কলকাতাঃ শনিবারের দুপুরে আচমকাই তৃণমূলে যোগ দিলেন আসানসোলের বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে তিনি শাসক দলের পতাকা হাতে তুলে নেন। উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন। প্রসঙ্গত, শনিবার দুপুরে ক্যামাকস্ট্রিটে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের অফিসে গোপনেই হাজির হয়ে যান আসানসোলের বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়। এর ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই বঙ্গ রাজনীতি তোলপাড় করে দেওয়া দলবদল হয়ে গেল। শনিবার তৃণমূলের অফিসিয়াল টুইটার হ্য়ান্ডলে ছবি সহ জানিয়ে দেয় বাবুল সুপ্রিয়র যোগদানের খবর। পরে বাবুল সাংবাদিক সম্মেলনে জানায়, মেয়ের স্কুলে ভর্তি সংক্রান্ত কারণেই তাঁর সঙ্গে কথা হয়েছিল তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়ানের সঙ্গে। তখনই তাঁকে তৃণমূলে যোগদানের প্রস্তাব দেওয়া হয়। পরে কথা হয় অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের সঙ্গেও। বাবুল সুপ্রিয়-র দাবি, ‘বিগত চারদিনের মধ্য়েই এই সংক্রান্ত কথাবার্তা হয়েছে। কিন্তু আমার সামনে এতবড় সুযোগ চলে আসবে সেটা আমার আশার বাইরে ছিল, তাই সুযোগ আসায় আর দুবার ভাবিনি’। বাবুলের বক্তব্য, ‘আমি তৃণমূলে যোগ দিয়েছি মানেই সমস্ত নিয়ম মেনেই যোগ দেব। আসানসোলে আমি বিজেপির
টিকিটে জিতে এসেছি। তাই অবশ্যই সাংসদ পদ ছেড়ে আসব।’ বাবুল আরও বলেন, “বাংলার জন্য কাজ করতে চেয়েছিলাম। গত ৭ বছর ধরে পরিশ্রম করেছিলাম। সেই কাজের রাস্তা হঠাৎই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু কেন বন্ধ হয়েছিল জানি না।” রাজনীতি ছাড়ার সিদ্ধান্ত ভুল ছিল বলে মনে করেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তিনি বলেন, “সকলে বলেছিলেন আমার সিদ্ধান্ত ভুল ছিল। বাংলার মানুষের জন্য কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যা দায়িত্ব দেবেন, তাই করব।” এদিন সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন ভবানীপুরে কি তৃণমূলের হয়ে প্রচার করবেন? তার উত্তরে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানান, “আমার মনে হয় না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমার প্রচারের প্রয়োজন আছে। দিদির সঙ্গে কথা হয়েছে ফোনে। সোমবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করব।” তৃণমূল সূত্রের খবর, মঙ্গলবারই বাবুল সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেবেন। বাবুলের ইস্তফার পর আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থীর নামও একপ্রকার ঠিক করে ফেলেছে শাসকদল। বাবুলের ছেড়ে যাওয়া আসনে প্রার্থী হতে পারেন সায়নী ঘোষ। রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন, এবার অর্পিতা ঘোষের ছেড়ে যাওয়া আসনে রাজ্যসভার সাংসদ করা হতে পারে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে। বাবুল সুপ্রিয় গত সাত বছর ধরে সাংসদ।