কলকাতা

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন না রাজ্যপাল!

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন না রাজ্যপাল। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র মেরফত এমনটাই জানা যাচ্ছে। মঙ্গলবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠান ৷ এই বছর প্রায় সাড়ে 3 হাজার পড়ুয়াকে ডিগ্রি দেওয়া হবে ৷ তালিকায় 400 জন পিএইচডি স্কলাররাও রয়েছেন ৷ যদিও এই ডিগ্রি প্রদানের অনুষ্ঠানে সম্মতি নেই রাজ্যপালের ৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী, সমাবর্তনের আগে আচার্য, উপাচার্য-সহ সকল আধিকারিকদের নিয়ে কোর্ট বৈঠক করা হয় ৷ রাজভবনের তরফে জানানো হয়েছে, কোর্ট বৈঠকের 15 দিন আগে সকল সদস্য়দের নোটিশ পাঠাতে হয় ৷ সেই সঙ্গে, 8 দিন আগে বৈঠকের আলোচ্য বিষয়ের তালিকা পাঠাতে হয় ৷ কিন্তু, এই ক্ষেত্রে কোনও নিয়ম পালন করা হয়নি ৷ ফলে, মিটিং বন্ধ করতে হবে ৷ সমাবর্তন অনুষ্ঠানের আগে রাজভবনের অফিসিয়াল এক্স হ্যান্ডেল একটি পোস্ট করা হয়েছে । সেখানে এই অনুষ্ঠানের বিষয়ে বেশ কিছু সংশয়ের কথা উল্লেখ করা হয়েছে ৷ বলা হয়েছে, “উপাচার্যের আচরণ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের মধ্যে সামঞ্জস্য থাকা উচিত ৷ বেআইনি কোনও পদক্ষেপ ভবিষ্যতে পড়ুয়াদের ডিগ্রির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারে ৷ আইন সকলের উর্ধ্বে ৷” অবশ্য রাজ্যপালের বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক জানিয়েছেন, এক্স হ্যান্ডেলে উল্লিখিত বিষয়গুলি রাজভবনের কর্মীদের তথ্যের জন্য দেওয়া হয়েছে । রাজ্যপালের বক্তব্য হিসেবে উদ্ধৃত করা যাবে না ৷ এর আগে সমাবর্তন অনুষ্ঠান নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন রাজ্যপাল ৷ একাধিক প্রশ্ন তুলে উপাচার্যকে চিঠিও পাঠান তিনি ৷ কেন ইসি মিটিং দেরিতে করা হয়েছে ? সব সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর কেন রাজভবনকে জানানো হয়েছে ? সেই নিয়েও ক্ষোভপ্রকাশ করা হয় রাজভবনের তরফে । চিঠি পাওয়ার পর রাজ্যপাল তথা আচার্যের সঙ্গে দেখা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান অস্থায়ী উপাচার্য ৷ অবশ্য, বরফ সেখানেও গলেনি । ফলে, মঙ্গলবারের অনুষ্ঠানে আচার্য উপস্থিত থাকবেন কি না, সেই নিয়ে রয়েছে যথেষ্ট সন্দেহ । এই প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, “যেকোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের জন্য একটি পবিত্র অনুষ্ঠান । এটি দীর্ঘদিন ধরে 24 ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে । এমন একটি প্রতিষ্ঠানের ঐতিহ্য এবং প্রথা নিয়ে খেলা করা যায় না । উপরন্ত, সমস্ত নিয়ম মেনেই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে । শিক্ষার্থীদের কল্যাণে যা কিছু প্রয়োজন, তা অনির্দিষ্টকালের জন্য আটকে রাখা যায় না।” অন্যদিকে, সমাবর্তন অনুষ্ঠান প্রসঙ্গে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সংগঠন জুটার তরফে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে । সেখানে বলা হয়েছে, “ছাত্রছাত্রী ও গবেষকদের ডিগ্রি প্রদান নিয়ে বারবার এই রকম চলতে পারে না । আমরা মনে করি তাঁদের জীবনে দিনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । নির্দিষ্ট সময়ে ডিগ্রি না পেলে ভবিষ্যতের লেখাপড়া, চাকরি-সহ নানা ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিতে পারে । এই অবস্থায় নির্দিষ্ট দিনে সমাবর্তনের জন্য যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি সর্বতোভাবে দায়িত্ব পালন করবে ।”