গত ৭ জুন রাজীব সিনহাকে রাজ্যের নির্বাচন কমিশনার হিসাবে নিয়োগ করা হয়। রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের সন্মতিতেই সেই নিয়োগ হয়েছিল। তা সত্ত্বেও সম্প্রতি রাজ্যপাল রাজীব সিনহার জয়েনিং লেটারও ফিরিয়ে দেন। তা নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়েছিল। যদিও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, নবান্নের কাছে এরকম কোনও খবর নেই। এর মাঝেই কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়, রাজীবের নিয়োগ বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে। সেই মামলা এদিন যে হাইকোর্ট শুধু খারিজই করে দিয়েছে তাই নয়, কার্যত কড়া ধমক দিয়েছে মামলাকারীদেরও। সেই সঙ্গে উঠে এসেছে আদালতের কড়া পর্যবেক্ষণও। সব থেকে বড় কথা রাজ্যপাল ও বিরোধীদের ধাক্কা দিয়ে আদালত জানিয়ে দিয়েছে রাজ্যের নির্বাচন কমিশনার পদে রাজীবের নিয়োগ বৈধ। এদিন অর্থাৎ সোমবার রাজীবের নিয়োগ বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দায়ের হওয়া মামলাটি শুনানির জন্য ওঠে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চে। শুনানিতে মামলাকারীদের দাবি ছিল, রাজীবের নিয়োগ অবৈধ। যেহেতু রাজ্যপাল রাজীবের জয়েনিং লেটার ফিরিয়ে দিয়েছেন তাই রাজীবের ওই পদে যোগদান অবৈধ। এই নিয়োগের জন্য মানুষের স্বার্থ খর্ব হয়েছে। অন্যদিকে রাজ্যের তরফে জানানো হয়, আইন অনুযায়ী রাজ্য নির্বাচন কমিশনারকে নিয়োগ করেছে। তাতে রাজ্যপালের সন্মতিও আছে। এই মামলার কোন গ্রহণযোগ্যতাই নেই। এরপরেই সামনে আসে আদালতের ধমক ও কড়া পর্যবেক্ষণ। বিচারপতি মামলাকারীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘নিয়োগ নিয়ে রাজ্যের আইন জানেন? আইন কী বলছে? মামলাকারী কে? প্রচারে আসার জন্যই কি মামলা? পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে অনেক মামলা দায়ের হয়েছে। বলতে বাধ্য হচ্ছি, আপনাদের প্রত্যেকের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে। প্রত্যেকে হেডলাইনে আসতে চান। দয়া করে এর জন্য আদালতকে ব্যবহার করবেন না। দয়া করে আমাদের মাধ্যম হিসাবে ব্যবহার করবেন না।’ এরপরেই রাজীবের নিয়োগ বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে করা মামলা খারিজ করে দেন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি। সেই সঙ্গে তিনি জানিয়ে দেন এই নিয়োগ বৈধ। আর সেটাই কার্যত বড় ধাক্কা হিসাবে নেমে এল রাজ্যপাল ও বিরোধীদের কাছে।


