মৃত রোগীর মৃত্যুর শংসাপত্র লেখা ও ময়নাতদন্তের সিদ্ধান্তের জেরে রবিবার মাঝরাতে রোগীর পরিবার ও জুনিয়র ডাক্তারদের মধ্যে বচসাকে ঘিরে উত্তাল হয়ে ওঠে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতাল। সেই ঘটনায় প্রহৃত হন ৪জন জুনিয়র চিকিৎসক। কার্যত অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছিল ওই হাসপাতাল চত্বর। পুলিশকেও সেই সময় কার্যত নিষ্ক্রিয় ভূমিকায় থাকতে দেখেন হাসপাতালে আসা রোগীর পরিজনেরা। পরে অবশ্য ভবানীপুর থানা থেকে পুলিশ এসে পরিস্থিতির সামাল দেয়। ৫জনকে গ্রেফতারও করে। সেই ঘটনা নিয়েই এবার কড়া বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার বেলার দিকে ৪ দিনের সফরে মুখ্যমন্ত্রী দিল্লির পথে রওয়ানা হওয়ার আগে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন বিমানবন্দর চত্বরে। সেখানেই এসএসকেএমের ঘটনাকে দুর্ভাগ্যজনক ও অনভিপ্রেত বলে জানান তিনি। যারা রাতের বেলা হাসপাতালে চিকিৎসকদের মারধর করেছেন ও সরকারি যান্ত্রপাতি ভাঙচুর করেছেন তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও জানান তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘অল্প বয়সি যুবকের মৃত্যু হলে সকলের খারাপ লাগে। তবে এসএসকেএম ট্রমা সেন্টারে নাইট ডিউটিতে থাকা দু’জন জুনিয়ার চিকিৎসকদের মারধর করা দুর্ভাগ্যজনক। রাতে কোনও সিনিয়র চিকিৎসক ছিলেন না। রাতে সিনিয়র ডাক্তারদের থাকা উচিত। জুনিয়র ডাক্তারদের নিরাপত্তা দেয় রাজ্য। পুলিশকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। এখনও পর্যন্ত ৫ জন গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের সকলের বিরুদ্ধেই কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আমি তো হাসপাতালে পুলিশ ক্যাম্প করে দিয়েছি। তারপরেও পুলিশ কেন কিছু করল না সেটাও খতিয়ে দেখা হবে।’ জানা গেছে, রবিবার মধ্যরাতে এসএসকেএম হাসপাতালে গুরুতর জখম অবস্থায় নিয়ে আসা হয়েছিল হুগলি জেলার চুঁচুড়ার বাসিন্দা মহম্মদ ইরফান নামে এক যুবককে। তাঁকে প্রথমে এসএসকেএমের ট্রমা কেয়ার সেন্টারে নিয়ে আসা হয়। তার কিছুক্ষণ পরেই চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। কিন্তু ইরফানের মৃত্যুর কারণ নিয়ে সন্দেহ জেগেছিল চিকিৎসকদের মনে। কী কারণে ইরফান জখম হয়েছিল তা নিয়েই তাঁদের খটকা ছিল। ইরফানের বাড়ির লোকদের দাবি, দুর্ঘটনায় জখম হয়েছে সে। কিন্তু চিকিৎসকদের সন্দেহ ছিল ওই যুবককে ধারালো কোনও অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়েছে যার জেরে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। সেই কারণে তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন ইরফানের দেহের ময়ানাতদন্ত হবে। তারপরেই ডেথ সার্টিফিকেট ইস্যু হবে। কিন্তু ময়নাতদন্তের খবর শুনেই ইরফানের বাড়ির লোকেরা তার তীব্র বিরোধিতা করে। তাতেই দুই পক্ষের মধ্যে বচসা বাঁধে। সেই সময় ৪-৫জন জুনিয়র চিকিৎসক ও হাসপাতালকর্মীদের মারধর করে ইরফানের বাড়ির লোকেরা। শুধু তাই নয়, ভাঙচুর করা হয় হাসপাতালের ট্রমা কেয়ার সেন্টারে থাকা লক্ষাধিক টাকার যন্ত্রপাতি ও টেবিল চেয়ার। এসএসকেএম হাসপাতালে থাকা পুলিশকর্মীরা সেই সময় কার্যত হাত গুটিয়ে রেখেছিলেন বলেই পরে অভিযোগ তোলেন প্রহৃত চিকিৎসক থেকে হাসপাতালে আসা রোগীর পরিজনেরা। পরে অবশ্য ঘটনার খবর পেয়ে হাসপাতালে আসেন ভবানীপুর থানার পুলিশকর্মীরা। এদিন দিল্লির পথে রওয়ানা হঅয়ার আগে এই বিষয়ে