বাংলার নির্বাচনে দেখা গিয়েছিল ভোটদানের ক্ষেত্রে যেমন মহিলারা অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিলেন, কন্নড়ভূমেও কিন্তু সেই একই ছবি দেখা গিয়েছিল ভোটের দিন। সকাল থেকেই বুথে বুথে মহিলাদের ভিড়। কার্যত সেই ছবিটাই বলে দিচ্ছিল কন্নড়ভূম পরিবর্তন চায়। বাড়ির মহিলারা তাই সকাল থেকেই বেড়িয়ে এসে বুথে লাইন দিয়েছেন নিজেদের মতাধিকার প্রয়োগের জন্য। তাঁদের এই বুথের ভিড় ফিকে করে দিয়েছে মোদির গাদাগুচ্ছের সভা আর র্যালির ছবি। ফিকে হয়ে গিয়েছে শাহের সভা আর র্যালি। উবে গিয়েছে জে পি নাড্ডার দলের জনপ্রিয়তা। এখন প্রশ্ন উঠতেই পারে কর্ণাটকের নির্বাচনের সঙ্গে বাংলার মিল কোথায়? এক তো, মহিলাদের ভোট দুই রাজ্যেই বিজেপিকে হারিয়েছে। তার বাইরে এটাও সত্যি, কংগ্রেস কন্নড়ভূমে মমতার দেখানো পথে হেঁটেছে। মমতার লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের মত কংগ্রেসও কর্ণাটকে মহিলাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে প্রতি মাসে ২ হাজার টাকা করে দেওয়ার। প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সরকারি বাসে মহিলাদের বিনা ভাড়ায় যাতায়াত করার সুযোগ গড়ে দেওয়ার। সেই প্রতিশ্রুতিতেই মহিলাদের ভোট পেয়েছে কংগ্রেস। তবে অনেকেরই মনে হয়েছে মহিলাদের বিজেপি বিমুখ করে তোলার অন্যতম কারণ হল রান্নার গ্যাসের অতিরিক্ত দামবৃদ্ধি যার আঁচ পোহাতে হয়েছে মহিলাদেরই এবং নারী সুরক্ষায় চূড়ান্ত ব্যর্থতা। মূলত এই দুইয়ের জেরেও বিজেপি মহিলাদের ভোট হারিয়েছে। অতি প্রবল মোদি বাহিনীকেও যে হারানো যায় সেটা বাংলার এক মেয়ে দেখিয়ে দিয়েছিলেন একুশের ভোটে। আর তেইশের ভোটে ভারত দেখল বিজেপিমুক্ত দাক্ষিণাত্য। মোদি ডাক দিয়েছিলেন কংগ্রেস মুক্ত ভারত গড়ার। সেই ভারতেই এবার শুরু হয়ে গিয়েছে বিজেপি মুক্তির পালা। সেই কারণেই হয়তো প্রধানমন্ত্রীর প্রাক্তন অর্থনৈতিক উপদেষ্টা কৌশিক বসু ট্যুইট করে জানিয়েছেন, যা আজ কর্ণাটক ভাবছে তা আগামিকাল গোটা ভারত ভাববে। ভাবনার এই পালাটা কিন্তু বাংলার মাটিতেই শুরু করার ডাক দিয়েছিল বাংলার এক মেয়ে। কন্নড়ভূম তারই ব্যাপ্তি।