এবারের তৃণমূলের সমাবেশ সম্পর্কে কলকাতা হাইকোর্টের তরফ থেকে রয়েছে স্পষ্ট নির্দেশিকা ৷ বেঁধে দেওয়া হয়েছে একাধিক নির্দিষ্ট বিধি নিষেধ। ফলে কয়েক বছরের তুলনায় এবারে একুশে জুলাইয়ের যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ কলকাতা পুলিশের কাছে যথেষ্টই চ্যালেঞ্জের হতে চলেছে। এই বিষয়ে কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ কুমার বর্মা বলেন, “রাস্তায় কেউ সমস্যায় পড়লে যে কোনও সাহায্যের জন্য কলকাতা পুলিশকে ফোন করতে পারবেন।” এ জন্য তিনটি ফোন নম্বরও দিয়েছেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা। টোল ফ্রি হেল্পলাইন নম্বর হল 1073। এছাড়া আরও দু’টি মোবাইল নম্বর- 9830811111 এবং 9830010000। কলকাতা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে সোমবার (21 জুলাই) ধর্মতলামুখী সাতটি মিছিল আসবে শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ৷ শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়, হেদুয়া পার্ক, হাজরা পার্ক, পার্ক সার্কাস সেভেন পয়েন্ট, হাওড়া স্টেশন, শিয়ালদা স্টেশন এবং কলকাতা স্টেশন থেকে মিছিলগুলি আসবে ৷ এছাড়া শহরের প্রায় 22টি জায়গায় জমায়েত হবে বলে লালবাজার জানিয়েছে ৷ একুশে জুলাই ধর্মতলায় তৃণমূলের শহিদ দিবসে সকাল 8টার মধ্যে কর্মী-সমর্থকদের হাজির হতে হবে ৷ শুক্রবার এই সংক্রান্ত মামলায় এমনই নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট ৷ পাশাপাশি বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের নির্দেশ, জমায়েতের জন্য আরও এক ঘণ্টা অর্থাৎ সকাল ন’টা পর্যন্ত সময় ধার্য করা হয়েছে ৷ তারপর থেকে যেন কোনও যানজটের সমস্যা না হয় ৷ আদালতের নির্দেশ, শনিবার সকাল 9টা থেকে 11টা পর্যন্ত কলকাতা হাইকোর্ট ও অন্য অফিসের সামনের রাস্তা আটকে কোনও মিছিল বা জমায়েত করা যাবে না ৷ 11টার পর থেকে কলকাতার যান চলাচল যাতে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক থাকে, সেটা দেখার দায়িত্ব কলকাতার পুলিশ কমিশনারের ৷ এছাড়াও পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া শহর ও গ্রামীণ গাড়ি পার্কিং করা হবে বঙ্গবাসী কলেজ মাঠ, গঙ্গাসাগর মেলা মাঠ, পলাশি গেট রোড, কেপি রোড-সহ একাধিক জায়গায়। বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূম, বর্ধমান এবং হুগলি থেকে আসা গাড়ি রাখা হবে এজেসি বোস রোড দিয়ে মৌলালি থেকে মল্লিক বাজারের দিকে, সিআইটি রোড, সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ দিয়ে বিবি গাঙ্গুলি ক্রসিং পর্যন্ত। উত্তর কলকাতা ও ব্যারাকপুরের দিক থেকে আসা গাড়ি রাখা হবে শহিদ মিনার মাঠ-সহ এজেসি বোস রোড দিয়ে মৌলালি থেকে মল্লিক বাজারের দিকে। উত্তর 24 পরগনা, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ ও বিধাননগর থেকে আসা গাড়ি রাখা হবে এজেসি বোস রোড, মৌলালি থেকে মল্লিক বাজারের দিকে । দক্ষিণ কলকাতার গাড়ি রাখা হবে ময়দানে YMCA মাঠ, আউটট্রাম রোড, মেয়ো রোড, জওহরলাল নেহরু রোড এবং ডাফরিন রোডে। এছাড়াও একুশে জুলাইয়ের জন্য কলকাতা পুলিশ একাধিক পদক্ষেপের কথাও জানিয়েছে ৷ সাধারণ মানুষের জন্য শহরের বিভিন্ন প্রান্তে প্রায় 18টি অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত করে রাখা হবে ৷ মিছিলে আসা সমর্থকদের নিয়ন্ত্রণ করতে বেশ কিছু জায়গায় বাঁশের গেট ও টিনের ব্যারিকেড ব্যবহার করা হবে। সঙ্গে থাকবে ভিউ কাটার। বেশ কিছু জায়গায় জায়ান্ট স্ক্রিন রাখা হতে পারে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। তৃণমূল কংগ্রেসের সভামঞ্চের কাছে তিনটি কুইক রেসপন্স টিমও রাখা হচ্ছে । প্রতিটি মিছিলের শুরুতে ও শেষে থাকবে পুলিশ ও বড় বড় মিছিলে একজন করে অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার পদমর্যাদার পুলিশ অফিসার থাকবেন ৷ মূলত মিছিল ট্রাফিক আইন মেনে হচ্ছে কি না, তার পরিচালনার দায়িত্বেই তাঁরা থাকবেন। এছাড়াও সভাস্থলের আশপাশে প্রায় 14টি জোন করা হয়েছে। যেখানে আইপিএস পদমর্যাদার একাধিক পুলিশ আধিকারিকরা দায়িত্বে থাকছেন। এছাড়াও শহরের বিভিন্ন মেট্রো স্টেশনে একজন করে সাব-ইনস্পেক্টর পদমর্যাদার অফিসার মোতায়েন রাখা হচ্ছে । 21 জুলাইয়ের দিন শহরের ধর্মতলা চত্বর ছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় প্রচুর পুলিশ মোতায়েন রাখা হচ্ছে । প্রতিটি জায়গাতেই আইপিএস পদমর্যাদার অফিসাররা থাকবেন ৷


