কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলস ও ডিসি সেন্ট্রাল ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়ের অপসারণ চেয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠি লিখলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। উল্লেখ্য, রাজভবনে শ্লীলতাহানি কাণ্ডের তদন্তের দায়িত্বে আছেন ডিসি সেন্ট্রাল ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়। কেন্দ্রের কর্মিবর্গ ও প্রশিক্ষণ দফতরে চিঠি লিখে ইন্দিরা এবং বিনীত গোয়েলের অপসারণে দাবি জানান রাজ্যপাল। প্রসঙ্গত, সংবিধানের ৩৬১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, আইনি রক্ষাকবচ পেয়ে থাকেন রাজ্যপাল। তবে শ্লীলতাহানিকাণ্ডে কলকাতা পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। রাজভবনের কর্মীদের বিরুদ্ধে এফআইআর-ও করা হয়েছিল এই মামলায়। রিপোর্ট অনুযায়ী, শ্লীলতাহানিকাণ্ডে পুলিশ তদন্ত করায় সংবিধান লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে অভিযোগ রাজ্যপালের। এদিকে রাজভবনের শ্লীলতাহানির অভিযোগ ছাড়াও রাজ্যপালের বিরুদ্ধে নৃত্যশিল্পীর যৌন হেনস্থার অভিযোগের উঠেছিল। সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কলকাতা পুলিশের তরফ থেকে দায়ের করা হল জিরো এফআইআর করা হয়। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ এবং ১২০বি ধারায় এই এফআইআর করা হয়েছে। সেই এফআইআর-এ আবার বোসের ভাইপোর নাম আছে বলে জানা গিয়েছে। এদিকে সম্প্রতি রাজভবনের কর্মীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে। উল্লেখ্য, সম্প্রতি অভিযোগ ওঠে, রাজভবনে নিজের চেম্বারে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস নাকি এক মহিলার শ্লীলতাহানি করেন। মে মাসের ২ তারিখে ঘটনা ঘটেছিল বলে দাবি করা হয়। সেদিনের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, অভিযোগকারী মহিলা রাজভবনের সিঁড়ি দিয়ে কাঁদতে কাঁদতে নেমে যাচ্ছেন। রিপোর্টে দাবি করা হচ্ছে, সেদিন ওই মহিলা পুলিশের কাছে যাওয়ার আগে এক সচিবের ঘরে গিয়েছিলেন। পুলিশ ওই মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পেরেছে, রাজভবনের কনফারেন্স রুমে রাজ্যপালের সঙ্গে প্রায় ১৫ থেকে ১৬ মিনিট ছিলেন তিনি। সেই ঘটনাতেও পুলিশ তদন্ত শুরু করে। এদিকে রাজ্যপালের সচিব এবং রাজভবনের অন্যান্য কর্মীর বিরুদ্ধে সেই নির্যাতিতাকে আটকে রাখার অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর করা হয়েছিল। সেই বিতর্কের মাঝেই সামনে আসে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে অপর একটি অভিযোগ। রিপোর্ট অনুযায়ী, এক নৃত্যশিল্পীকে যৌন হেনস্তার অভিযোগ উঠেছিল রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে। সেই নিয়ে লালবাজারের গোয়েন্দারা প্রাথমিক তদন্ত করে নবান্নে তদন্ত রিপোর্ট জমা পড়েছে। রিপোর্টে দাবি করা হয়, ২০২৩ সালে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগের করেছিলেন এক নামী ওড়িশি নৃত্যশিল্পী। সেই অভিযোগ অনুযায়ী, গত ২০২৩ সালের জুন মাসে একটি অনুষ্ঠানের নাম করে তাঁকে দিল্লি নিয়ে গিয়েছিলেন বোস। সেখানে এক পাঁচতারা হোটেলে নৃত্যশিল্পীর থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সেখানেই নাকি তাঁর সঙ্গে রাজ্যপাল অভব্য আচরণ করেছিলেন। তাঁকে যৌন হেনস্থা করেছিলেন। এরপরই সেই নৃত্যশিল্পী নবান্নের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। পরে নবান্নের তরফ থেকে কলকাতা পুলিশকে এই বিষয়ে প্রাথমিক তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।