বিদেশ

তুরস্কে বিধ্বংসী ভূমিকম্পে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ৮ হাজার

তুরস্কে বিধ্বংসী ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ৮ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। বিধ্বংসী  ভূমিকম্পে কার্যত মৃত্যুপুরী পূর্ব তুরস্ক ও প্রতিবেশী সিরিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকা। মঙ্গলবার সকালেও অনুভূত হয়েছে কম্পন। রিখটার স্কেলে ধরা পড়েছে তার মাত্রা ৫.৮। তবে উদ্ধারকাজ থামেনি। ভাঙা ঘরবাড়ির নীচে এখনও চাপা পড়ে রয়েছেন প্রচুর মানুষ। ধ্বংসস্তূপ থেকে সাড়া আসছে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই অসহায় প্রতীক্ষা ছাড়া কিছু করার নেই। তুরস্কের হাতায় প্রদেশের আন্তাকায়া শহরের ভেঙে পড়া বাড়ির নীচে আটকে রয়েছেন নুরগুল আতায়ের মা। বুকের ভিতর ধাক্কা দিচ্ছে তাঁর আর্তনাদ। নুরগুল বারবার ছুটে গিয়েছেন। কিন্তু অস্থিরভাবে খানিক চেষ্টা করেই ক্ষান্তি দিতে হচ্ছে। কারণ, হাতের কাছে ধ্বংসস্তূপ সরানোর কোনও যন্ত্রপাতি নেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)জানিয়েছে, এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে দুর্গতের সংখ্যা দাঁড়াতে পারে ২ কোটি ৩০ লক্ষে। তাদের মধ্যে ১৪ লক্ষই শিশু। ভূমিকম্প বিধ্বস্ত ১০ প্রদেশে তিন মাসের জরুরি অবস্থা জারি করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ এরদোয়ান। ভাইস প্রেসিডেন্ট ফুয়াত ওকটে জানিয়েছেন, দেশে মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। আহত অন্তত ২০ হাজার ৫৩৪। সিরিয়ায় সরকারি দখলভুক্ত এলাকায় এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৮১২ বলে দাবি সেদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রকের। দেশের বিদ্রোহী অধ্যুষিত এলাকায় কম করে ৭৯০ জন মারা গিয়েছে বলে জানিয়েছে উদ্ধারকারী দল। আহতের সংখ্যা দু’হাজার ছাড়িয়েছে। সবমিলিয়ে ভূমিকম্পে এখনও পর্যন্ত দুই দেশ মিলিয়ে ৭ হাজার ২০০ জন মারা যাওয়ার খবর মিলেছে।   তুরস্কের বিপর্যয় মোকাবিলা সংস্থা জানিয়েছে, ত্রাণ ও উদ্ধারের কাজে ২৪ হাজার আপৎকালীন কর্মী  নিয়োগ করা হয়েছে। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে ভারত সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। কিন্তু একদিকে তীব্র ঠান্ডা ও প্রবল বৃষ্টি এবং অন্যদিকে একের পর এক আফটার শকের কারণে উদ্ধারের কাজটা একেবারেই সহজ হচ্ছে না। তুষারঝড়ে ঢেকে গিয়েছে প্রধান সড়কগুলি। তিনটি বড় বিমানবন্দর অচল। এই প্রতিকূল পরিস্থিতি সত্ত্বেও ১০ টি প্রদেশ থেকে ৭ হাজার ৮০০ জনেরও বেশি আটককে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। কাউকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করতে পারলেই উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ছে লোকজন।