কলকাতা

৩ জনকে ফাঁসির সাজা দেয় নিম্ন আদালত, প্রমাণের অভাবে বেকসুর খালাস কলকাতা হাইকোর্টে

প্রমাণের অভাবে খুনের মামলায় ফাঁসির সাজা পাওয়া তিনজনকে বেকসুর খালাসের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট । বৃহস্পতিবার বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি মহঃ শব্বার রাশিদির ডিভিশন বেঞ্চ বেকসুর খালাসের নির্দেশ দিতে গিয়ে পুলিশি তদন্তের গাফিলতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন । আদালত জানিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তা প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে পুলিশ । কারণ নিম্ন আদালতে পুলিশের পক্ষের আইনজীবীরা জানান, অভিযুক্ত সঞ্জয় বিশ্বাসকে ডেকে এনে মৃত মহিলার দেহ কেটে টুকরো করার জন্য বাধ্য করেছিল অন্য আর এক অভিযুক্ত লিপিকা পোদ্দার । না হলে তাকে খুনের হুমকি দেওয়া হয় । কিন্তু খুন কে করেছিল, তার কোনও প্রমাণ দিতে পারেনি পুলিশ । 2014 সালের 20 এপ্রিল বিকেলবেলা । শিয়ালদা রেলওয়ে স্টেশনের পার্কিং লটে দড়ি দিয়ে বাঁধা লেপ, একটা বড় ট্রলি ব্যাগ আর একটা স্কুল ব্যাগ বেওয়ারিশ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায় । কর্তব্যরত জিআরপি কর্মী বিষয়টি শিয়ালদা স্টেশনের থানায় জানান । তদন্তে নেমে পুলিশ দেখে ব্যাগ দুটি ও লেপের ভিতরে একজন মহিলার খণ্ড খণ্ড করা মৃতদেহ আছে । পরে জানা যায়, মৃতদেহটি জয়ন্তী দেব নামে এক মহিলার । তাঁর বোন দেহ সনাক্ত করেছিলেন । তদন্তে নেমে জানা যায়, ওই মহিলার সঙ্গে স্বামী সুরজিৎ দেবের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে । তাঁরা আলাদা থাকতেন । মহিলার স্বামী সুরজিৎ, স্বামীর বান্ধবী লিপিকা পোদ্দার ও সঞ্জয় বিশ্বাস নামে অন্য একজন যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ । শিয়ালদা অতিরিক্ত জেলা জজ, ফার্স্ট ট্র্যাক কোর্ট ধৃত তিনজনকেই ফাঁসির সাজা শোনায় । সেই রায় চ্যালেঞ্জ করে 2019 সালে অভিযুক্তরা হাইকোর্টে আপিল করেন । খুনের ঘটনার এক দশক পর বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চ, সুরজিৎ দেব, তাঁর বান্ধবী লিপিকা পোদ্দার ও সঞ্জয় বিশ্বাসকে বেকসুর খালাস ঘোষণা করেন আজ । রায়ে তাঁরা জানিয়েছেন, তদন্তকারী পুলিশকর্মীরা তদন্ত সুষ্ঠুভাবে করে উঠতে পারেননি । সাজাপ্রাপ্ত তিনজনের আইনজীবী কল্লোল মণ্ডল এদিন জানান, 2014 সালের 20 এপ্রিল ব্যাগে ভরা একটি মৃতদেহ টুকরো অবস্থায় শিয়ালদা স্টেশনের কাছ থেকে উদ্ধার হয় । একজন ব্যক্তির সাক্ষ্য গ্রহণ করেছিল পুলিশ । কিন্তু ঘটনাক্রমের সঙ্গে ওই ব্যক্তির বক্তব্যের কোনও মিল ছিল না । পুলিশের কাছে পর্যাপ্ত তথ্য প্রমাণের অভাব থাকায় ডিভিশন বেঞ্চ ধৃতদের বেকসুর খালাসের নির্দেশ দিয়েছেন ।