জেলা

‘গুলি করে মারার অধিকার কারও নেই’, কোচবিহারের মঞ্চ থেকেই বিএসএফ-কে নিশানা মুখ্যমন্ত্রীর

সোমবার থেকেই মুখ্যমন্ত্রী দলের হয়ে নির্বাচনী প্রচারে নামলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন তাঁর সভা হল উত্তরবঙ্গের কোচবিহার জেলায়। সেই জেলায় যেখানে একুশের বিধানসভা নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী গুলি করে শীতলকুচিতে দুটি পৃথক ঘটনায় নিরীহ ৫জনকে গুলি করে মারে। সেই কোচবিহার যেখানে প্রতি সপ্তাহে শোনা যায় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বা বিএসএফ গুলি করে মেরেছে কোন না কোনও মানুষকে। সেই জেলার মাটিতে দাঁড়িয়ে এদিন মমতা প্রথমেই নিশানা বানিয়েছেন সেই বিএসএফ-কে। তাঁর সভায় এদিন উপস্থিত হয় ২টি পরিবার যাদের সদস্যদের গুলি করে মেরেছে বিএসএফ। এদিন মুখ্যমন্ত্রী সাফ জানান, দল এই দুই পরিবারের পাশে থাকবে। রাজ্য সরকারও তাঁদের দেখবে। তবে এখন নির্বাচনী আদর্শ আচরণবিধি বলবৎ থাকায় তিনি কিছু ঘোষণা করতে পারছেন না। মমতা এও বলেন, ‘গুলি করে মারাটা যেন অধিকার হয়ে গিয়েছে। গুলি করে মারার অধিকার কারও নেই। পুলিশকে বলেছি, কেউ গুলি চালালেই অ্যাকশন।’ 

এদিন কোচবিহারের চান্দামারিতে মুখ্যমন্ত্রী তীব্র আক্রমণ শানেন বিএসএফ-কে। সীমান্তরক্ষীর গুলিতে নিহতদের পরিবারের পাশে এদিন দাঁড়ান মমতা। তার পরেই আক্রমণ শানান সেই বাহিনীকে লক্ষ্য করে। তিনি বলেন, ‘প্রত্যেকটা ভোটের সময়ে সীমান্তের বাসিন্দাদের ভয় দেখায় বিএসএফ। গুলি করে মারে মানুষদেরকে। কিন্তু আমি বলে যাচ্ছি বিএসএফ ভয় দেখালে, ভয় পাবেন না। রুখে দাঁড়ান। পুলিশকে খবর দিন। কোচবিহারে গুলি করে মারা যেন অধিকারের মধ্যে পড়ে গিয়েছে। বিএসএফ-এর গুলিতে নিহত স্বজনহারাদের পরিবারের পাশে থাকবে তৃণমূল। আমার কাছে খবর আছে বর্ডারে গিয়ে সাধারণ মানুষকে ভয় দেখাবে বিএসএফ। ভয় পাবেন না। ওরা বুথে বুথে জ্যাম করবে। সবাই মিলে রুখে দাঁড়ান। যেখানেই গুণ্ডামি করবে সেখানেই আমার মা-বোনেরা হাতা খুন্তি নিয়ে রুখে দাঁড়ান। বিএসএফ ভয় দেখালে আমাদের এসে জানান। পুলিশকে জানান। পুলিশকে বলেছি গুলি চললে গ্রেফতার করবে। এফআইআর করবে।’ বিএসএফকে নিশানা করে মমতা এদিন আরও বলেন, ‘গায়ের জোরে বিএসএফের এলাকা ১৫ কিলোমিটার থেকে বাড়িয়ে ৫০ কিলোমিটার করে দেওয়া হয়েছে। এই জেলাতেও বিএসএফ সম্প্রতি গুলিকে করে মেরেছে। আমি কোচবিহারের বারবরা আসি। কোচবিহারের মানুষকে ভালোবাসি। কোচবিহারে গুলি করে মারাটা যেন একটা অধিকারের মধ্যে পড়ে গিয়েছে। এরা করবে দেশ শাসন। আমি স্থানীয় প্রশাসনকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে বলব। আমার কাছে খবর আছে, নির্বাচনের আগে বর্ডারে বর্ডারে মানুষকে ভয় দেখাবে। ইডি-সিবিআইয়ের কথা বলে তুলে নেওয়ার কথা বলবে। তবে আমি বলছি আপনাদের, কিছু করতে পারবে না ওরা। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা রাজ্যের বিষয়, এটা কেন্দ্রীয় সরকারের আওতায় পড়ে না। ভয় দেখালে অভিযোগ করবেন, ঘরে বসে থাকলে হবে না। যে শহিদ পরিবার আজ কাঁদছে, তাঁর বদলা নেওয়ার জন্য তৃণমূলকে তিনটে ভোট দিতে হবে। আপনার পরিবার যাতে খালি না হয়ে যায়, সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে। মানুষ বিপদে পড়লে আমরা সবসময় পাশে থাকার চেষ্টা করি। মানুষ জানে, আমি তাঁদের অভিভাবক। তাঁদের ছেলেমেয়েরা বিপদে পড়লে রক্ষার দায়িত্ব আমাদের।’