মালদা

দুই সতীনের ঝগড়ায় অভিমানে কীটনাশক খেয়ে আত্মঘাতী স্বামী

হক জাফর ইমাম, মালদাঃ দুই সতীনের তুমুল লড়াই সংসারে দেখে সহ্য করতে না পেরে অভিমানে কীটনাশক খেয়ে আত্মঘাতী হলেন সরকারি স্কুল শিক্ষক স্বামী । সোমবার রাতে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মালদা গাজোল থানার পূর্ব-কলেজপাড়া এলাকায়।  রাতেই ঘটনাস্থলে তদন্ত যায় গাজোল থানার পুলিশ।  ওই শিক্ষকের মৃতদেহ বাড়ি থেকে উদ্ধার করার পর মালদা মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করে  পুলিশ। মঙ্গলবার সকালে ওই শিক্ষকের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছে পুলিশ । এদিকে পুরো ঘটনাটি নিয়ে মৃতের দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী তার সতীনের বিরুদ্ধে গাজোল থানায় অভিযোগ করেছেন । পাল্টা প্রথম পক্ষের স্ত্রীও একই অভিযোগে পুলিশে নালিশ জানিয়েছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে , মৃত শিক্ষকের নাম রাজেশ চন্দ্র প্রসাদ (৪৮)।  তার বাড়ি গাজোলের পূর্ব কলেজপাড়া এলাকায় । রাজেশবাবু স্থানীয় বরিজপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদে কর্মরত ছিলেন।  পাশাপাশি তিনি গম্ভীরা শিল্পী হিসেবেও কাজ করতেন।  দীর্ঘদিন আগেই ওই শিক্ষক দুর্গা প্রসাদ নামে এক মহিলাকে বিয়ে করেন । কিন্তু বিয়ের পর থেকে সংসারের চরম অশান্তি থাকায় প্রথম পক্ষের স্ত্রীর সাথে বনিবনা ছিল না । এরপরই দুই বছর আগে রাজেশ চন্দ্র প্রসাদ পিংকি মিস্ত্রি নামে এক মহিলাকে বিয়ে করেন । দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীর সঙ্গে পূর্ব কলেজপাড়া এলাকায় থাকতেন ওই শিক্ষক। পাশের  গ্রামেই থাকতেন প্রথম পক্ষের স্ত্রী দুর্গাদেবী । কিন্তু স্বামীর অধিকার এবং সম্পত্তির ভাগ নিয়ে দুই সতীনের ক্রমাগত গোলমাল চলছিল।মৃতের দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী পিংকি মিস্ত্রী বলেন,  আমার স্বামীর ২৮ শতক জমি রয়েছে গাজোলে। ওই জমির এখন মূল্য লক্ষাধিক টাকার উপর।  সেই সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছিল দুর্গা প্রসাদ।  ওদের সাথে আমাদের কোন বনিবনা ছিল না । কিন্তু রবিবার রাতে দুর্গাদেবী দলবল নিয়ে আমাদের বাড়িতে ঝামেলা করে যায়। গোলমালের কথা জানতে পেরেই স্বামী মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন।  এরপরই তিনি বাইরে থেকে কীটনাশক খেয়ে বাড়িতে চলে আসেন।  মুখ দিয়ে গ্যাজলা বেড়ানো অবস্থায় বাড়িতে এসেই মৃত্যু হয় স্বামীর। প্রথম পক্ষের স্ত্রীর  ঝামেলার জেরেই আত্মহত্যা করেছেন স্বামী। যদিও দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী পিংকির এই অভিযোগ মানতে রাজি নন প্রথম পক্ষের স্ত্রী দুর্গা প্রসাদ।তার বক্তব্য,  স্বামীকে বশ করেই সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালিয়েছে পিংকি । ২৮ শতক জমি নিয়ে অশান্তি করছিল পিংকি।  এই অশান্তির জেরে আত্মঘাতী হয়েছেন স্বামী। গাজোল থানার ওসি হারাধন দেব জানিয়েছেন,  এক শিক্ষকের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে।  তার দুই স্ত্রীর রয়েছে। তাদের সাংসারিক বিবাদকে কেন্দ্র করে এই ঘটনাটি ঘটেছে বলে প্রাথমিক তদন্তে অনুমান করা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে মালদা গাজোল থানার পুলিশ।