নিউজ ক্লিক সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক প্রবীর পুরকায়স্থর গ্রেফতারিকের বেআইনি বলে উল্লেখ করে মুক্তির নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। গত বছরের ৩ অক্টোবর চিনের হয়ে প্রোপাগান্ডা ছড়ানোর অভিযোগে ইউএপিএ ধারায় গ্রেফতার করা হয় প্রবীরকে, এরপর থেকে তিনি তিহাড় জেলে বন্দী ছিলেন। একই সংস্থার এইচআর অমিত চক্রবর্তীকেও বন্দি করে পুলিশ। গত বছর নিউজক্লিকের দফতর ও প্রায় ত্রিশজন সাংবাদিকের বাড়িতে তল্লাশি চালায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টর (ইডি)। এরপর রাতে গ্রেফতার করা হয় প্রবীর ও অমিতকে। প্রবীর দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি এবং রিমান্ডকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন। চিনা অর্থায়নের অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। দেশের সর্বোচ্চ আদালত বুধবার আইনের দৃষ্টিকোণ থেকে পুরকায়স্থের গ্রেফতার ও রিমান্ডকে অবৈধ ঘোষণা করে এবং তার মুক্তির নির্দেশ দেয়। বন্ডের ভিত্তিতে নিউজক্লিকের সম্পাদককে অবিলম্বে জামিন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এক্ষেত্রে ট্রায়াল কোর্ট জামিনের শর্ত ধার্য করবে। এ দিন আদালতে পুরকায়স্থের পক্ষে যুক্তি পেশ করেন আইনজীবী কপিল সিব্বল। বিচারপতি বি আর গাভাই ও বিচারপতি সন্দীপ মেহতার বেঞ্চ বলে, এখনও রিমান্ড কপি দেওয়া হয়নি। যা প্রবীরের গ্রেপ্তারিকে অযৌক্তিক করে তুলেছে। বিচারপতি মেহতা বলেন, ”এ বিষয়ে আদালতের মনে কোনও সংশয়ই নেই যে, গ্রেফতারির পিছনে কোনও ভিত্তি নেই। যার ফলে গ্রেফতারি ভিত্তিহীন হয়ে গিয়েছে। রিমান্ডারের নির্দেশ বাতিল। ট্রায়াল কোর্টের সন্তুষ্টির ভিত্তিতে আবেদনকারীকে মুক্তি দেওয়া যেতে পারে। আবেদনে সম্মতি দেওয়া হল।” দিল্লি পুলিশের এফআইআর অনুসারে, নিউজ পোর্টালটি ভারতের সার্বভৌমত্বকে ব্যাহত করতে এবং দেশের বিরুদ্ধে অসন্তোষ তৈরি করতে চিনের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ পেয়েছে বলে অভিযোগ। এর পাশাপাশি দিল্লি পুলিশ তার চার্জশিটে জানিয়েছে পুরকায়স্থ ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের সময় নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করেছে পিপলস অ্যালায়েন্স ফর ডেমোক্রেসি অ্যান্ড সেক্যুলারিজম (প্যাডস) নামে একটি গোষ্ঠীর সঙ্গেও ষড়যন্ত্র করে। প্রসঙ্গত, এই মাসের শুরুতেই আদালতে ৮০০ পাতার চার্জশিট জমা দিয়েছিল দিল্লি পুলিশ। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে একের পর এক গুরুতর অভিযোগ-সহ চার্জশিট পেশ করে পুলিশের তরফে জানানো হয়েছিল, প্রবীর পুরকায়স্থ সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের জন্য টাকা সংগ্রহ করতেন। জঙ্গি সংস্থা লস্কর-ই-তইবার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন তিনি। এই ক্রিয়াকলাপের জন্য নিউজক্লিকের মাধ্যমে ৯১ কোটি টাকা পাঠানো হয়েছিল বলেও দাবি ছিল পুলিশের।