কলকাতা

লাস্যময়ী শিলাস্তিকে হানি ট্র্যাপ বানিয়ে বাংলাদেশের সাংসদকে নিউটাউনের ফ্ল্যাটে ডেকে আনা হয়! পুলিশের নজরে রহস্যময়ী 

হানি ট্র্যাপ! মহিলাকে দিয়ে পাতা ফাঁদে পা দিয়েই কি নৃশংস ভাবে খুন হতে হল বাংলাদেশের সাংসদ আনোয়ার উল আজিমকে? তবে এমপি আনার হত্যাকাণ্ডে এক নারীর সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে তদন্তকারীরা। তারা বলছেন, ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বের সূত্র ধরে আনারকে হত্যার পরিকল্পনা করে আখতারুজ্জামান শাহীন। ওই ঘটনায় শিলাস্তি রহমান নামে এক তরুণীর সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন- শিলাস্তিকে হানি ট্র্যাপ হিসেবে ব্যবহার করা হতে পারে। এরইমধ্যে শিলাস্তিকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। সূত্র বলছে, শিলাস্তি রহমান এমপি আনার খুনের মূল পরিকল্পনাকারী আখাতারুজ্জামানের বান্ধবী। তার বিষয়ে বিস্তারিত জানতে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। তদন্তে নেমে এমন সম্ভাবনার কথা উড়িয়ে দিচ্ছে না সিআইডি এবং ঢাকা পুলিশের তদন্তকারী দল৷ তদন্তকারীদের নজরে রয়েছেন বাংলাদেশের বাসিন্দা সিলেস্টি রহমান নামে এক মহিলা৷ পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার দিন সম্ভবত সিলেস্টাই বাংলাদেশের ওই সাংসদকে নিউ টাউনের ওই ফ্ল্যাটে ডেকে নিয়ে গিয়েছিলেন৷ ইতিমধ্যেই সিলেস্টাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে ঢাকা পুলিশ৷ গত ১২ মে চিকিৎসার

জন্য কলকাতায় পৌঁছন বাংলাদেশের সাংসদ আনোয়ার উল আজিম৷ কলকাতায় এসে বরানগরে গোপাল বিশ্বাস নামে এক আত্মীয়ের বাড়িতে উঠেছিলেন তিনি৷ সেখান থেকেই গত ১৩ মে চিকিৎসককে দেখাতে নিউ টাউনে যান তিনি৷ এর পর থেকেই নিখোঁজ হয়ে যান তিনি৷ গত ১৮ মে আনোয়ার উল আজিমের খোঁজ মিলছে না বলে পুলিশে অভিযোগ জানান গোপাল বিশ্বাস৷ তদন্তে নেমে নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের কথা জানতে পারে পুলিশ৷ জানা যায়, ঘটনার দিন নিউ টাউনের অভিজাত আবাসনের একটি ফ্ল্যাটে প্রথমে ক্লোরোফর্ম দিয়ে সংজ্ঞাহীন করে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়৷ মৃত্যু নিশ্চিত করতে প্রথমে ভারী বস্তু দিয়ে সাংসদের মাথায় আঘাত করে আততায়ীরা৷ তার পর রান্নাঘরে নিয়ে গিয়ে শুরু হয় দেহ লোপাটের প্রস্তুতি৷ তদন্তকারীদের দাবি, এই ঘটনার প্রায় আড়াই মাস আগে অবৈধ ভাবে খুলনার বাসিন্দা পেশায় কসাই জিহাদকে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়৷ চিনার পার্কের কাছে একটি ফ্ল্যাটে রাখা হয় তাকে৷ আনোয়ার উল আজিমকে খুনের পর তাঁর দেহ টুকরো টুকরো করে কাটা হয়৷ এর পর চামড়া

ছাড়িয়ে মাংস, হাড় টুকরো টুকরো করে ব্যাগে ভরা হয়৷ এর পর ট্রলি ব্যাগে ভরে সাংসদের দেহাংশ ভাঙড় এলাকার পোলেরহাটে খালের জলে ফেলে আসা হয়৷ এ দিন জিহাদ হাওলাদার নামে ওই কসাইকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি৷ ফ্ল্যাটি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আবগারি দফতরের কর্মকর্তা সন্দ্বীপ কুমার রায়ের। তবে তার কাছ থেকে ফ্ল্যাটটি ভাড়া নিয়েছিলেন বাংলাদেশি আমেরিকান আখতারুজ্জামান শাহিন। তিনিই ওই ফ্ল্যাটে আনারের থাকার ব্যবস্থা করেছিলেন কি না- তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বাংলাদেশ পুলিশের তথ্য বলছে- আখতারুজ্জামান শাহিনের বাড়িও ঝিনাইদহে। আনার হত্যার সময় তিনি ভারতে অবস্থান করছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, যে ফ্ল্যাটে আনার খুন হন; সেখানে আখতারুজ্জামানও ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের পাসপোর্টধারী এই ব্যক্তি আনার খুনের পর নেপাল, দুবাই হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলে গেছেন। সূত্রমতে- গত ২০ মে ভিসতারা এয়ারে দিল্লি থেকে আখতারুজ্জামান নেপালের কাঠমান্ডু চলে যান। পরের দিন ফ্লাই দুবাইয়ে করে তিনি দুবাই চলে যান। তার পরবর্তী গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র বলে জানা গেছে।