কলকাতা

কয়লা কার অধীনে? গরু আসে ইউপি, এমপি থেকে, তখন টাকা খায় না, তখন কি খাও লজেন্স? আর ৩ মাস আয়ু কেন্দ্রের, তুলোধনা তৃণমূল সুপ্রিমোর

ইন্ডোরের বৈঠকেই ২৪-শের ব্লুপ্রিন্ট মমতার। রাজ্যের সীমানায় গরু-কয়লা পাচারের টাকা কে খায়? কেন দায় নেবে না কেন্দ্র? দেশে কেন বাড়ছে বেকারত্ব। ব্যাঙ্কের কী হাল। প্রশ্নের পর প্রশ্ন তুলে তোপ মমতার। এদিন মমতা বলেন,  ‘বিএসএফ যারা পাহাড়া দেয় সীমান্ত। কয়লা কাদের নিয়ন্ত্রণে? সি আই এস এফ থাকে ওখানে। গরু আসে ইউপি, এমপি, রাজস্থান থেকে। তখন টাকা খায় না। তখন কি খাও লজেন্স? তাঁর কথায় কয়লা-গরু পাচারের টাকা সব যায় বিজেপির ঘরে। আর বাম আমলে নরকঙ্কালের মালা পরে বসেছিল সিপিএম। তাদের মুখে তৃণমূলের সমালোচনা মানায় না। তিনি কর্মীদের বলেন, যা বলছি শুনে রাখুন। এলাকায় গিয়ে গিয়ে প্রচার করবেন। বারবার এক কথা বলতে হবে। আজ আমাদের অনেকে জেলে। তাই নিয়ে খুব হাসছেন। পার্থ, মাণিক, বালু জেলে। যখন আপনারা থাকবেন না। তখন কোথায় থাকবেন? সেলে না কোলে?’ কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দেগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কয়লা ধুলেও যাবে না ময়লা। এগুলো কার অধীনে? কেন্দ্র। এগুলো বারবার বলুন। মিথ্যা বারবার বলে সত্যি করা হয়। আমরা সবাই চোর? দুর্নীতি দেখাচ্ছে। আর সেখানে শিখিয়ে টাকা দিয়ে বলা হচ্ছে, বলো তৃণমূল চোর। না বললেই রেড করবে।” দলনেত্রী নির্দেশ দেন এইসব সত্য যেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা সবার সমানে প্রকাশ করেন। কতগুলি টিভি চ্যানলে সন্ধে হলেই বলবে তৃণমূল চোর, টাকা দিয়ে কোল বসাবে যাদের কাজ এই সব বলা- তোপ দাগেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপির এজেন্সিরাজ আর রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের জন্যই তৃণমূলের কয়েকজন নেতা-মন্ত্রী জেলে। এরপরেই তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, “আমাদের কয়কজন নেতা জেলে। আপনারা যখন ক্ষমতায় থাকবেন না, তখন কোথায় থাকবেন সেলে!” তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, ‘১০০ দিনের কাজের টাকা দিচ্ছে না। আমাদের থেকে টাকা তুলে নিয়ে যায়। আর টাকা আমাদের। আর বলছে বাবুর ছবি লাগাতে হবে। বাবুদের নামে স্টেডিয়াম ও মূর্তি হবে। বাথরুম করতে গেলে সেখানেও ছবি দিতে হবে। মেট্রো স্টেশনের রং গেরুয়া করে দিচ্ছে। আমাদের চিঠি দিচ্ছে। বলছে সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র গেরুয়া করে দিতে হবে। আমি বলেছি ভাগ, টাকা দিতে হবে না। আর তো তিন মাস আয়ু। ১, ২,৩ এবার বিদায় দিন।’ কোরাপশান এত বেড়ে গেছে কেন্দ্রীয় সরকারের। ৭০ হাজার লোক দেশ ছেড়ে চলে গিয়েছে। যখন আপনাদের ওখানে  ভায়োলেন্স হয় তখন কিছু না। আর বাংলায় কিছু হলে প্রি বা পোস্ট পোল ভায়োলেন্স। একটা বিল পাশ করতে দেয় না। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মানে না। আমি নিজে গিয়ে কথা বলেছিলাম। তারপরেও সব আটকে। রাজ্য সরকারের টাকায় খাবেন, পুরষ্কার দেবেন আর কালারফুল লাইফ কাটাবেন। আর বিল পাশ করতে দেবে না। যেন সব হিটলার একটা, এদিন মঞ্চ থেকেই তোপ দাগেন মমতা।  ভোটের ব্লুপ্রিন্ট বৈঠকেও মমতার মুখে কেষ্ট, বালু, পার্থ, মানিক। সবাই জেলে। খুব খুশি। মোদি সরকারের আয়ু বড়জোড় ৩ মাস। কুর্সি গেলে কোন সেলে? ছন্দ মিলিয়েই একযোগে তোপ বাম বিজেপিকে। মমতার নিশানায় বামেরাও। রাজনৈতিকভাবে কান মুলে দেওয়া উচিত। জয়নগরে বারবার খুনের রাজনীতি। নরকঙ্কাল নিয়ে বসে থাকে সিপিএম। শূন্যে আছে শূন্যেই থাকবে। চাচাঁছোলা তোপ মুখ্যমন্ত্রীর। এমনকী বিশ্বকাপের হারেও কেন্দ্রকে দোষারোপ। কলকাতায় ফাইনাল হলে জিতত দল। নেহাত খেলোয়ারদের আপত্তি। তাই ব্লু জার্সিতে খেলা। স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে মেট্রো স্টেশন। জবরদস্তি রং বদল। গেরুয়া ত্যাগীদের, ভোগীদের নয়, তোপ মমতার। বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন শেষে লোকসভা ভোটের জন্য ঝাঁপাল তৃণমূল। নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে দলের মেগা বৈঠকে মমতা। আগামী লোকসভা ভোটের আগে হাতে মাত্র সাড়ে তিন মাস সময় আছে। তাই কোনও সময় নষ্ট করতে চায় না তৃণমূল। চোখের সমস্যা থাকায় আজ ভর্চুয়ালিই ভাষণ দেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের সব সাংসদ, বিধায়ক, সভাপতি, ব্লক সভাপতি সহ সব নেতা, কর্মীরা রয়েছেন সেখানে। বৈঠকে একগুচ্ছ গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দেন তৃণমূলনেত্রী। লোকসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখে নবজোয়ারের কায়দায় ফের একবার জন সংযোগ কর্মসূচির ঘোষণা করেন মমতা। ভোটের আগে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তৃণমূলের অন্যতম হাতিয়ার, ১০০ দিনের কাজের বকেয়া আদায়। এনিয়ে নতুন আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলাদলি ছেড়ে একজোটে কাজের নির্দেশ। তোপ দেগে মমতার হুঁশিয়ারি, আমাদের ৪ জনকে জেলে ঢুকিয়েছে, আমি ৮ জনকে ঢোকাবো। যাদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ আছে প্রত্য়েককে জেলে ঢোকাবো।  সিপিএম-কে নিশানা করেন তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, ”সিপিএম নরকঙ্কাল নিয়ে বসে থাকত। মুন্ড কেটে মালা পরত। হাত-পা কেটে নিত। ধোপা, নাপিত বন্ধ করত। বাংলার মানুষ ওদে ছুড়ে ফেলেছে। শূন্য আছে শূন্যই থাকবে।” এরপরেই নাম না করে আইএসএফের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, ”সংখ্যালঘুদের কাছে অনুরোধ সতর্ক থাকুন। কয়েকজন ভুঁইফোড় উঠেছে, এদের থেকে সাবধান।”