দেশ

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বিপর্যস্ত উত্তর-পূর্ব ভারত, গত ৪ দিনে প্রবল বৃষ্টি ও ভূমিধসের জেরে মৃত ৪১

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বিপর্যস্ত উত্তর-পূর্ব ভারত। গত চার দিনে প্রবল বৃষ্টি, হড়পা বান ও ভূমিধসের জেরে অন্তত ৪১ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। ক্ষতিগ্রস্ত দু’লক্ষের বেশি মানুষ। অসমের বন্যা পরিস্থিতির এখনও উন্নতি হয়নি। উত্তর-পূর্বের সবচেয়ে বড় এই রাজ্যের ন’টি জেলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যায় এখনও পর্যন্ত ছ’জনের মৃত্যু হয়েছে। ব্রহ্মপুত্র, বরাক ও কোপিলি সহ অসমের বিভিন্ন নদীর জল বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। এরাজ্যের ৩৫ হাজার মানুষ ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন। এর মধ্যে হোজাইয়ে প্রায় ২০ হাজার মানুষ ত্রাণ শিবিরে রয়েছেন। উত্তর-পূর্ব ভারতে বিপর্যয় নিয়ে শুক্রবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। ‘এক্স’ হ্যান্ডলে তিনি লিখেছেন, ‘ঘূর্ণিঝড় রেমালের জন্য বাংলা, অসম, মণিপুর, মেঘালয়, মিজোরাম ও ত্রিপুরা বিপর্যয়ের শিকার হয়েছে। অসমের বরাক উপত্যকার কাছাড়, করিমগঞ্জ ও হাইলাকান্দি জেলার সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা কার্যত ভেঙে পড়েছে। এর জেরে বরাক উপত্যকার সঙ্গে রাজ্যের বাকি অংশ কার্যত বিচ্ছিন্ন। এর মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা কাছাড়ে। সেখানে ১ লক্ষেরও বেশি মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৩ হাজার ২০০ হেক্টরের বেশি জমি জলের তলায় চলে গিয়েছে। শিলচর শহরের রাস্তায় জল জমে যাওয়ায় গাড়ি চলাচলে সমস্যা হচ্ছে।  প্রবল বৃষ্টির জেরে ডিমা হাসাও জেলাতেও জনজীবন বিপর্যস্ত। এসবের মধ্যে চিন্তা বাড়িয়েছে আবহাওয়ার পূর্বাভাস। আগামী দু’দিন অসমের বিভিন্ন জেলায় বজ্রবিদ্যুত্ সহ ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে জানিয়েছে মৌসম ভবন। শুক্রবার সকালে শিলচরে কর্মস্থলের দিকে রওনা হয়েছিলেন আগরতলার শিবনগরের বাসিন্দা দীপেন দেব। অরুণাচল জংশন স্টেশনে নামার পর গোটা রাস্তা জলমগ্ন থাকায় তিনি গন্তব্যে পৌঁছতে পারেননি। প্রায় ৮ কিলোমিটার জল পেরিয়ে হেঁটে হোটেলে এসে ওঠেন। দীপেন জানিয়েছেন, শিলচরে হোটেলের দর প্রায় দ্বিগুণ। জলে রেললাইন ডুবে যাওয়ায় দক্ষিণ অসম, ত্রিপুরা, মণিপুর ও মিজোরামগামী প্রচুর ট্রেন বাতিল করেছে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল। বৃহস্পতিবার অসম, মেঘালয় ও মিজোরামকে সংযোগকারী ৬ নম্বর জাতীয় সড়কে নতুন করে ধস নামে। যার জেরে ওই রাস্তা দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। মণিপুরে তিনজনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। রাজধানী শহর ইম্ফলেও বন্যার জল ঢুকতে শুরু করায় শুক্রবার সারা রাজ্যে ছুটি ঘোষণা করা হয়। মিজোরামে গত মঙ্গলবারে ভূমিধসের জেরে এখনও পর্যন্ত ২৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী লালডুহোমা জানিয়েছেন, সব মিলিয়ে ১৬৭টি গ্রাম বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।