কলকাতা

বিধানসভায় দাঁড়িয়ে হাওড়ার মঙ্গলাহাট নিয়ে বড় আশ্বাস মুখ্যমন্ত্রীর

বিধানসভায় দাঁড়িয়ে হাওড়ার মঙ্গলাহাট নিয়ে বড় আশ্বাস দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানালেন মঙ্গলাহাটের যে জমিতে কিছুদিন আগে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে সেই জমি অধিগ্রহণ করে সেখানে উন্নতমানের বাজার গড়ে সেখানেই ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসন দেওয়া হবে। গত ২০ জুলাই গভীর রাতে হাওড়ার মঙ্গলাহাটে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। সেই আগুনে এক হাজারেরও বেশি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে যায়। তার জেরে ক্ষতির পাশাপাশি পুজোর মুখে চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েন হাটের ছোট বড় ব্যবসায়ীরা। ঘটনাচক্রে এদিন থেকেই সেখানে ফের ব্যবসা শুরুর কথা ছিল। কিন্তু পুড়ে যাওয়া সব সামগ্রী এখন সরিয়ে ফেলা বাকি থাকায় ঠিক করা হয়েছে আগামিকাল থেকে ব্যবসায়ীরা সেখানে আবার জিনিসপত্র নিয়ে বসবেন। তার মাঝেই এদিন মঙ্গলাহাট নিয়ে বড় আশ্বাস দিয়ে দিলেন। মঙ্গলাহাটের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পরে গত একুশে জুলাই বিকালে মুখ্যমন্ত্রী ক্ষতিগ্রস্ত হাট পরিদর্শন করেন। সেখানে তিনি পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দেন। জেলাশাসকের নেতৃত্বে সেই কমিটি কাজ করেছে। আগে ঠিক হয়েছিল, হাটের যে অংশ পুড়ে গিয়েছে, সেখান থেকে যাবতীয় জঞ্জাল সরিয়ে দেওয়া হবে যাতে সোমবার থেকে ছোট ছোট ব্যবসায়ীরা ফের বিক্রিবাটা শুরু করতে পারেন। কিন্তু আজ, সোমবার সকালে ব্যবসায়ীরা এসে দেখেন জঞ্জালের স্তূপ এখনও সরানো হয়নি। সেই কারণে ব্যবসায়ীদের একাংশ ক্ষুব্ধ হন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয় শনিবার মহরম এবং রবিবার ছুটি থাকায় ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ পুরোপুরি শেষ করা যায়নি। তবে এখন দ্রুত গতিতে সেই কাজ করা হচ্ছে যাতে আবার সেখানে ব্যবসার কাজ শুরু হয়। হাটের ব্যবসায়ীদের একাংশ দাবি, হাটের যে অংশ পুড়ে যায়নি সেখানে তাঁদের ব্যবসা করার অনুমতি দিতে হবে। কিন্তু পুলিশের পক্ষ থেকে সেই অনুমতি দেওয়া হয়নি। এই নিয়ে এদিন পুলিশের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের বচসা হয়। তবে ব্যবসায়ী সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে তাঁরা প্রশাসনের পাশে রয়েছেন। তাঁরা প্রশাসনের সঙ্গে সহযোগিতা করেই জঞ্জাল দ্রুত সরাতে চান যাতে আগামীকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার থেকে হাট চালু করা যায়। এই নিয়ে ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে পুলিশের বৈঠকের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তারই মধ্যে এদিন মুখ্যমন্ত্রী মঙ্গলাহাট নিয়ে রাজ্য বিধানসভায় বড় ঘোষণা করে দিলেন। এদিন মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় জানিয়েছেন, নানা মহল থেকে প্রচার করা হচ্ছে হাওড়া শহরের শিবপুরে মন্দিরতলার কাছে যে বহুতল এখন নবান্ন নামে পরিচিতি সেখানে মঙ্গলাহাটের ব্যবসায়ীদের সরানো যায়নি রাজ্য সরকারের সচিবালয় সেখানে সরে যাওয়ার কারণে। কিন্তু এই তথ্য ভুল। ব্যবসায়ীরাই সেখানে যেতে না চাওয়ায় তা ফাঁকা পড়ে ছিল। পরে সেখানে রাজ্যের সচিবালয় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। মগলাহাটে যে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে সেই জমিটি বেসরকারি। রাজ্য সরকার সেই জমি অধিগ্রহণ করে সেখানে পাকা ও বহুতল বাজার গড়ে দেবে, সেখানেই মঙ্গলাহাটের সব ব্যবসায়ীকে পুনর্বাসন দেওয়া হবে। তাঁর বক্তব্য, ‘আমরা নবান্ন জোর করে দখল করিনি। মঙ্গলহাটের ব্যবসায়ীরা নবান্নে যেতে চায়নি। ওই বিল্ডিং এমনি পড়ে ছিল, তাই আমরা গিয়েছি। মঙ্গলাহাটের জমি বেসরকারি হাতে রয়েছে, মামলা চলছে, প্রয়োজন হলে জমি অধিগ্রহণ করব, জমি অধিগ্রহণ করে বিল্ডিং করব।’