মালদা

গুজবের জেরে ভাঙচুর স্বাস্থ্য কেন্দ্র

হক জাফর ইমাম, মালদা: গুজবের জেরে ভাঙচুর করা হয় সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র৷ বুধবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে পুরাতন মালদার মৌলপুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ছুটে আসতে হয় মালদা থানার পুলিশ৷ পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে৷ঘটনার সূত্রপাত স্বাস্থ্যকেন্দ্র লাগোয়া পুরাতন মালদা পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের রামচন্দ্রপুর এলাকার বাসিন্দা নারায়ণচন্দ্র পাল (৩৫) পেশায় মিষ্টি ব্যবসায়ী৷ বৃহস্পতিবার নারায়ণবাবুর ছেলের অন্নপ্রাশন ছিল৷ সেই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসেছেন তাঁর অনেক আত্মীয়স্বজন৷ অন্নপ্রাশন উপলক্ষ্যে তৈরি হয়েছে প্যান্ডেলও৷ বুধবার সন্ধে সাড়ে সাতটা নাগাদ সেই প্যান্ডেলে একটি স্ট্যান্ড ফ্যানের বিদ্যুৎ সংযোগ করছিলেন তিনি৷ সেই সময় তিনি বিদ্যুৎস্পর্শ হন৷ তিনি মাটিতে পড়ে গেলে বাড়ির লোকজন ছুটে আসে৷ ততক্ষণে নিস্তেজ হয়ে পড়েছিলেন তিনি৷ সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা৷ তবুও বাড়ির লোকজন তড়িঘড়ি তাঁকে নিয়ে যান পাশেই থাকা মৌলপুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে৷ দুজন চিকিৎসক পরীক্ষা করে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন৷ তারপর পরিবারের লোকজন নারায়ণবাবুর মৃতদেহ বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যান৷এরপরেই শুরু হয় কুসংস্কারের খেলা৷ নারায়ণবাবুর মৃতদেহে ম্যাসেজ করতে শুরু করেন পরিবারের সদস্যরা৷ তখনই নাকি হঠাৎ তাঁর দেহ নড়ে ওঠে৷ এবার বাড়ির লোকজন তাঁকে সোজা নিয়ে যান মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে৷ তবে সেখানকার চিকিৎসকরাও নারায়ণবাবুকে মৃত বলে ঘোষণা করেন৷ এদিকে, নারায়ণবাবুর মৃতদেহ নড়ে ওঠার গুজব মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়৷ ক্ষিপ্ত জনতা চড়াও হয় মৌলপুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে৷ তাদের অভিযোগ, দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে নারায়ণবাবুকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলেও তাঁর যথাযথ চিকিৎসা হয়নি৷ উত্তেজিত জনতা ভাঙচুর করে স্বাস্থ্যকেন্দ্র৷ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে মালদা থানার পুলিশ৷ পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে৷ যদিও এ বিষয়ে মৌলপুর ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের আধিকারিক সৌভিক দাস জানান যে মৃতের কিছু পরিবারের লোকজন গুজবে কান দিয়ে এই ভাঙচুরের ঘটনা ঘটিয়েছে, তিনি লিখিতভাবে মালদা থানায় অভিযোগ জানাবেন।