অরাজনৈতিক কর্মসূচির আড়ালে মঙ্গলবারের নবান্ন অভিযান পর্বে বড়সড় হাঙ্গামা, রক্তপাত, এমনকী লাশ ফেলার চক্রান্ত করা হয়েছিল বলে জানাল রাজ্য পুলিস। এহেন চক্রান্তকারী চারজনকে এদিন সকালে হাওড়া স্টেশন থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার। অভিযানের আড়ালে বিভিন্ন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে অরাজকতা সৃষ্টির পরিকল্পনা, উস্কানি দিয়ে হাঙ্গামা বাধানোর ষড়যন্ত্রের অভিযোগে ওই চারজন সমেত মোট ২৫ জনকে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে এডিজি জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘ওই চারজন লাশ ফেলে দেওয়ার কথা বলছিল। তার অকাট্য প্রমাণ রয়েছে। এই আন্দোলনের নেপথ্যে যে চক্রান্ত করা হয়েছিল, সে সম্পর্কে আমাদের কাছে সুনির্দিষ্ট তথ্য রয়েছে। আগেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে অভিযুক্তদের।’ তিনি আরও বলেন, ‘যে ধরনের ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল, তাতে ওই ২৫ জনকে গ্রেপ্তার করা না গেলে, নবান্ন অভিযান পর্বে আরও বড় হাঙ্গামা হতো, রক্ত ঝরত।’ রাজ্য পুলিসের এই শীর্ষকর্তা ধৃতদের নাম-পরিচয় না জানালেও বিজেপির বঙ্গ নেতাদের দাবি, ধৃতরা হল পুলকেশ পণ্ডিত, শুভজিৎ ঘোষ, গৌতম সেনাপতি ও প্রীতম সরকার। এরা প্রত্যেকেই ছাত্র এবং নবান্ন অভিযানে যোগ দিতে আসছিলেন। অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাঁদের। বিজেপির এই দাবি অবশ্য নস্যাৎ হয়েছে বিভিন্ন সমাজমাধ্যমে দেওয়া ওই চারজনের প্রোফাইলে। এই চারজনই যে গেরুয়া শিবিরের সঙ্গে সম্পৃক্ত, তার প্রমাণও রয়েছে সেখানে। পশ্চিমবঙ্গ ছাত্রসমাজের তথাকথিত অরাজনৈতিক আন্দোলনকে শান্তিপূর্ণ বলে বারবার পদ্ম-পার্টির পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছিল এবং এদিনও হয়েছে। সেই আন্দোলন পর্বে এদিন মারমুখী অংশগ্রহণকারীদের ধাওয়া করে পুলিস। উত্তর কলকাতার এম জি রোডের চিৎপুর এলাকা থেকে পেট্রল বোমা উদ্ধার করে তারা। অরাজনৈতিক আন্দোলনে পেট্রল বোমা নিয়ে কোন শান্তির বার্তা প্রচার করতে আসা হয়েছিল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে।
এদিকে, আজ বুধবার দুপুরে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ তাদের প্রতিষ্ঠা দিবসের বার্ষিক সমাবেশ করবে মধ্য কলকাতার মেয়ো রোডে। লোকসভা ভোটে সাফল্যের নিরিখে এই জমায়েতকে মহতী আকার দিতে বদ্ধপরিকর জোড়াফুল শিবিরের ছাত্ররা। ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রী কলকাতায় চলে এসেছেন। পূর্বঘোষিত এই কর্মসূচির দিনই বিজেপি ১২ ঘণ্টার বাংলা বন্ধ ডাকায় চিন্তা বেড়েছে পুলিসের। এর মধ্যে এদিনই আর জি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে এবং অভয়ার ধর্ষক-খুনির শাস্তির দাবিতে চিকিৎসক এবং পড়ুয়া চিকিৎসকদের একটি বড়সড় মিছিলের আয়োজন করা হয়েছে। বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ শ্যামবাজার পাঁচমাথার মোড় থেকে বের হয়ে মিছিলটি ধর্মতলায় গিয়ে শেষ হবে। মঙ্গলবারের মতো আজ, বুধবারও রয়েছে ইউজিসি নেটের পরীক্ষা। পরীক্ষার্থীদের যাতে কোনও সমস্যার মধ্যে পড়তে না হয়, তা সুনিশ্চিত করতে সবরকম ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়েছেন।