ইন্দো-চিন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে সেনা সরিয়ে নেওয়া (ডিসএনগেজমেন্ট) সংক্রান্ত সমস্যার ৭৫ শতাংশ সমাধান হয়ে গিয়েছে, এমন কথাই জানালেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। সুইৎজারল্যান্ডের জেনেভায় একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে যোগ দিতে গিয়েছেন জয়শঙ্কর। সেখানেই একটি সেশনে চিন সম্পর্কে মুখ খুললেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী। জানালেন, ২০২০ সালের গলওয়ান সংঘর্ষের পর থেকে পুরো ইন্দো-চিন সম্পর্ক গভীর ভাবে প্রভাবিত হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় সমস্যা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় বিশাল সংখ্যক সেনা মোতায়েন। জয়শঙ্করের কথায়, ‘আলোচনা চলছে, কিছুটা অগ্রগতি হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে বলতে গেলে, ডিসএনগেজমেন্ট সমস্যার ৭৫ শতাংশ মিটে গিয়েছে। তবে এখনও বেশ কিছু সমস্যার সমাধান বাকি।’ ভারত এবং চিনের মধ্যে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা প্রায় ৩,৫০০ কিলোমিটার বিস্তৃত, যার অনেক অংশই চিহ্নিত নয়। ২০২০-এর গলওয়ান সংঘর্ষের পর থেকে লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা সংলগ্ন অঞ্চলে চিন এবং ভারত, দু’পক্ষই অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করে রেখেছে। ২০২১ সাল থেকে আলোচনার মাধ্যমে ধাপে ধাপে সেনা সরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, কিন্তু এখনও পুরোপুরি পরিস্থিতি শান্ত হয়নি। গলওয়ান, হট স্প্রিংস এবং গোগরা থেকে আংশিক ভাবে সেনা সরানো হয়েছে, প্যাংগংয়ের উত্তর এবং দক্ষিণ তীর থেকে পুরোপুরি সেনা সরেছে কিন্তু দেপসাং থেকে চিন এখনও সেনা সরাতে রাজি নয় বলে সূত্রের খবর। এই পরিস্থিতিতে সুইৎজারল্যান্ডেই চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ওয়াইয়ের সঙ্গে দেখা করার কথা জয়শঙ্করের। তার আগে জয়শঙ্করের বার্তা, ‘আশা করি পুরোপুরি সেনা প্রত্যাহার সংক্রান্ত সমাধানসূত্র মিলবে। সীমান্তে শান্তি এবং স্থিতাবস্থা ফিরবে। তার পরই আমরা বাকি সম্ভাবনা খতিয়ে দেখব।’ জয়শঙ্করের দাবি, সীমান্তে শান্তি না ফিরলে চিনের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক হওয়া সম্ভব নয়। গলওয়ান প্রসঙ্গ উত্থাপন করে জয়শঙ্করের বক্তব্য, ‘ওই উচ্চতায়, প্রবল ঠান্ডায় এত বেশি সেনা মোতায়েন রাখা, বড়সড় কোনও বিপদ ঘটেই যেতে পারত। আমরা প্রায় চার বছর ধরে আলোচনা চালাচ্ছি। সেনাকে তাদের নর্ম্যাল অপারেটিং বেসে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া (ডিসএনগেজমেন্ট) শুরু হয়েছে, কিন্তু কাজ এখনও বাকি।’