পুজো

Guru Purnima: গুরু পূর্ণিমার গুরুত্ব ও মাহাত্য!

গুরু পূর্ণিমা উৎসবকে হিন্দু ধর্মে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। আষাঢ় মাসের পূর্ণিমা তিথিতে এই উৎসব পালিত হয়। গুরু পূর্ণিমা ব্যাস পূর্ণিমা এবং বেদ পূর্ণিমা নামেও পরিচিত। হিন্দু, বৌদ্ধ ও জৈন ধর্মাবলম্বীদের কাছে গুরু পূর্ণিমা তিথি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এবছর আগামী ২০ জুলাই থেকেই পড়ে যাচ্ছে এই আষাঢ় পূর্ণিমার তিথি। তিথি সমাপ্ত হবে ২১ জুলাই। হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুসারে, আষাঢ় মাসের পূর্ণিমা তিথিকে গুরু পূর্ণিমা বলে চিহ্নিত করা হয়েছে।  মহর্ষি বেদ ব্যাসের জন্মবার্ষিকীর দিন হিসেবেও পরিচিত। প্রাচীন ভারতের হিন্দু ঐতিহ্যে মহর্ষি বেদব্যাসের ভূমিকা অনস্বীকার্য। এদিন বেদব্যাসকে শ্রদ্ধা ও সম্মান করার জন্যই বিশেষভাবে পালন করা হয়েছিল। এদিন তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন। আষাঢ় মাসের পূর্ণিমার দিনটিকে ব্যাস পূর্ণিমা নামেও পরিচিত। মহাভারতের রচয়িতা হিসেবে বেদব্যাসের ভূমিকা অপরিহার্য। এছাড়া প্রাচীন ভারতে শাস্ত্র ও সাহিত্য রচনায় মহর্ষির অবদানকে স্মরণ করা হয়ে থাকে এদিন। এক দিকে যেমন, প্রাচীন ভারতের ঐতিহ্যমতে, এদিন আদিগুরু ঋষি বেদব্যাসের জন্মবার্ষিকীর দিন হিসেবেও পালিত হয়। অন্যদিকে, বৌদ্ধদের জন্যও গুরু পূর্ণিমা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এদিন বুদ্ধজ্ঞান লাভের পর সারনাথে প্রথম ধর্মোপদেশ প্রদান করেছিলেন গৌতম বুদ্ধ। যা ধর্মচক্র প্রবর্তন নামেও পরিচিত। হিন্দু ও বৌদ্ধদের পাশাপাশি জৈনদের কাছেও গুরুত্বপূর্ণ। ২৪ তম তীর্থঙ্কর মহাবীর প্রথম ও প্রদান শিষ্য হিসেবে গৌতম স্বামীকে বেছে নেন। শিক্ষা ও নির্দেশনার প্রকাশকে শ্রদ্ধা ও সম্মান জানাতে এদিন গুরু পূর্ণিমা পালিত হয়। আষাঢ় মাসের পূর্ণিমা তিথিতে গুরু পূর্ণিমা পালিত হয়। এদিন শিষ্য বা পড়ুয়ারা নিজ নিজ শিক্ষক বা গুরুদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করার রীতি রয়েছে। তাঁদের আশীর্বাদ প্রার্থনা করেন পড়ুয়ারা। গুরু পূর্ণিমার দিনে বিশেষ আচার মেনে গুরু ও ভগবান বিষ্ণুর পুজো করা উচিত। তাতে পুণ্য, মোক্ষলাভ হয়। কর্মজীবনেও উন্নতি দেখা দিতে পারে। গুরু পূর্ণিমার দিন গীতা পাঠের পর কিছুক্ষণ গরুদের সেবা করুন। এবছর গুরু পূর্ণিমায় সর্বার্থ সিদ্ধি যোগ তৈরি হচ্ছে ৷ সনাতন ধর্ম অনুযায়ী এই যোগ অত্যন্ত শুভ যোগ ।

গুরু পূর্ণিমার দিন সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে গঙ্গাস্নান করুন ৷ গঙ্গাস্নান করার পর গুরুর চরণে হলুদ বা সাদা ফুল অথবা সাদা বস্ত্র অর্পণ করুন ৷ এতে গুরুর আশীর্বাদ সারাজীবন বজায় থাকবে ৷ এইদিন সকালবেলায় উঠে বাবা-মা’কে প্রণাম করতে পারেন ৷ এছাড়াও ভালো কোনও কাজ যেমন, নিজের সাধ্যমতো গরীব দুঃখীকে দান করুন এতে ভগবানের আশীর্বাদ পাবেন ৷ গুরু পূর্ণিমার দিন দিক্ষা নেওয়া অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয় ৷” এছাড়াও তিনি জানান, গুরু পূর্ণিমার দিন বাড়িতে গীতা পাঠ করা ভালো এবং নিরামিষ আহার গ্রহণ করা ভালো ৷ এইদিনে বাড়িতে দেবী লক্ষ্মী ও ভগবান নারায়নের পুজো করলে গৃহের জন্য খুবই মঙ্গলের ৷ এছাড়াও সন্ধ্যায় ঘিয়ের প্রদীপ জ্বালানো পবিত্র বলে মনে করা হয় ৷

আষাঢ় মাসের পূর্ণিমা তিথি ২০ জুলাই বিকাল ০৫ টা ৫৯ মিনিট থেকে শুরু হবে এবং ২১ জুলাই বিকাল ০৩ টে ৪৬ মিনিটে শেষ হবে।

আষাঢ় মাসের পূর্ণিমা তিথি শুরু হবে ২০ জুলাই সন্ধ্যা ৫ টা ৫৯ মিনিট থেকে, এবং এই তিথি ২১ জুলাই দুপুর ৩ টে ৪৬ মিনিটে শেষ হবে। এই কারণেই গুরু পূর্ণিমার তারিখ নিয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে। গুরু পূর্ণিমা শুধুমাত্র ২১ জুলাই পালিত হবে। যদি পুজোর সময়ের কথা বলি, তাহলে ২১ জুলাই, আপনি সকাল ০৫ টা ৪৬ মিনিট থেকে দুপুর ০৩ টে ৪৬ মিনিট পর্যন্ত পুজো করতে পারবেন।