আগামী বৃহস্পতিবার পুরী থেকে সাগরদ্বীপের মধ্যবর্তী এলাকায় ল্যান্ডফল করার সম্ভাবনা রয়েছে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র। তার আগেই অবশ্য নবান্নের পক্ষ থেকে একাধিক সতর্কতা নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ নিয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থের কাছ থেকে বিস্তারিত রিপোর্টও নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর আজ এই বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেন তিনি। বলেন, ঝড়ের আগে আগাম সতর্কতা নিচ্ছে রাজ্য। দুর্যোগ মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত রয়েছি। এনডিআরএফ ও এসডিআরএফ-কে মোতায়েন করা হয়েছে। আগামী কাল, বুধবার থেকেই সমস্তরকম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী আজ মঙ্গলবারই বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। এরপর আগামীকাল, বুধবার তা ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেওয়ার কথা। ফলে বুধবার থেকেই আবহাওয়ার পরিবর্তন হতে শুরু করবে উপকূলের জেলাগুলিতে। বুধবার থেকে শুক্রবার ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতাও রয়েছে। জানা গিয়েছে, ‘দানা’-র প্রভাব পড়তে পারে রাজ্যের ৯টি জেলায়। সেগুলি হল-উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর।
নবান্ন সূত্রে খবর, সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ৩ টিম এনডিআরএফ ও ৪ টিম এসডিআরএফ মোতায়েন করা হচ্ছে দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। উত্তর ২৪ পরগনায় ২ টিম এনডিআরএফ ও ১ টিম এসডিআরএফ। পূর্ব মেদিনীপুরে ৩ টিম এনডিআরএফ এবং ২ টিম এসডিআরএফ। পশ্চিম মেদিনীপুরে ১ টিম এনডিআরএফ ও ২ টিম এসডিআরএফ। ঝাড়গ্রামে ১ টিম এসডিআরএফ। হাওড়ায় ২ টিম এসডিআরএফ এবং হুগলিতে ১ টিম এসডিআরএফ মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি আগামী বুধবার থেকে শনিবার অর্থাৎ ২৩-২৬ অক্টোবর ওই ৯টি জেলার স্কুলগুলিও বন্ধ রাখা হচ্ছে। পঠনপাঠন বন্ধ থাকবে ওই জেলাগুলির কলেজগুলিতেও। ওই জেলার সমস্ত অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রও বন্ধ থাকবে। মোট ৯ জন সচিবকে পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, ইতিমধ্যেই রাজ্য ও জেলাস্তরে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীও তৎপর রয়েছে। পাশাপাশি মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। উপকূল এলাকায় বন্ধ থাকবে ফেরি পরিষেবাও। সূত্রের খবর বিপর্যয়ের জেরে বন্ধ একাধিক লোকাল ও দুরপাল্লার ট্রেন। উপকূলবর্তী এলাকায় যাদের বাড়ি তাঁদের সেখান থেকে অন্যত্র, নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থাও করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।