মানবতা বিরোধী অপরাধে দোষী প্রমাণিত হওয়ায় মৃত্যুদণ্ড হল শেখ হাসিনার ৷ বাংলাদেশের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকেও ফাঁসির সাজা দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ দমন ট্রাইবুনাল ৷ রাজসাক্ষী হওয়ায় পুলিশের প্রাক্তন আইজি চৌধুরী আবদুল্লা আল মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে এই ট্রাইবুনাল ৷ ঢাকার আশুলিয়ায় ছ’জনকে পুড়িয়ে হত্যা এবং চানখাঁরপুল এলাকায় ছ’জনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় হাসিনাদের ফাঁসির সাজা দিয়েছে আদালত ৷ এই দুটি গণহত্যা-সহ তিনজনের বিরুদ্ধে মোট পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে। তার মধ্যে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের হত্যা করার নির্দেশ, রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাইদকে গুলি করে হত্যার মতো অভিযোগও রয়েছে ৷ হাসিনার বিরুদ্ধে যখন মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা হচ্ছে তখন ভারত ও বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কও এক নতুন মাত্রা পেয়েছে ৷ এমনিতেই হাসিনার ভারতে থাকা নিয়ে আপত্তি আছে বাংলাদেশের ৷ এরই মধ্যে বুধবার কলম্বোয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে হাজির থাকতে বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমানকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ৷
এদিন রায় দেয়, বিচারক মহম্মদ গোলাম মর্তুজা মজুমদার, বিচারক মহম্মদ সফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মহম্মদ মোহিতুল হক এনাম চৌধুরীর প্যানেল ৷ 453 পাতার রায়ে হাসিনাদের বিরুদ্ধে কী কী অভিযোগ উঠেছে তা বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে ৷ পাশাপাশি কোন কোন আইনে তিনজনকে সাজা দেওয়া হল সেটাও উল্লেখ করা হয়েছে ৷ বিচারকরা বলেন, গণ আন্দোলনের সময় আদালত অবমাননা করে সোশাল মিডিয়ায় ঘৃণ্য বক্তব্য পেশ করেছেন হাসিনা ৷ তাছাড়া ফোনে তাঁর দলের সাকিব নামে এক কর্মীকে 230 জনকে হত্যা করার নির্দেশও দেন তিনি ৷
জুলাই মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলন শুরু হয় ৷ কিন্তু হাসিনা সেই আন্দোলনকে গুরুত্ব দেননি ৷ বরং আন্দোলনকারীদের রাজাকারদের সঙ্গে তুলনা করেছেন ৷ পাশাপাশি হাসিনা ঢাকা বিশ্ববিদ্য়লয়ের উপাচার্যকে হুমকি দিয়েছেন বলেও জানান বিচারক ৷ ফোনে তাঁকে বলতে শোনা যায়, “রাজাকারদের ফাঁসি দিয়েছি ৷ তোদেরও ছাড়ব না ৷ রাজাকারদের কী অবস্থা হয়েছে দেখেছিস ৷ সবার ফাঁসি দেব ৷” বিচারকরা জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে হাসিনার ফোনের কথোপকথনের পরীক্ষা হয়েছে ৷ তাতে দেখা গিয়েছে এই ফোনালাপ এআই প্রযুক্তি কাজে লগিয়ে ব্যবহার করা হয়নি ৷ এর পাশাপাশি আদালতে এই সংক্রান্ত যে তথ্য প্রমাণ জমা পড়েছে তার থেকে বোঝা যাচ্ছে এই কথোপকথন বিকৃত করা হয়নি ৷ ফোনে যাঁর কণ্ঠস্বর শোনা যাচ্ছে তিনি শেখ হাসিনা ৷


