ক্রাইম

ওড়িশায় ভারতীয় সেনা অফিসারের হবু স্ত্রীর ব্রা খুলে একটানা বুকে লাথি, খুলে নেওয়া হল প্যান্ট! লকাপে ঢুকিয়ে যৌন হেনস্থার অভিযোগ, গুরুতর জখম নির্যাতিতা

ফের বিজেপি শাসিত রাজ্যে যৌন হেনস্থার অভিযোগ। ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা সংবাদমাধ্যমের কাছে তুলে ধরেছেন নির্যাতিতা । যৌন হেনস্থা এবং শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠল ভুবনেশ্বরের থানার ইন্সপেক্টরের বিরুদ্ধে! অভিযোগ জানিয়েছেন প্রাক্তন ব্রিগেডিয়ারের মেয়ে এবং ভারতীয় সেনার আর্মি মেজরের হবু স্ত্রী(বাগদত্তা)! অভিযোগকারী নির্যাতিতা জানান, তাঁকে জোর করে জেলে ভরে যৌন হেনস্থা করেছে সেই পুলিশ ইন্সপেক্টর! ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন তিনি সংবাদমাধ্যমের কাছে। নির্যাতিতা জানান, পেশায় তিনি একজন আইনজীবী। পাশাপাশি ভূবনেশ্বরে তিনি একটি রেস্তোঁরা চালান। বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) থানায় নিজের ওপর হওয়া যৌন নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, গত রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) মধ্যরাতে রেস্তোঁরা বন্ধ করার একটু পরই একদল লোক তিনি ও তার হবু স্বামীর পথরোধ করে এবং তাদের সাথে মারামারি শুরু করে। ওই লোকগুলোর হাত থেকে কোনোরকমে পালাতে সক্ষম হন তারা এবং বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ জানাতে ভূবনেশ্বরের ভরতপুর থানায যান। কিন্তু থানায় একজন নারী পুলিশ ছাড়া আরও কেউ ছিল না। ওই নারী পুলিশ কেউ অভিযোগ নথিভূক্ত করার অনুরোধ করেন তারা। কিন্তু অভিযোগ নথিভূক্ত করার বদলে তাদের সাথে দুর্ব্যবহার করেন। ওই নারীর কথায়, আমি জানি না কি হল। তারা আমার হবু স্বামীকে লকআপে ভরল। যখন আমি প্রতিবাদ করলাম যে তারা একজন সেনা অফিসারকে পুলিশ হেফাজতে রাখতে পারে না। এটা বেআইনি। তখন দুই নারী অফিসার আমাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করতে শুরু করে। এরপর তিনি নিজেকে একজন আইনজীবী হিসেবে পরিচয় দেন বলে জানান। কিন্তু এতে ওই নারী কনস্টেবল রেগে যান এবং তার সঙ্গে আরও দুর্ব্যবহার করেন। তার ভাষায়, ‘এরই মধ্যে, পুলিশের একটি টহল গাড়ি থানায় প্রবেশ করে। তারপর দুই নারী অফিসার আমার চুল টেনে ধরে মারতে শুরু করে। আমি তাদের থামতে অনুরোধ করলে তারা আমাকে থানার করিডোর দিয়ে টেনে নিয়ে যায়। যখন তাদের একজন আমাকে টুটি চেপে ধরার চেষ্টা করছিল, আমি তার হাত কামড় দিই। এরপর তারা আমার জ্যাকেট খুলে ফেলে এবং এর সাথে আমার উভয় হাত বেঁধে দেয় এবং তারা একটি স্কার্ফ ব্যবহার করে আমার উভয় পা বেঁধে আমাকে একটি ঘরে ফেলে দেয়। নির্যাতিতা এও বলেন, এরপর একজন পুরুষ অফিসার এসে আমার ব্রা খুলে একটানা আমার বুকে লাথি মারতে থাকে। তারপর থানার ইন্সপেক্টর এসে নির্যাতিতা প্যান্ট খুলে নেয় এবং তাকে পুরুষাঙ্গ দেখায়। এর পরও অশ্লীলতার শেষ নেই, অভিযোগকারিনীর বয়ান অনুযায়ী, “তার পর আইআইসি এল, সে আমার প্যান্ট নামিয়ে দিল এবং নিজেরটাও। গোপনাঙ্গ দেখিয়ে সে আমাকে জিজ্ঞাসা করল কতক্ষণ চুপ করে থাকতে চাস…”। সে আমার শ্লীলতাহানিও করেন।থানায় কয়েকজন পুলিশের প্রচণ্ড মারে গুরুতর আহত হন ওই নারী। তার চোয়াল সরে যায়। চিকিৎসা দিতে তাকে ভূবনেশ্বরের এআইআইএমএস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এতসব নির্যাতনের পরও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। তবে ওড়িশা হাইকোর্টের নির্দেশে বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) তাকে জামিনে মুক্তি দেয়া হয়। মুক্তি পাওয়ার পর এদিন তিনি ও তার হবু স্বামী ভরতপুর থানায় কয়েকজন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের করেন। ঘটনা চাউর হতেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ওড়িশার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং বিজেডি সভাপতি নবীন পট্টনায়ক। তাঁর কথায় “অত্যন্ত মর্মান্তিক ঘটনা!” শুক্রবার একটি আদালত-তত্ত্বাবধানে এসআইটি তদন্ত এবং ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের ডাক দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করেছেন পট্টনায়ক। এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, “ভরতপুর থানায় একজন সেনা মেজর মহিলার সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে তা মর্মান্তিক এবং অবিশ্বাস্য। পুলিশের এমন আচরণ দেশের বিবেক নিয়ে প্রশ্ন তুলছে!”