কলকাতা

দিলীপ ঘোষের সঙ্গে একই রাজনৈতিক মঞ্চে বিচারপতি কৌশিক চন্দ! নন্দীগ্রাম ভোট পুনর্গনণা মামলা অন্য বেঞ্চে পাঠানোর দাবিতে বিক্ষোভ আইনজীবীদের

নন্দীগ্রাম বিধানসভা আসনে ভোটের ফলাফলকে চ্যালেঞ্জ করে বৃহস্পতিবারই হাই কোর্টে মামলা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার সেই মামলা ওঠে বিচারপতি কৌশিক চন্দের সিঙ্গল বেঞ্চে। সেই বেঞ্চ নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক।  কলকাতা হাই কোর্টের আইনজীবীদের দাবি, বিচারপতি চন্দ বিজেপি-র ‘সক্রিয় সদস্য’ ছিলেন। তাই তাঁর এজলাসে মামলা ওঠা নিয়ে শুক্রবার হাই কোর্ট চত্বরে বিক্ষোভ দেখালেন আইনজীবীদের একাংশ। মুখে কালো মাস্ক এবং হাতে পোস্টার নিয়ে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ দেখান আইনজীবীরা। পোস্টারে লেখা ছিল, ‘বিচারব্যবস্থার সঙ্গে রাজনীতি করবেন না’। বিক্ষোভকারী আইনজীবীদের পক্ষে অচিন্ত্যকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কৌশিক চন্দ একসময় বিজেপি-র সক্রিয় সদস্য ছিলেন। এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক মামলা তাঁর বেঞ্চে গেলে বিচারব্যবস্থা নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন উঠবে। আমাদের দাবি, অন্য বেঞ্চে মামলা পাঠানো হোক।’ অন্যদিকে, দিলীপ ঘোষের রাজনৈতিক মঞ্চের বৈঠকে তিনি যোগ দিয়েছেন, এই অভিযোগ তুলে দুটি ছবিও পোস্ট করেন রাজ্যসভায় তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন। এদিন বিজেপির একটি সভার দুটি ছবি পোস্ট করে ডেরেক প্রশ্ন তোলেন, ‘ছবিতে যাঁকে গোল করে চিহ্নিত করা হয়েছে, ইনি কে? ইনি কি কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি কৌশিক চন্দ?’ এরপর এই বিচারপতির এজলাসে কেন নন্দীগ্রাম মামলা দেওয়া হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ডেরেক সহ তৃণমূলের একাংশ। সেই ছবিগুলির একটিতে দিলীপ ঘোষের পাশে বসে থাকা একজনকে গোল করে চিহ্নিত করা। অপর ছবিটিতে, দিলীপ ঘোষ ভষণ দিচ্ছেন, সেখানে একজন বসে থাকা ব্যক্তিকে চিহ্নিত করা। অন্যদিকে, মামলা পিছিয়ে যাওয়ার পরই একটি ছবি তুলে ধরে বিস্ফোরক বয়ান দিলেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ । কুণালবাবু নিজের টুইটার অ্যাকাউন্টে ছবিটি পোস্ট করে লিখেছেন, ‘বিচারপতি কৌশিক চন্দ বিজেপিদরদী। নন্দীগ্রাম মামলা তাঁর হাতে নিরপেক্ষ থাকবে কি? অনুরোধ, বিচারপতি চন্দ মামলাটি ছেড়ে দিন।”

প্রসঙ্গত, মমতা ব্যানার্জির ইমামভাতা ঘোষণা করার পর যে মামলা হয়েছিল সেখানে বিজেপির তরফে প্রধান আইনজীবী ছিলেন এস কে কাপুর, জুনিয়র ছিলেন কৌশিক চন্দ। অন্যদিকে, অমিত শাহের একটি সভায় ধর্মতলার ভিক্টোরিয়া অনুমতি না দেওয়ায় হাইকোর্টে মামলা দায়ের করা হয়। সেই মামলাতে আইনজীবী হিসেবে লড়েছিলেন কৌশিক চন্দ। দু’টি মামলাতেই জয় পেয়েছিল বিজেপি। ২০১৪ সালে মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর কেন্দ্রীয় সরকারের আইনজীবীদের প্যানেলে তাঁর নাম উঠেছিল বলে খবর।