প্রয়াত হলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রেজ্জাক মোল্লা। দীর্ঘদিন বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। শুক্রবার সকালে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ের বাঁকড়ি গ্রামে বাড়িতে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। বার্ধক্যজনিত অসুখে ভুগছিলেন দীর্ঘদিন ধরেই। অনেক বছর ধরেই সক্রিয় রাজনীতি থেকেও দূরেই ছিলেন তিনি। অবশেষে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলেন। আজ, শুক্রবার তাঁর প্রয়াণে শোকস্তব্ধ রাজ্যের রাজনৈতিক মহল। এক্সে(টুইটার) শোকপ্রকাশ করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি লিখেছেন, ‘আমার সহকর্মী, আব্দুর রেজ্জাক মোল্লা’র প্রয়াণে আমি শোকাহত ও মর্মাহত। তিনি রাজ্য মন্ত্রিসভায় আমার সহকর্মী ছিলেন। তাঁকে আমি শ্রদ্ধা করতাম, সম্মান করতাম। বাংলার গ্রামজীবন, কৃষি-অর্থনীতি ও ভূমি-সংস্কারের মতো বিষয়ে তাঁর জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা ছিল সুবিদিত। তাই একসময় অন্য ধারার রাজনীতি করলেও, মা-মাটি-মানুষের সরকারে তাঁর মিলিত হয়ে যাওয়া ছিল সহজ ও স্বাভাবিক। তাঁর প্রয়াণে বাংলার রাজনৈতিক জীবনে অপূরণীয় শূন্যতার সৃষ্টি হল। আমি তাঁর পরিবারবর্গ, অসংখ্য অনুগামী ও শুভানুধ্যায়ীকে আমার আন্তরিক সমবেদনা জানাই।’
১৯৭৭ সালে প্রথম বামফ্রন্ট সরকারের জমানায় ক্যানিং পূর্ব থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। ২০১১ সাল পর্যন্ত সেই কেন্দ্রেরই বিধায়ক ছিলেন। বামেদের দুর্দিনেও হাতছাড়া হয়নি রেজ্জাক মোল্লার এই আসন। বাম আমলে ছিলেন ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দপ্তরের মন্ত্রী। ২০১৪ সালে CPIM-এর রাজ্য কমিটি রেজ্জাক মোল্লাকে দলবিরোধি কার্যকলাপের অভিযোগে বহিষ্কার করে। এর পর নতুন পার্টি গঠন করেছিলেন ‘চাষার ব্যাটা’ রেজ্জাক। নাম রেখেছিলেন ভারতীয় ন্যায়বিচার পার্টি। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয় রেজ্জাকের। পরবর্তীতে ২০১৬ সালে তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। ভাঙড় থেকে তৃণমূলের টিকিটে বিধায়ক নির্বাচিত হন ২০১৬ সালে। পান খাদ্য ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দপ্তরের ভার। যদিও ২০২১ সালে বয়সজনিত কারণে রেজ্জাককে আর টিকিট দেয়নি তৃণমূল। খানিকটা দূরত্বও তৈরি হয় দলের সঙ্গে। তার পর থেকেই অসুস্থ হয়ে কার্যত গৃহবন্দি ছিলেন। সক্রিয় রাজনীতিতে আর তেমন ভাবে দেখা যায়নি। ‘চাষার ব্যাটা’র মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ রাজনৈতিক মহল।


