বছর ঘুরলেই লোকসভার নির্বাচন। এই অবস্থায় লোকসভা ভোটের আগে চালের ঊর্ধ্বমুখী বাজার দর কমাতে বাসমতী ছাড়া অন্য সব ধরনের চাল বিদেশে রফতানিতে নিষিদ্ধ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু এই সিদ্ধান্তের জেরে ধাক্কা খেয়েছে বাংলার চাল রফতানি। ধাক্কা খাচ্ছে বাংলার কৃষকদের আয়ও। যদিও কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের জেরে খোলা বাজারে ধানের দাম কমার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এমনকি কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে সরকারি উদ্যোগে চাষিদের কাছ থেকে ধান কেনার পরিমাণ আরও বাড়বে বলে আশা করছে রাজ্যের খাদ্য দফতরের আধিকারিকেরা। কিন্তু ধাক্কা খাবেন বাংলার সুগন্ধি চালের চাষ করা কৃষকেরা। বাংলার তৈরি সুগন্ধি গোবিন্দভোগ, তুলাইপঞ্জি সহ আরও বেশ কিছু চালের বিদেশের মাটিতে বেশ ভালই চাহিদা আছে। এমনকি বাসমতী নয় এমন কিছু সাধারন চালও বাংলা থেকে বিদেশের মাটিতে পাঠানো হয়। আর তাই বাংলার বুকে এই সব সুগন্ধি ও বিদেশের বাজারে চাহিদা আছে এমন চালের চাষ বাড়ছে ক্রমশ। কিন্তু এখন কেন্দ্র সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাসমতী চাল ছাড়া ২০২৪ সালের মে মাসের আগে অন্য কোনও চাল বিদেশে রফতানি করা যাবে না। বাংলায় যে সব সুগন্ধি চালের চাষ হয় এবং যে সব সাধারন চাল বিদেশে রফতানি হয় বাংলা থেকে সেগুলি কোনওটাই বাসমতী শ্রেনীর নয়। আর তাই কেন্দ্রের সিদ্ধান্তে বাংলার চাষিদের বড়সড় ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কৃষি বিপণনের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের দাবি, বাংলার বুকে যারা সুগন্ধি চালের চাষ করেন তাঁদের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। এমনিতেই গোবিন্দভোগ, বাসমতী নয় এমন সুগন্ধি চাল বিদেশে রফতানি করার সময় ২০ শতাংশ অতিরিক্ত কর আগেই আরোপ করেছিল কেন্দ্র। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এতে আপত্তি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি দেন। কেন্দ্রের ওই অতিরিক্ত করের জন্য রাজ্যের কৃষকদের ক্ষতি হচ্ছে বলে মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন। কেন্দ্রীয় সরকার অবশ্য অতিরিক্ত কর প্রত্যাহার করেনি। এবার যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হল তাতে বাসমতী ভিন্ন অন্য কোনও চালই আর বিদেশে রফতানি করা যাবে না। এমনকি পড়শি বাংলাদেশ সরকার যখন বিদেশ থেকে সাধারণ চাল আমদানি করার অনুমতি দেয়, তখন তা বেশি যায় এ পার বাংলা থেকেই। কিন্তু এখন সেই রাস্তাও বন্ধ হয়ে গেল।