জেলা

বারাকপুরে দুষ্কৃতীর গুলিতে মৃত স্বর্ণ ব্যবসায়ী, আহত ২

ভরসন্ধ্যায় জনবহুল বারাকপুরে শ্যুটআউট! ডাকাতিতে বাধা দিতে গিয়ে দুষ্কৃতীদের ছোড়া গুলিতে মৃত্যু হল এক সোনার দোকান মালিকের পুত্রের। ডাকাতদের গুলিতে গুরুতর জখম হয়ে স্থানীয় নার্সিংহোমে ভর্তি দোকান মালিক নীলরতন সিংহ এবং দোকানের নিরাপত্তা কর্মী শঙ্কর। সন্ধ্যা ছ’টা নাগাদ বারাকপুর আনন্দপুরী এলাকায় ওই সোনার দোকানে ডাকাতদের হানা এবং গুলিতে মৃত এবং আহত হওয়ার এই ঘটনায় তুমুল উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাস্থলে যান বারাকপুরের পুলিস কমিশনার অলক রাজোরিয়া সহ পদস্থ কর্তারা। ঘটনাস্থল ও তার আশপাশের এলাকার সিসিটিভি খতিয়ে দখে দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। দুষ্কৃতীদের খোঁজে সংলগ্ন বিভিন্ন থানাকে সতর্ক করা হয়েছে। ডাকাতদের গুলিতে মৃত দোকান মালিকের পুত্রের নাম নীলাদ্রি সিংহ (২৬)। মাত্র চার-পাঁচ মাস আগে বিয়ে হয়েছিল নীলাদ্রির। ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় ব্যবসায়ী মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। 
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বারাকপুর শহরের ব্যস্ততম অংশ ১৪ নম্বর রেলগেট। সেখান থেকে আনন্দপুরী পোস্ট অফিস যাওয়ার মাঝে ওই সোনার দোকানটি ‘সিংহ জুয়েলারি হাউস’ নামে পরিচিত। দৃশ্যত বিহ্বল দোকানের বৃদ্ধ কর্মচারী দিলীপ সাহা বলেন, সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ আমরা (মালিক, তাঁর পুত্র, আমি) তখন দোকানের ভিতরে, বাইরে গার্ড শঙ্কর। হেলমেটে মাথা আর মুখ মাস্কে ঢাকা দু’জন দোকানে ঢোকে। অন্যান্য কাস্টমারদের মতোই সোনার গয়না দেখতে চায়। ওরা হিন্দিতে কথা বলছিল। কাউন্টারে তখন ছিলেন মালিক পুত্র। তিনিই গয়না দেখাচ্ছিলেন। এরপরই আরও দু’জন দোকানে ঢুকে রিভলভার উঁচিয়ে সেই সব গয়নার বাক্স নিজেদের হেফাজতে নিতে চায়। নীলাদ্রি বাধা দেন। দুষ্কৃতীদের সঙ্গে তাঁর ধস্তাধস্তি শুরু হয়। আর তখনই এক দুষ্কৃতী নীলাদ্রিকে লক্ষ্য করে পরপর গুলি চালায়। মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। ছেলেকে বাঁচাতে নীলরতনবাবু এগিয়ে এলে, তাঁকে গুলি করা হয়। এরপর দোকানের নিরাপত্তা রক্ষী শঙ্করের পায়ে গুলি করে দুষ্কৃতীরা। বাইরে রাখা দুটি মোটর সাইকেলে চেপে ডাকাতরা ওল্ড ক্যালকাটা রোড ধরে পাতুলিয়ার দিকে চম্পট দেয়। গুরুতর জখম সবাইকে স্থানীয় একটি নার্সিনহোমে নিয়ে যাওয়া হলে, চিকিৎসকরা নীলাদ্রিকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনটি গুলি লেগেছিল তাঁর শরীরে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, বাইরের কাচের দরজা ঠেলে অনেকটা ভিতরে ঢুকতে হয়। তাই দোকানের ভিতরে ঠিক কী হচ্ছে, বাইরে থেকে ঠাওর করা মুশকিল।  ঘটনার পরই বারাকপুর পুরসভার চেয়ারম্যান উত্তম দাস ওই অকুস্থলে যান। তিনি বলেন, এলাকায় সিসি ক্যামেরা রয়েছে। আমরা দোষীদের গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি। বঙ্গীয় স্বর্ণ শিল্পী সমিতি এই ঘটনা নিন্দা করে দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে।