১৪ দফা বিধির প্রস্তাব রাজ্যকে
কোভিড বিধি মেনে পুজো করতে রাজ্য সরকারকে একগুচ্ছ প্রস্তাব পাঠালো ফোরাম ফর দুর্গোৎসব । এই প্রস্তাবে ১৪ দফার গাইডলাইনে জোর দিয়েছে ফোরাম ফর দুর্গোৎসব। পুজো কমিটিগুলির তরফ থেকে গাইডলাইনটি প্রস্তাব হিসেবে পাঠানো হবে রাজ্য সরকারের কাছে। সরকারের থেকে সবুজ সঙ্কেত পেলেই পুজোর প্রস্তুতি শুরু করবে ফোরাম ফর দুর্গোৎসব। আশঙ্কার মেঘ ঘনিয়ে ছিল গত বছরেও। করোনার দাপট থাকলেও টিকার প্রোটেকশন ছিল না। টিকাকে সামনে রেখেই এ বার পুজোর প্রস্তুতি করতে চায় ফোরাম ফর দুর্গোত্সব। কলকাতার ছোট-বড় কমিটি-সহ প্রায় সাড়ে ৪০০ পুজো কমিটি এই ফোরামের অন্তর্ভুক্ত। ফোরাম ফর দুর্গোৎসরের সিদ্ধান্ত, ১৪ দফা গাইডলাইন মেনে পুজো করতে হবে কমিটিগুলোকে। ফোরাম ফর দুর্গোত্সবের সাধারণ সম্পাদক শাশ্বত বসু বলেন, কলকাতায় ইতিমধ্যেই একটি টিকাকরণ ক্যাম্প করা হয়েছে। বর্ধমানে ফোরামের উদ্যোগে জেলার পুজো কমিটিগুলোর জন্য টিকাকরণ করা হয়েছে। পুজোর সঙ্গে যুক্ত সকলকে টিকা দেওয়া সম্পূর্ণ করতে আরও ক্যাম্প করা হবে ভবিষ্যতে। খুব শীঘ্রই দমদম পার্ক এবং উত্তর কলকাতাতেও পুজোর সঙ্গে যুক্তদের জন্য বিশেষ টিকাকরণ ক্যাম্প করা হবে।
একনজরে দেখে নেওয়া যাক ফোরাম ফর দুর্গোত্সবের গাইডলাইন গুলি:
১) বাজেট নিয়ন্ত্রণ করে সুন্দর ও সুস্থরুচিসম্পন্ন পুজোর আয়োজন করা হবে। এতে যে অর্থ বাঁচবে তা দিয়ে পুজো ক্লাবগুলির আশেপাশের এলাকার জনহিতকর কাজ করতে হবে।
২) যতটা সম্ভব খোলামেলা মণ্ডপ তৈরি করা হবে যাতে দর্শকরা বাইরে থেকে প্রতিমা দর্শন করতে পারে।
৩) ক্লাবের সমস্ত আয়োজক, পুজোর সঙ্গে জড়িত শিল্পী, মণ্ডপে কাজ করা শিল্পী, আলোকসজ্জার দায়িত্বে থাকা শিল্পী, পুরোহিত, ঢাকীদের টিকাকরণের বন্দোবস্ত ক্লাব কর্তৃপক্ষকেই করতে হবে।
৪) প্যান্ডেলে ভিতরে কারুকাজ যতটা সম্ভব কম করে বাইরে চাকচিক্যতে বেশি প্রাধান্য দেওয়ার অনুরোধ ক্লাবগুলিকে করা হবে। যাতে দর্শনার্থীরা বাইরে থেকেই সমস্ত কিছু দেখে নিতে পারেন।
৫) প্যান্ডেলে প্রবেশ করার পথ যতটা সম্ভব দীর্ঘ করতে হবে। যাতে মানুষ তাতে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে দাঁড়াতে পারেন।
৬) সমস্ত দর্শনার্থী যে মাস্ক পরে মণ্ডপে প্রবেশ করেন সেদিকে নজর রাখতে হবে। গেটের কাছে স্যানিটাইজারের ব্যবস্থাও রাখতে হবে।
৭) ঠাকুরের ভোগ নিবেদনের কাটা ফল দিয়ে করা যাবে না।
৮) পুষ্পাঞ্জলি ও সন্ধিপূজার সময় যতটা সম্ভব সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
১০) একসঙ্গে বেশি মানুষ মণ্ডপে প্রবেশ করতে দেওয়া যাবে না। স্বেচ্ছাসেবীদের সঙ্গে কথা বলে সেই ব্যবস্থা করতে হবে। দফায় দফায় নির্দিষ্ট সংখ্যক মানুষকে মণ্ডপে ভিতরে যেতে দিতে হবে।
১১) দর্শকরা যাতে শুধু সন্ধ্যার পর না এসে সারা দিন পুজো দেখতে আসেন, সেই বিষয় মাথায় রেখে প্রচার করতে হবে।
১২) বিগত বছরগুলিতে যেমনভাবে নিয়ম মেনে পুজো করে ‘ফোরাম ফর দুর্গোত্সব’ পশ্চিমবঙ্গ সরকার ও উচ্চ আদালতের প্রশংসা পেয়েছে। এবারও সেই ধারা বজায় রাখার জন্য সচেষ্ট হতে হবে।
১৩) যতটা সম্ভব কম মানুষ নিয়ে বিসর্জনের শোভাযাত্রা করতে হবে।
১৪) কোভিড পরিস্থিতিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, এইসিএমআর এবং বাংলার সরকার যে সমস্ত উপদেশ ও নির্দেশ দিয়েছে। তা মেনেই সুন্দর ও সুরক্ষিত পুজোর আয়োজন করতে হবে।