কলকাতা

শিয়রে পঞ্চায়েত ভোট, রাজ্যর বিপুল বকেয়ার মধ্যে ৮ হাজার ৮৯৮ কোটি দিল মোদি সরকার

পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘোষণা হয়ে গিয়েছে রাজ্যে ৷ তার পরেই কেন্দ্রের তরফে রাজ্য সরকারের খাতে একটি মোটা অংকের বরাদ্দ জমা করা হল ৷ যার অংক ৮ হাজার ৮৯৮ কোটি টাকা ৷ সোমবার রাজ্য অর্থ দফতরের খাতে সেই টাকা জমা পড়েছে ৷ তবে রাজ্য সরকারের দাবি অনুযায়ী বকেয়া বিপুল পরিমাণ বকেয়া টাকার অংশ এটি নয় ৷ এই টাকা বিভিন্ন জনকল্যাণ খাতে খরচের জন্য কর বাবদ তৃতীয় কিস্তির টাকা রাজ্য সরকারকে পাঠানো হয়েছে ৷ তবে শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয় ৷ দেশের বাকি রাজ্য এবং কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলেও পৌঁছেছে কর বাবদ তৃতীয় কিস্তির টাকা ৷এই বরাদ্দে মোট ১ লক্ষ ১৮ হাজার ২৮০ কোটি টাকা সব রাজ্যগুলিকে পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার ৷ এক্ষেত্রে লক্ষ্মীলাভের নিরিখে সবার উপরে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ ২১ হাজার ২১৮ কোটি টাকা ৷ তার পরে বিহার ১১ হাজার ৮৯৭ কোটি টাকা মধ্যপ্রদেশ ৯ হাজার ২৫৮ কোটি টাকা পেয়েছে ৷ আর বাংলা ৮ হাজার ৮৯৮ কোটি টাকা পেয়ে চার নম্বরে রয়েছে প্রাপ্তির তালিকায় ৷ তবে এই প্রাপ্য টাকা দেওয়ার সময় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে শাসক শিবিরের একাংশ ৷ তৃণমূল সূত্রের খবর পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার পর এই অর্থ রাজ্য সরকারের খাতে ঢুকেছে ৷ যার রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে মাঠে নামতে পারে প্রধান বিরোধী দল বিজেপি ৷উল্লেখ্য তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অংসখ্যবার কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ করেছেন ৷ রাজ্যের বকেয়া প্রায় ৯৫ হাজার কোটি টাকা না মেটানোর অভিযোগ তো বহু বছর ধরে রয়েছে রাজ্য সরকারের ৷ গত ডিসেম্বর মাস থেকে সেই তালিকায় একে একে ১০০ দিনের টাকা বন্ধ করে দেওয়া প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা এবং মিডডে মিলের মতো পরিষেবার টাকা আটকে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে তৃণমূলের সরকার ৷ যা বাস্তবেও সত্যি ৷আরও পড়ুন টাকা দিচ্ছে না কেন্দ্র তাই বাজি কারখানায় বিপজ্জনক কাজ করছে মানুষ এগরাকাণ্ডে সাফাই তৃণমূলেরকিন্তু এক্ষেত্রে কেন্দ্রেরও একাধিক অভিযোগ রয়েছে ৷ এই সব প্রকল্পে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছে কেন্দ্র ৷ বিভিন্ন খাতে যে বরাদ্দ পাঠানো হয়েছিল তাঁর হিসেবে বিস্তর গড়মিলের অভিযোগ উঠেছে ৷ এমনকি টাকা সঠিক খাতে খরচ না করে পঞ্চায়েত পৌরসভা এবং মাঝের বিভিন্ন জায়গায় শাসকদলের নেতাদের ব্যক্তিগত খাতে ঢুকেছে বলে অভিযোগ করেছে বিজেপি ৷ সেই অভিযোগের ভিত্তি কেন্দ্রের বিভিন্ন মন্ত্রকের তরফে প্রতিনিধি দলকে পাঠানো হয়েছিল পর্যবেক্ষণের জন্য ৷ সেই প্রতিনিধি দলের রিপোর্ট জমা পড়ার পরেই অধিকাংশ ক্ষেত্রে বরাদ্দ আটকে দেয় কেন্দ্রীয় সরকার ৷ কিন্তু রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘোষণা হয়ে যাওয়ার পর কর বাবদ তৃতীয় কিস্তির টাকা সরকারের হাতে আসাতে অন্য আশঙ্কা করছে শাসকশিবির ৷ তারা মনে করছে এটিকে হাতিয়ার করে পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রচারে ফায়দা তুলবে বিরোধী বিজেপি ৷ ভোটের প্রচারে কেন্দ্রের পাঠানো টাকার প্রসঙ্গ তুলবেন শুভেন্দু অধিকারীরা ৷ যা পঞ্চায়েতের নির্ঘণ্ট ঘোষণা মনোনয়নের সময়সীমা ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত ইস্যুতে বিতর্কের মাঝে বাড়তি চাপ তৈরি করল তৃণমূলের উপর ৷ বাস্তবে এর প্রভাব নির্বাচনে কতটা পড়বে বা বিজেপি কতটা এর ফায়দা নিতে পারবে তা অবশ্য সময়ই বলবে ৷”