কলকাতা রাজনীতি

অবশেষে সাত পাকে বাঁধা পড়লেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ

অবশেষে চার হাত এক হল। শুক্র সন্ধ্যায় রিঙ্কু মজুমদারের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধলেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। বিয়ে সেরেই স্ত্রীকে পাশে নিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলেন দিলীপ ঘোষ। দিলীপ ঘোষ বললেন, “সকলের শুভেচ্ছা কাম্য।” ২০২১ সালে প্রাতঃভ্রমণের সময় পরিচয় দু’জনের। রিঙ্কু বিজেপি মহিলা মোর্চার নেত্রী হওয়ায় আলাপচারিতা প্রায়ই হত । সেই কথোপকথন ভালোবাসায় পরিণত হয় । গত সেপ্টেম্বরে দিলীপকে বিয়ের

প্রস্তাব দেন রিঙ্কু । এরপর ৩ মাস সময় চান বিজেপির এই দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা। শুক্রবার শুভ পরিণয়। এদিন সন্ধ্যায় নিউটাউনে নিজের বাড়িতে সাত পাকে বাঁধা পড়লেন দিলীপ ঘোষ ও রিঙ্কু। বিয়ে সেরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন দু’জনে। দিলীপের কথায়, “রাজনৈতিক জীবন, মায়ের দায়িত্ব সবকিছু জেনেই রিঙ্কু আমাকে বিয়ে করেছেন। আগামী দিনের জন্য আপনাদের শুভেচ্ছা ও আশীর্বাদ চাই। মুখ্যমন্ত্রী শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

ওঁনাকে আমি কৃতজ্ঞতা জানাই।” দীর্ঘদিন ধরে দলের হয়ে দেশের একাধিক জায়গায় ঘুরে বেড়িয়েছেন। বিয়ের পর স্ত্রীকে নিয়ে ঘুরতে যাবেন তো? সাংবাদিকদের এই প্রশ্ন শুনে দিলীপ ঘোষ বলেন, “আমি ৪০-৪২ বছর ধরে এদিকে সেদিকে ঘুরে বেড়াচ্ছি। ঘুরে বেড়াতে আমার ভালো লাগে। এবারও যাবো।” তবে, বিদেশে নয়। প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ তাঁর মদুচন্দ্রিমা সারবেন দেশেই। তাঁর কথায়, “দেশে বহু দর্শনীয় ও মনোরম স্থান রয়েছে ঘোরার।” স্ত্রী

রিঙ্কুকে নিয়ে তারই কোনও একটায় জায়গায় ঘুরতে যাবেন তিনি। তবে, রাজনীতি থেকে অবসরের আপাতত কোনও প্রশ্নই আসছে না, তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে ষাটোর্ধ্ব বিজেপি নেতার বক্তব্যে। তিনি জানান, দলের শীর্ষ নেতৃত্ব তাঁকে যে দায়িত্ব দেবে, পূর্বের মতো আগামীতেও সেই দায়িত্ব পালন করবেন। পাশাপাশি আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের মতোই জীবনযাপন করবেন। এদিন, প্রথমে আইনি মতে বিয়ে সারার পর বৈদিক মতে মন্ত্র পড়ে বিয়ে

সারেন দিলীপ ও রিঙ্কু । হিন্দু শাস্ত্র মতে, ছেলের বিয়ে দেখতে পারেন না মা। শোলার মুকুট, কপালে ছোট টিপ, মাথায় লাল ওড়না পরা রিঙ্কু সেজেছিলেন বধূবেশে। তবে, এদিন একেবারে সামনে উপস্থিত থেকে ছেলের বিয়ের সমস্ত আচার-অনুষ্ঠান তদারকি করেছেন দিলীপ ঘোষের মা পুষ্পলতা দেবী। ছেলের বিয়েতে দারুণ খুশি দিলীপ ঘোষের মা। এ দিন উপহার স্বরূপ দিলীপ-রিঙ্কুর নতুন জীবনের শুভেচ্ছা জানিয়ে তুলে দেওয়া হয়েছে ধুতি, শাড়ি,

অলংকার। একেবারে নিকট আত্মীয়দের নিয়ে বিয়ে সারেন। অন্যদিকে, স্ত্রী রিঙ্কুর তরফে ছিলেন পুত্র ও তাঁর বন্ধুবান্ধব, দুই মামা ও আর কয়েকজন আত্মীয়। নিয়ম মেনে পান পাতায় মুখ ঢেকে বিয়ের মণ্ডপে উপস্থিত হন রিঙ্কু। এরপর সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে হয় মালাবদল। এদিনের বিয়ের মেনু সাদা ভাত, ডাল, একটি সবজি, দই দিয়ে কাতলা মাছ, মিষ্টি ও আইসক্রিম। বিয়ের পরেই বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘রাজনীতিতেই থাকব, দল যে

দায়িত্ব দেবে পালন করব।’ অন্যদিকে আদ্যোপান্ত রাজনীতিক দিলীপকে রাজ্য রাজনীতির ময়দানে পুরোনো মেজাজে ফিরে পেতে চান নববধূ রিঙ্কু। তিনি বলেন, ‘দিলীপ ঘোষকে আগের ফর্মে দেখতে চাই।’  বৈশাখের সন্ধ্যায় রীতি-আচার মেনেই হয় দিলীপ-রিঙ্কুর বিবাহের অনুষ্ঠান। দম্পতিকে আশীর্বাদ দেন অতিথিরা। জানা গিয়েছে, বঙ্গের বিভিন্ন রাজনৈতিক সতীর্থরা অভিনন্দন জানিয়েছেন দিলীপকে। সুকান্ত দিলীপ ঘোষ ও তাঁর হবু

স্ত্রীকে উপহার দিয়েছেন পাঞ্জাবি এবং শাড়ি। শমীক ভট্টাচার্যও দিলীপকে দিয়েছেন পাঞ্জাবি। জানা গিয়েছে, অতিথিদেরও ‘রিটার্ন গিফ্ট’ দিয়েছেন দিলীপও। শনিবার রয়েছে দিলীপ ঘোষের জন্মদিন। অভ্যাসমতো আগামিকাল ইকো পার্কে প্রাতঃভ্রমণে যাবেন দিলীপ ঘোষ। সেখানে তাঁর বন্ধুদের ব্রেকফাস্ট করাবেন। সেখানে তাঁর জন্মদিন পালন করবেন বিজেপি কর্মীরা। বিকেলে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে খড়গপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ।