্বলা হন। তখন শক্তিপীঠ কামাখ্যাধামে আধ্যাত্মিক শক্তি বহুগুণ বেড়ে যায়। তাই অম্বুবাচি উপলক্ষ্যে আধ্যাত্মিক সাধনার জন্য দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অনেক সাধুসন্ত আসেন কামাখ্যাধামে। তাহলে জেনে নিন ঠিক কি কারণে এই অম্বুবাচী পালন ও তা চলাকালীন কি কি নিয়ম মেনে চলা উচিত –
প্রথমত, কামাখ্যায় পুজোর জন্য বিশেষভাবে দেবীর কোনো মূর্তি নেই দেবীর যোনী কুন্ডকেই মূলত পুজো করা হয় এবং এই চারদিন ওই কুন্ড থেকে যে রজঃ নিসৃত হয় তা অতিপবিত্র মনে করা হয় ও মন্দিরে আগত সকল পূন্যার্থীদের একটি লাল কাপড়ে তা দেওয়া হয় যা মঙ্গলের প্রতীক। দ্বিতীয়ত, এইসময় মেদিনী অপবিত্র হওয়ার দরুন পতিহীনারা ও সৎ ব্রাহ্মনরা পাকে বানানো খাবার এই কদিন গ্রহণ করেন না। যেমন উনুনে রান্না করা বা নুন বা চিনি মিশ্রিত খাবার,কোনো মিষ্টি খান না তার বদলে আগে রান্না করা খাবার খান। তৃতীয়ত, অম্বুবাচির এই চারদিন সমস্ত মন্দির,দেবদেবীর পুজো ও ঠাকুরের মুখ দেখা বন্ধ থাকে অশুচির কারণে। চতুর্থত, এটি হলো বছরের সেই সময় যখন মহিলারা সন্তান প্রাপ্তির জন্য এইস্থানে প্রার্থনা করে থাকেন|এছাড়াও এইসময় বিভিন্ন রকম তন্ত্রসাধনাও হয়ে থাকে।