কলকাতা

পেনশন! লক্ষীর ভাণ্ডার প্রাপকদের ৬০ বছর পার হলেই মিলবে ১০০০ টাকা করে বার্ধক্য ভাতা

বুধবার রাজ্য বিধানসভায় পেশ হয়েছে ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষের রাজ্য বাজেট। সেখানেই রাজ্যের অর্থমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন রাজ্যের প্রায় ২ কোটি মহিলা এখন ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ প্রকল্পের আওতায় চলে এসেছেন। খাতায়কলমে সংখ্যাটা ১.৮৮ কোটি। চন্দ্রিমা এর পাশাপাশি এদিন সব থেকে বড় যে ঘোষণাটা করেছেন যে এই ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ প্রকল্পের আওতায় যে সব মহিলারা চলে এসেছেন বা আগামী দিনে আসবেন তাঁরা প্রত্যেকেই ৬০ বছর বয়স ছুঁয়ে ফেললেই প্রতি মাসে ১ হাজার টাকা করে পাবেন বার্ধক্য ভাতা হিসাবে। এর জন্য তাঁদের আর আলাদা করে কোনও আবেদন করতে হবে না। লক্ষ্মীর ভান্ডারের প্রাপকরা ৬০ বছর ছুঁয়ে ফেললেই সরাসরি বার্ধক্যভাতার আওতায় চলে আসবেন। একই সঙ্গে অর্থমন্ত্রী হিসাবে চন্দ্রিমা এটাও জানিয়েছে যে, ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ প্রকল্পের টাকা দেয় যে দফতর সেই নারী, শিশু ও সমাজকল্যাণ দফতরের জন্য আগামী অর্থবর্ষে ২২ হাজার ২২৫.৬৭কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এখন ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ প্রকল্পের আওতায় যে সব মহিলারা আছেন তাঁরা দুটি শ্রেনীতে টাকা পান। যারা General Cast’র তাঁরা প্রতি মাসে পান ৫০০ টাকা করে। কিন্তু যারা তপশিলী জাতি, তপশিলী উপজাতি ও অনগ্রসর শ্রেনীর মহিলা তাঁরা প্রতি মাসে ১ হাজার টাকা করে পান। জাতিগত এই বৈষম্যের জন্য রাজ্যের নানা প্রান্তেই এই নিয়ে অভিমান-অভিযোগ শোনা যায়। বিজেপির তরফে সুকৌশলে সেই অভিযোগ-অভিমানকে ভোটের ময়দানে ব্যবহার করার কৌশল নেওয়া হচ্ছিল। সামনেই রয়েছে রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচন। সেই সময় বিরোধীরা ‘লক্ষীর ভাণ্ডার’ প্রকল্পের অর্থবন্টনের ক্ষেত্রে যাতে জাতিগত বৈষম্যের তাস খেলতে না পারে তার জন্য এবারের রাজ্য বাজেটে কার্যত মাস্টারস্ট্রোক হিসাবে বার্ধক্য ভাতার ঘোষণা করে দেওয়া হল। কেননা ঘোষণা অনুযায়ী এখন যারা লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা মাসে মাসে পান তাঁরা ৫০০ বা ১০০০ পেলেও ৬০ বছর বয়স হলে প্রতি মাসে ১০০০ টাকা করে বার্ধক্য ভাতা হিসাবে পাবেন। সেখানে কিন্তু আর কোনও জাতিগত বৈষমাই থাকছে না। এখন যিনি ৫০০ টাকা পান তিনি ৬০ বছর ছুঁয়ে ফেললেই ১০০০ টাকা পাবেন। আর যিনি এখন ১০০০ টাকা পান তিনিও ৬০ বছর বয়স হলে সেই ১ হাজার টাকা করেই পাবেন। তবে এখন লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের টাকা পান ২৫ থেকে ৬০ বছর বয়সি মহিলারা। তাই ৬০ বছর পূর্ণ করে ৬১ বছরে পা না দিলে কিন্তু বার্ধক্য ভাতা পাবেন না। একই সঙ্গে বার্ধক্য ভাতার ক্ষেত্রে এতদিন কেন্দ্র সরকার ৬০ শতাংশ ও রাজ্য সরকার ৪০ শতাংশ অর্থ দিত। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার বার্ধক্য ভাতা প্রকল্প হিসাবে আগেই যে ‘জয় বাংলা’ প্রকল্প চালু করেছে তাতে কেন্দ্রের কোনও বিনিয়োগ নেই। সেক্ষেত্রে এই প্রকল্পে তাঁদের কোনও খবরদারির জায়গাও নেই। সেই কারণেই এখন যারা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার পান তাঁরা ৬০ বছর অতিক্রম করলেই সরাসরি ‘জয় বাংলা’(Joy Bangla) প্রকল্পের আওতায় চলে আসবেন ও মাসে মাসে ১ হাজার টাকা করে পাবেন। এই নিয়েচ কেন্দ্র সরকার কোনও প্রশ্নই তুলতে পারবেন না। অর্থাৎ মমতার সরকার ২০২৩ এর বুকে দাঁড়িয়েই বাংলার প্রায় ২ কোটি মহিলার বার্ধক্যজনিত আয় নিশ্চিত করে দিলেন। সব থেকে বড় কথা এই আয়ের জন্য কোনও মহিলাকে কিন্তু কোনও বিনিয়োগ করতে হচ্ছে না। সবটাই রাজ্য সরকারই দিচ্ছে। কেন্দ্র সরকারের যে পেনশন প্রকল্প আছে সেখানে কিন্তু ১ হাজার টাকা পেতে হলেও বিনিয়োগ করতে হয়।