করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের ভয় যখন বৃদ্ধি পাচ্ছে, তখনই একপ্রকার আশার কথা শোনালেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বিজ্ঞানী সৌম্যা স্বামীনাথন। তিনি মঙ্গলবার জানিয়েছেন, ভারত ক্রমশ সংক্রমণের এমন একটা পর্যায়ে প্রবেশ করছে যাকে এই ভাইরাসের একপ্রকার ‘শেষের শুরু’ বলা যায়। ইংরাজিতে ভাইরাসের এই পর্যায়কে ‘এন্ডেমিক স্টেজ’ হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন তিনি। কী এই ‘এন্ডেমিক স্টেজ’? ভারতীয় বংশোদ্ভূত হু-এর প্রধান বিজ্ঞানী জানাচ্ছেন, যেই সময় একটা গোটা জনজাতি ভাইরাসকে সঙ্গী করেই বাঁচতে শিখে যায়, তখন তাকে ‘এন্ডেমিক স্টেজ’ বলা হয়। ভাইরাসের প্রভাব ক্রমশ বিলিন হতে শুরু হওয়ার আগের পর্যায় হিসেবে এই স্টেজ পরিচিত। অতিমারি বা এপিডেমিক পর্যায়ে সাধারণত ভাইরাস একটা জাতির উপর চেপে বসে। ‘এন্ডেমিক’ পর্যায়ে এসে ভাইরাসকে সঙ্গী করেই বাঁচতে শিখে যায় মানুষ। ভারতও ক্রমশ সেই পথেই অগ্রসর হচ্ছে বলে তিনি বলেন। ঠিক যে সময় করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা বাড়ছে, তখন হু-এর প্রধান বিজ্ঞানীর এই মন্তব্যকে আশাব্যঞ্জক হিসেবেই ধরে নিতে হয়।একই সঙ্গে স্বস্তি দিয়ে আরও একটি বড় বিষয় তিনি জানিয়েছেন। স্বামীনাথন বলেছেন, এই এন্ডেমিক পর্যায়ে এসে বিক্ষিপ্তভাবে দু-এক জায়গায় সংক্রমণ বৃদ্ধি লক্ষ্য করা গেলেও কয়েক মাস আগে (দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়) যে ধরনের বাড়াবাড়ি হয়েছিল, সেটা আর হবে না। তাঁর কথায়, “শেষের দিকে আমরা এমন একটা পর্যায়ে প্রবেশ করতে পারি যেখানে ক্ষেত্র বিশেষে সংক্রমণের কম বা মাঝারি প্রভাব দেখা যাবে। কিন্তু যে ধরনের সংক্রমণ কয়েকমাস আগে দেখা গিয়েছিল, তেমনটা আর হবে না।” তিনি আরও বলেন, বর্তমানে সংক্রমণের যে ধরনের পরিস্থিতি রয়েছে, “খুব সম্ভবত এভাবেই চলতে পারে। তবে কয়েক জায়গায় সংক্রমণ কমতে বা বাড়তে দেখা যাবে। যেসব জায়গায় হয়তো করোনার প্রথম বা দ্বিতীয় ঢেউ সেভাবে ধাক্কা মারেনি, বা টিকাকরণ যথেষ্ট পরিমাণে হয়নি, সেখানে সংক্রমণের বাড়বাড়ন্ত দেখা যেতে পারে।” মোট জনসংখ্যার মোটামুটি ৭০ শতাংশকে টিকাকরণের আওতায় আনা গেলেই করোনা-পূর্ব জীবনযাত্রায় ফিরে যাওয়া সম্ভব বলে তিনি জানিয়েছেন। একই সঙ্গে ২০২২ সালের মধ্যে একবিংশ দশকের এই অতিমারিকেও কাবু করা সম্ভব বলে জানান তিনি।