জেলা

বিকানের-গুয়াহাটি এক্সপ্রেস ট্রেন দুর্ঘটনায় তদন্তে উঠে আসছে গাফিলতির অভিযোগ!

পরীক্ষা না করেই চালানো হয়েছিল ইঞ্জিন

আঙুল উঠল ভারতীয় রেলের দিকেই। দেখা গেল পরীক্ষা না করেই চালানো হয়েছিল ইঞ্জিন।বিকানের-গুয়াহাটি এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় উঠে এল গাফিলতির অভিযোগ । ময়নাগুড়ির দোমহনিতে ট্রেন দুর্ঘটনার পরই শুরু হয় তদন্ত । তার জন্য উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের কাটিহার ডিভিশন ও আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের ৬৫ জন রেলকর্মীকে জেরা করে গাফিলতি কোথা থেকে হয়েছে তা জানার চেষ্টা হচ্ছে। আলিপুরদুয়ার ডিভিশনকে হেডকোয়ার্টার করে তদন্ত চলছে। কমিশনার অব রেলওয়ে সেফটি লতিফ খানের নেতৃত্বে তদন্ত চলছে । এক এক করে ৬৫ জন রেলকর্মীকে জেরা করা হচ্ছে। বিকানের-গুয়াহাটি এক্সপ্রেসের ইঞ্জিনটি কোন শেড থেকে বেরিয়েছিল ? ইঞ্জিনের শেষ ইন্সপেকসন কোথায় হয়েছিল ? কারা ইঞ্জিনটিকে চালানোর ছাড়পত্র দিয়েছিল ? চালক কখন ট্রেনের সমস্যার কথা জানতে পারেন ? পয়েন্ট ম্যান, গেটম্যানদের পর্যবেক্ষণ কী ছিল ? এসব জানার চেষ্টা হচ্ছে । পাশাপাশি ট্রেনের চালক ইঞ্জিনের সমস্যার কথা কেন কোনও স্টেশনে লিপিবদ্ধ করাননি ? দুর্ঘটনার আগের স্টেশন ময়নাগুড়ি দোমোহনি ও জলপাইগুড়ি রোড স্টেশনের স্টেশনমাস্টারের ভূমিকা কী ছিল সেটাও খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে । দুর্ঘটনায় পর এই সব প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে তদন্ত কমিটির মনে । জানা গিয়েছে, ট্রেন চালকের ভূমিকায় বিস্তর গাফিলতি পাচ্ছে রেল । কারণ ইঞ্জিনে সমস্যা হচ্ছে জেনেও তিনি কেন ট্রেন চালিয়ে গেলেন সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে । কারণ ট্রেন চালকের সর্বোচ্চ ক্ষমতা আছে । ইঞ্জিনে সমস্যা থাকলে, যতক্ষণ না ইঞ্জিন ঠিক হচ্ছে তিনি ট্রেন নাও চালাতে পারেন । হাওড়া থেকে কারশেডের ইঞ্জিনিয়ারকে ডাকা যেমন হয়েছে । তেমনই তদন্ত শুরুর পর থেকে ট্রেনের চালককে প্রতিদিন জেরা করা হচ্ছে । কমিশনার অব রেলওয়ে সেফটি লতিফ খানের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি তদন্ত করছেন । খুব তাড়াতাড়ি রেল দফতরের পক্ষ থেকে তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করা হবে বলে। উল্লেখ্য, প্রতি মাসে ইঞ্জিনের পরীক্ষা করা হয়। তার পরেই চালানো হয়। এক্ষেত্রে তা হয়নি। তার জেরেই প্রাণ গেল এত জনের। ১৩ জানুয়ারি ময়নাগুরি লাইনচ্যুত হয় বিকানের–গুয়াহাটি এক্সপ্রেস। সেই নিয়ে রিপোর্ট দিয়েছে আলিপুরদুয়ার ডিভিশন। সেই রিপোর্টেই রয়েছে এই ইঞ্জিন পরীক্ষা না হওয়ার কথা। দুর্ঘটনার তদন্ত করছে কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি। তারা এই নিয়ে ইতিমধ্যে প্রশ্ন তুলেছে। ভারতীয় রেল কীভাবে রক্ষণাবেক্ষণ, পরিচালনা করা হবে, তার জন্য একটি বই রয়েছে। সেই বইয়ের তিন নম্বর অধ্যায়ে লোকোমটিভ রক্ষণাবেক্ষণের কথা বলা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, প্রতি মাসে পরীক্ষা করাতে হবে ইঞ্জিনের। যাকে বলে আইএ। আর প্রতি চার মাস অন্তর বিশেষ পরীক্ষা করাতে হবে। একে বলে আইসি। এই রুল বুক মেনে প্রতি মাসের পরীক্ষাটি করানো হয়নি ইঞ্জিনের। সেটি বাদ গিয়েছে। শেষবার আইসি করানো হয়েছে ২০২১ সালের ১১ নভেম্বর। আর আইএ করানোর কথা ছিল ৯ জানুয়ারি। তা হয়নি।