বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পরই গুজরাতের জাখাউ বন্দরের কাছে আছড়ে পড়ল ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’। গোড়ার দিকে গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৮০ কিলোমিটার। ঘূর্ণিঝড়ের ‘আই’ রাত ১০টা নাগাদ মূলভাগে প্রবেশ করে। আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে খবর, সেই সময় ঝড়ের গতিবেগ বেড়ে ১২৫ কিলোমিটার পর্যন্ত হয়। বিকাল সাড়ে ৪টা থেকে স্থলভাগে প্রবেশ করে ঝড়। শুরু হয়ে যায় প্রবল ঝোড়ো হাওয়া। সঙ্গে বৃষ্টি। আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, মধ্যরাত পর্যন্ত ঝড়ের দাপট থাকবে। সূত্রে খবর, সৌরাষ্ট্র উপকূল ছুঁয়েই কচ্ছ জেলার জাখাউ বন্দরের কাছে আছড়ে পড়ে ‘বিপর্যয়’। এর জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হয় প্রচুর বাড়িঘর, রাস্তা। মৃত্যু হয় ২৩টি গবাদি পশুর। গভীর রাত পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী, বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে অন্ধকারে ঢেকে গিয়েছে ৯৪০টি গ্রাম। পাশাপাশি, দুর্যোগের কবলে পড়ে আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২২ জন। তবে রাত পর্যন্ত কোনও মৃত্যুর খবর জানা যায়নি। গুজরাতের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হর্ষ সাংভি জানিয়েছেন, দ্বারকা জেলায় তিনজন জখম হয়েছেন। এনডিআরএফ, সেনা ও গুজরাত পুলিস বিভিন্ন জায়গায় রাস্তা পরিষ্কারের কাজ চালাচ্ছে। প্রাথমিকভাবে আশঙ্কা করা হয়েছিল, ভয়ঙ্কর গতিতে আছড়ে পড়তে চলেছে ঘূর্ণিঝড়টি। কিন্তু উপকূলের দিকে এগতেই শক্তিক্ষয় হতে থাকে তার। যদিও ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি এড়াতে আগেভাগেই প্রয়োজনীয় সবরকম ব্যবস্থা সেরে রেখেছিল গুজরাত প্রশাসন। রাজ্যের আটটি উপকূল এলাকা থেকে প্রায় এক লক্ষ মানুষকে সরিয়ে ফেলা হয় নিরাপদ আশ্রয়ে। কচ্ছ ও সৌরাষ্ট্রে জারি করা হয় লাল সতর্কতা। বাতিল করা হয়েছে ট্রেন ও বিমান পরিষেবা। প্রশাসন সূত্রে খবর, ত্রাণ ও উদ্ধারের জন্য জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর পাশাপাশি রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীও রয়েছে। মোতায়েন রাখা হয়েছে সেনা ও আধা সেনা। সন্ধ্যা পর্যন্ত ৯৪ হাজার ৪২৭ জনকে নিরাপদ স্থানে সরানো হয়। আবহাওয়া দপ্তরের তরফে জানানো হয়েছে, আছড়ে পড়ার আগে ঘূর্ণিঝড়টি ঘণ্টায় ১৫ কিমি বেগে গুজরাত উপকূলের দিকে এগতে থাকে। সন্ধ্যার পর থেকেই বিপর্যয়ের আছড়ে পড়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায়। তা চলে মধ্যরাত পর্যন্ত। এর জেরে শুরু হয় প্রবল বৃষ্টি। কচ্ছ, দ্বারকা, জামনগরে প্রবল বৃষ্টিতে বহু এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সৌরাষ্ট্র-কচ্ছ ছাড়াও গুজরাতের অন্যান্য জেলাতেও হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টি চলছে। সঙ্গে রয়েছে ঝোড়ো হাওয়ার দাপট। আজ, শুক্রবারও বিপর্যয়ের রেশ চলবে বলে জানানো হয়েছে আবহাওয়া দপ্তরের তরফে।