নতুন করে অস্বস্তি বাড়ল রাজ্যপালের। শ্লীলতাহানির অভিযোগের পর আরও অস্বস্তিতে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এবার তাঁর বিরুদ্ধে ধর্ষেণের অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে। দিল্লির এক নামী ওড়িশি নৃত্যশিল্পী তাঁর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। সেই অভিযোগের রিপোর্ট এবার কলকাতা পুলিশ নবান্নে পাঠাল। লালবাজার সূত্রে খবর, যিনি অভিযোগ করেছেন, তিনি এক নামী ওড়িশি নৃত্যশিল্পী। স্বামী বিদেশে থাকেন। তাঁর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা চলছে। ওই মহিলার দাবি, বিদেশমন্ত্রকের এক অফিসারের সঙ্গে আলাপ করিয়ে দেওয়ার জন্য় তাঁকে দিল্লিতে নিয়ে যান রাজ্যপাল। গত বছর ৫ ও ৬ জুন একটি অনুষ্ঠানে ওই ওড়িশি নৃত্যশিল্পীকে দিল্লি নিয়ে যান রাজ্যপাল । হোটেলের রুম বুক করে দিয়েছিলেন রাজ্যপালের ভাইপো। তিনি বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা। এদিকে দিল্লিতে গিয়ে রাজ্যপাল নিজে অবশ্য ওঠেছিলেন বঙ্গভবনে। এরপর কোনও নিরাপত্তারক্ষী ছাড়াই হোটেলে ওই মহিলার সঙ্গে দেখা করেন যান তিনি। তখনই নাকি ওই নৃত্যশিল্পীকে ধর্ষণে করা হয় বলে অভিযোগ । এরপর অক্টোবরে রিপোর্ট জমা পড়ে নবান্নে। নবান্নের নির্দেশে অনুসন্ধানে নামে কলকাতা পুলিশ। নৃত্যশিল্পীর আবেদনের ভিত্তিতেই নবান্নের তরফে কলকাতা পুলিশকে এ বিষয়ে প্রাথমিক তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই তদন্ত শেষের পরই মঙ্গলবার নবান্নে রিপোর্ট জমা দিল লালবাজার। গত ২ মে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের করেন রাজভবনের এককর্মী। তিনি অভিযোগ করেছেন রাজ্যপাল তাঁকে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে পর পর ২ বার তাঁর শ্লীলতাহানি করা হয়েছে। এই খবর প্রকাশ্যে আসার পরেই তোলপাড় শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলে। ঘটনাচক্রে এই অভিযোগ যেদিন প্রকাশ্যে আসে সেদিন রাজভবনে রাত্রি বাস করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। রাজ্যপাল নিজে অবশ্য দাবি করেছেন তিনি নির্দোষ। রাজ্যপাল দাবি করেছিলেন সত্যের জয় হবেই। কেউ তাকে কালিমালিপ্ত করে নির্বাচনে ফায়দা তুলতে চাইছে। রাজ্যপালের ইঙ্গিত শাসক দলের দিকে ছিল। রাজ্যপাল দাবি করেছেন পরিকল্পনা করে তাঁর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করা হচ্ছে। রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগে জানিয়েছেন হেয়ারস্ট্রিট থানায়। কিন্তু সাংবিধানিক রক্ষাকবচ থাকায় রাজ্যপালের বিরুদ্ধে কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে পারেনি পুলিশ। সংবিধানের ৩৬১ ধারা অনুযায়ী রাজ্যপাল এবং রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে কোনও এফআইআর দায়ের করা যায় না এমনকী দেশের কোনও আদালতে কোনও মামলাও করা যায় না। সেকারণে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে পারেনি পুলিশ। প্রসঙ্গত, নৃত্যশিল্পীর এই অভিযোগ নিয়ে পুলিশ তদন্ত করে নবান্নকে রিপোর্ট জমা দেয় বলে সূত্রের খবর । নবান্নকে যে এই রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে, সে সম্পর্কেও কলকাতা পুলিশের তরফ থেকে নিশ্চয়তা পাওয়া গিয়েছে । সূত্র মারফত যা জানা গিয়েছে, ওই নৃত্যশিল্পীর অভিযোগের ভিত্তিতেই ঘটনার অনুসন্ধান চালায় ডিসি পদমর্যদার এক অফিসারের নেতৃত্বে কলকাতা পুলিশের একটি টিম । সেই মামলার অনুসন্ধান রিপোর্টই ইতিমধ্যে জমা পড়েছে নবান্নে । যদিও বিষয়টি নিয়ে পুলিশ বা নবান্ন এখনও মুখ খোলেনি।