কলকাতা

সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জন্মদিনে  শ্রদ্ধা জানাল রাজ্য সরকার

আজ ‘বন্দে মাতরম’-এর রচয়িতা ১৮৩ তম জন্মদিবস। বাংলা সাহিত্যের জগতে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের অবদান অনস্বীকার্য। প্রতিবারের ন্যায় এবারেও ঋষি বঙ্কিমচন্দ্রের ১৮৩ তম জন্মদিবস পালন করল নবান্ন। বঙ্কিমচন্দ্রের ফটোতে মাল্যদান করে শ্রদ্ধা নিবেদন মন্ত্রী অরূপ রায়।

সাহিত্যের সঙ্গে বাঙালির মোটামুটি একটা সংযোগ ছিল। সেই সংযোগ নিবিড় না হলেও, পত্র-পত্রিকা, শারদীয়া সংখ্যার বিক্রি ছিল ভালই। আর তার ভিত গড়ে দিয়েছিলেন যাঁরা, তাঁদের মধ্যে অন্যতম বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। বাঙালিকে শিক্ষিত করার দায়িত্ব ঢের আগেই নিজের হাতে তুলে নিয়েছিলেন তিনি, ’বঙ্গদর্শন’ পত্রিকার মাধ্যমে। বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক ঔপ্যনাসিক তিনি। ‘দুর্গেশনন্দিনী’, ‘বিষবৃক্ষ’, ‘কৃষ্ণকান্তের উইল’, ‘কপালকুণ্ডলা’, ‘দেবী চৌধুরাণী’, ‘আনন্দমঠ’-সহ ১৪টি উপন্যাস রচনা করেন বঙ্কিম। এর বাইরে লিখেছেন গদ্য, গীতার ব্যাখ্যাও বেরিয়েছে তাঁর কলম থেকে। সাহিত্য সমালোচকের ভূমিকাও পালন করেছেন।  বাংলার শিক্ষাপ্রেমী মানুষের কাছে তাই ‘সাহিত্যসম্রাট’ তিনি। সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিম চট্টোপাধ্যায়ের যে দু’টি সৃষ্টির কথা প্রথমেই উঠে আসে, তা হল ‘আনন্দমঠ’ এবং ‘রাজসিংহ’। প্রথমটির কাহিনী বোনা হয়েছিল ছিয়াত্তরের মন্বন্তর এবং সন্ন্যাসী বিদ্রোহেকে প্রেক্ষাপট করে। দ্বিতীয়টিকে বঙ্কিম নিজে ঐতিহাসিক উপন্যাস বলে দাবি করেছিলেন, যার বিষয় ছিল মোগল বাদশাহ ঔরঙ্গজেব বনাম রাজপুত গৌরবের গাথা। কিন্তু এই দু’টি উপন্যাসকে ঘিরে বিতর্ক রয়েছে বিস্তর।স্বাধীনতা সংগ্রামে ‘আনন্দমঠ’ উপন্যাসটির গুরুত্বের কথা বার বার উঠলেও, সাম্প্রদায়িক রাজনীতির নেপথ্যে এই উপন্যাসটিই একপ্রকারে দেশলাইয়ের কাজ করেছিল বলে মনে করেন সমালোচকদের একাংশ। উপন্যাসে যেভাবে মুসলিমদের বার বার ‘নেড়ে’, ‘যবন’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে, মুসলিমদের বাদ দিয়ে হিন্দুরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কথা কোনও রকম রাখঢাক না করেই বলা হয়েছে, তাতে ব্যক্তি বঙ্কিমের সমাজ ও রাজনৈতিক ভাবনাই পরিস্ফূটিত হয়েছে বলে মত অনেকের।