মালদা

পুলিশ সুপারের চালকের দাদাগিরি আদালত চত্বরে, আইনজীবী ও ল-ক্লার্ককে মারধর, আদালত বয়কটের পথে আইনজীবীরা

হক জাফর ইমাম, মালদাঃ মালদা জেলা আদালত চত্বরে পুলিশ সুপারের চালকের দাদাগিরি। শুধমাত্র গাড়ির পিছনে দাঁড়িয়ে থাকার অপরাধে ল-ক্লার্ককে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ ও প্রানে মারার চেষ্টা পুলিশ সুপারের চালকের। ঘটনা এখানেই থেমে থাকেনি, চোখের সামনে চালকের এই আচরণের প্রতিবাদ করতে গেলে বিশিষ্ট আইনজীবী সুদীপ্ত গাঙ্গুলির উপরও চরাও হয় চালক বলে অভিযোগ। আক্রান্ত সুদীপ্ত গাঙ্গুলি ও ল-ক্লার্ক পার্থসারথি দাসের শারীরিক চিকিৎসা করা হয় বেসরকারি নার্সিংহোমে। এদিকে ঘটনার প্রতিবাদে এককাট্টা হয়ে প্রতিবাদে নামে মালদা বার এসোসিয়েশন এর আইনজীবীরা। অভিযুক্ত ওই গাড়ি চালকের শাস্তির দাবিতে সোচ্চার হন তারা। এদিকে গোলমালের আঁচ পেয়ে বিশাল পুলিশ বাহিনী ছুটে আসে আদালত চত্বরে। সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ আইনজীবীরা অভিযুক্ত চালকের বিরুদ্ধে ইংরেজ বাজার থানায় অভিযোগ পত্র জমা দিতে যান। মালদা বার এসোসিয়েশন এর সম্পাদক দেবকিশোর মজুমদার অভিযোগ করে বলেন, ইংরেজ বাজার থানার আইসি শান্তনু মিত্র অভিযোগ জমা নেওয়াতো দূর অস্ত, পালটা আইনজীবীদের অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং ঝামেলা না পাকিয়ে মিমাংসা করার পরামর্শ দেন। পুলিশের এই আচরণে ক্ষুব্দ আইনজীবীরা কোর্ট বয়কটের হুমকি দিয়েছেন। আক্রান্ত ল-ক্লার্ক পার্থসারথি দাস জানান, এদিন বিকেলে তিনি আদালতের জিআরও অফিসের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ওই সময় পুলিশ সুপার অর্নব ঘোষ একটি প্রাইভেট গাড়িতে পুলিশ

অফিসে আসেন। পুলিশ সুপার গাড়ী থেকে নেমে চলে গেলে চালক গাড়িটি পিছনের দিকে নিয়ে যাচ্ছিল। ওই সময় তিনি পিছনের দিকে দাঁড়িয়ে থাকায় তাকে লক্ষ্য করে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে ওই চালক। তিনি প্রতিবাদ করলে হঠাৎই চালক গাড়ি থেকে নেমে তাকে বেধরক মারধর শুরু করে। এই অসময় পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন স্পেশাল পাবলিক প্রসেকিউটার এনআইএ সুদীপ্ত গাঙ্গুলি। তিনি চালকের হাত থেকে তাঁকে বাঁচাতে গেলে ওই চালক সুদীপ্তবাবুর উপরও চরাও হয়। ওই চালক মুখে হুশিয়ারি দিতে থাকে যে সে পুলিশ সুপারের ড্রাইভার তার কেউ কিছু করতে পারবেনা। আইনজীবী সুদীপ্ত গাঙ্গুলি বলেন, পুলিশ সুপারের ড্রাইভার মানে যা খুশি করার ছাড়পত্র পেয়ে গেছে নাকি। একজন ল-ক্লার্ককে আমার সামনে অন্যায় ভাবে মারধর করছিল ওই চালক। আমি তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করি। এই সময় তাকে ছেড়ে আমাকে মারতে শুরু করে সে। আমার হাতে গুরুতর আঘাত লাগে। এই ঘটনার প্রতিবাদে ইংরেজ বাজার থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে আইসি শান্তনু মিত্র জঘন্য ভাষায় আমাদের সাথে কথা বলেন। অভিযোগ জমা না নিয়ে উলটে ওই চালকের সাথে মিমাংসা করে নেওয়ার পরামর্শ দেন। একজন পুলিশ অফিসারের এমন আচরণ মেনে নেওয়া যায়না। এদিকে এই ঘটনার প্রতিবাদে আগামীকাল কোর্ট বয়কটের কর্মসূচী নিতে চলেছে মালদা বার এসোসিয়েশন। অভিযুক্ত চালকের শাস্তি না হলে আন্দোলন চলবে আইনজীবীদের বলে জানাগেছে।