জেলা

আলিপুরদুয়ারে জনসংযোগে মুখ্যমন্ত্রী, হাঁটলেন প্রায় ২ ঘণ্টা

মুখ্যমন্ত্রী দেখেই কাতারে কাতারে মানুষ রাস্তায় নামলেন। হাঁটতে শুরু করলেন দেশের জনপ্রিয়তম মুখ্যমন্ত্রীর পেছন পেছন। আলিপুরদুয়ার শহরের ভেতরে প্রায় দু’‌কিমি পথ হাঁটলেন মুখ্যমন্ত্রী। কখনও শহরের রাজপথ ধরে, কখনও অলিতে–গলিতে। হাঁটলেন প্রায় দু’‌ঘণ্টা। তাঁর সঙ্গে হাঁটলেন বহু মানুষ। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে এভাবে শহরের রাস্তায় হাঁটতে এর আগে দেখেনি আলিপুরদুয়ার। শনিবার দুপুরে আলিপুরদুয়ারে এসে এভাবেই শহরের মন জয় করে নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথম দিনেই শুরু করে দিলেন তাঁর নিজস্ব ভঙ্গিতে জনসংযোগ। তাঁর এই দু’‌ঘণ্টার জনসংযোগের সাক্ষী থাকলেন হাজার হাজার মানুষ। রবিবার আলিপুরদুয়ার প্যারেড গ্রাউন্ডে সরকারি সভায় অংশ নেবেন মুখ্যমন্ত্রী। শনিবার দুপুর ৩টে নাগাদ তাঁর হেলিকপ্টার প্যারেড গ্রাউন্ডের মাটি ছোঁয়। প্যারেড গ্রাউন্ডের ঢিলছোড়া দূরত্বে সার্কিট হাউস। সোজা সেখানে চলে যান মুখ্যমন্ত্রী। ঘণ্টাখানেক সার্কিট হাউসে থেকে আচমকাই সেখান থেকে বেরিয়ে পড়েন। হেঁটে চলে আসেন কলেজ হল্টে। উঠে পড়েন বক্সা ফরেস্ট রোডে। থমকে যায় যান–চলাচল। চমকে যান রাস্তার দু’‌পাশের ব্যবসায়ীরা। এর মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর পেছনে জড়ো হয়ে গেছেন অসংখ্য মানুষ। ছিলেন জেলাশাসক আর বিমলা, পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবংশী–সহ প্রশাসনের শীর্ষকর্তারা। রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতেই বাচ্চাদের দেখে একাধিকবার দাঁড়িয়ে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন। কারও বা গাল টিপে আদর করেন। মেয়েদের কাছ থেকে কন্যাশ্রী সম্পর্কে খোঁজ নেন। বক্সা ফরেস্ট রোডের ওপর মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তি স্থাপন করেছে আলিপুরদুয়ার পুরসভা। মূর্তিটি দেখে পছন্দ হয় মুখ্যমন্ত্রীর। প্রশংসা করেন নির্মাণশৈলীর। বক্সা ফরেস্ট রোড ধরে হাঁটতে হাঁটতে ঢুকে পড়েন এসপি অফিস, ডুয়ার্সকন্যার রাস্তায়। জেলা প্রশাসনিক ভবন ডুয়ার্সকন্যার নামকরণ মুখ্যমন্ত্রীই করেছিলেন। সেই ভবনের সামনে এসে দাঁড়িয়ে পড়েন তিনি। ভবনের রং চটে গেছে। জেলাশাসককে নির্দেশ দেন, সুন্দর করে ভবনের রং করাতে হবে। এরই মাঝে রাস্তায় অসুস্থ এক ব্যক্তিকে দেখে থমকে যান। তাঁর শরীর–স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নিয়ে জেলাশাসককে বলেন স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের মাধ্যমে তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা করার কথা। এরপরই ডুয়ার্সকন্যা পার করে আলিপুরদুয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে হাঁটতে শুরু করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে রাস্তার অবস্থা খারাপ। দ্রুত রাস্তা সংস্কারের নির্দেশ দেন জেলাশাসককে।এদিকে, আলিপুরদুয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্যের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। মুখ্যমন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে যেতেই ছাত্রছাত্রীদের অনেকে ছুটে আসেন। তাঁরা নিজেদের বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা জানান মুখ্যমন্ত্রীকে। নির্মীয়মাণ জেলা আদালত ভবন সম্পর্কেও খোঁজখবর নিয়েছেন তিনি। একদম শেষে প্যারেড গ্রাউন্ডের পাশের রাস্তা ধরে সার্কিট হাউসে ফিরে আসেন মুখ্যমন্ত্রী।