জেলা

‘দেশটাকেই তো জেল বানিয়ে ফেলেছেন, আপনার ধমকে ভয় পাই না!’ মোদিকে পালটা তুলোধনা মমতার

বাঁকুড়ার রায়পুরে নির্বাচনী জনসভা করতে গিয়ে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ গতকাল জলপাইগুড়িতে সভা করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, ৪ জুনের পর দুর্নীতির বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় সরকারের তৎপরতা আরও বাড়বে, গ্রেফতারও বাড়বে ৷ এ দিন বাঁকুড়ার সভা থেকে প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্যেরই তীব্র সমালোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর এই হুঁশিয়ারিকে তৃণমূল ভয় পায় না বলেও জানিয়ে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে মমতা বলেন, ‘আপনি বাংলার ব্লকে ব্লকে মিটিং করুন, আপনাকে স্বাগত৷ কিন্তু মিটিং করে জলপাইগুড়ির মানুষকে কোনও সাহায্যের কথা বললেন না৷ যাঁরা রাস্তায় পড়ে আছে৷ আমি মাঝরাতে ছুটে গিয়েছিলাম৷’ এর পরেই নরেন্দ্র মোদির দুর্নীতিপরায়ণদের বিরুদ্ধে মোদির হুঁশিয়ারির জবাবে মমতা বলেন, ‘আপনাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সম্মান করে বলছি৷ ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন, দীর্ঘজীবী হোন৷ কিন্তু একজন প্রধানমন্ত্রীর মুখে কি এ কথা মানায়? বলছেন ৪ জুন ভোট হয়ে গেলে বেছে বেছে গ্রেফতার করবেন, জেলে পাঠাবেন৷ আরে এজেন্সি দিয়ে গোটা দেশটাকেই তো জেল বানিয়ে ফেলেছেন৷ গণতন্ত্রকে জেলে পাঠিয়ে দিয়েছেন৷ আপনার এক পকেটে এনআইএ, এক পকেটে সিবিআই৷ এক পকেটে ইডি, অন্য পকেটে ইনকাম ট্যাক্স৷ ইডি, ইনকাম ট্যাক্স তো বিজেপির ফান্ড কালেকশন বক্স৷ আপনি কাকে ধমক দিচ্ছেন? আমরা আপনার ধমকে ভয় পাই না৷ আমাদের পাঁচ জন ছেলেকে গ্রেফতার করবেন তো কি হয়েছে, তাঁদের স্ত্রীরা রাস্তায় নামবেন৷ আপনি হেমন্তকে গ্রেফতার কেন করালেন? দেশের একমাত্র আদিবাসী মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন৷ অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে গ্রেফতার করলেন৷ তাতেও কিছু হবে না, ওরা আরও বেশি ভোটে জিতবে৷’

জলপাইগুড়ি-সহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকা ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে বিপর্যস্ত। দুর্গতদের পাশে দাঁড়িতে সেই রাতেই পৌঁছে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তার পরে রাজ্যে ভোট প্রচারে এসেও কোনও মন্তব্য করেননি মোদি। এই নিয়ে তৃণমূল সুপ্রিমো-সহ দলীয় নেতৃত্ব নিন্দা করার পরে রবিবার জলপাইগুড়ি এসে সেই বিষয়ে শুধু শুকনো দুঃখপ্রকাশ করেই দায় সেরেছেন তিনি। এই নিয়েও এদিন সভা থেকে প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, “আপনি ব্লকে ব্লকে প্রচার করুন। আমার আপত্তি নেই। এটা আপনার গণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু আপনি জলপাইগুড়ির সভা থেকে ওখানকার মানুষদের জন্য কি কোনও সাহায্যের কথা ঘোষণা করলেন?” মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, নির্বাচন কমিশনের অনুমতি না মেলেও রাজ্য প্রশাসন বাড়ির ব্যবস্থা করতে পারছে না।