হাতে ফুটবল নিয়ে ইস্টবেঙ্গল মাঠে প্রবেশ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের । সঙ্গে ছিলেন ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, ফিরহাদ হাকিম এবং ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন ফুটবলার, ক্লাব কর্তারা। বক্সের সামনে বল বসিয়ে কিক অফ করলেন মুখ্যমন্ত্রী। পূর্ব পরিকল্পনা মতোই ইস্টবেঙ্গলের রাজা সুরেশ চন্দ্র চৌধুরী মেমোরিয়াল আর্কাইভ উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছিলেন ইস্টবেঙ্গলের ইনভেস্টর ইমামির প্রতিনিধিরাও। ইস্টবেঙ্গলের আইএসএল খেলার ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বড় অবদান রয়েছে। শেষ মুহূর্তে ইনভেস্টর এনে দেওয়া, এবারও ইস্টবেঙ্গলের ইমামিকে ইনভেস্টর হিসেবে পাওয়া, সবটাই মুখ্যমন্ত্রীর সৌজন্যে। ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে দাঁড়িয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সমর্থকদের আশ্বস্ত করেন এই সমস্যা আর হবে না। মুখ্যমন্ত্রীকে ‘দিদি ১০০’ লেখা জার্সি তুলে দেওয়া হল ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের পক্ষ থেকে। ইস্টবেঙ্গলের অনুষ্ঠানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘ইচ্ছে থাকলেই, উপায় হয়। নিজে আত্মবিশ্বাসী হলে তবেই অন্যকে হারানো যায়। ইস্টবেঙ্গলের আর্কাইভ দেখলাম। বিশ্বের অন্যতম সেরা আর্কাইভ। মুখে বলে কিংবা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। সত্যিই এটা দর্শনীয় আর্কাইভ। আমি মনে করি, সিএবি থেকে শুরু করে প্রত্যেকটা ক্লাবের আর্কাইভ গড়া উচিত।’ ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান দুই প্রধানই আইএসএলে খেলছে। মুখ্যমন্ত্রী চান মহমেডানও আইএসএলে খেলুক। ইস্টবেঙ্গলের আইএসএলে সুযোগ পাওয়া প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মোহনবাগান যখন আইএসএলে যুক্ত হল, ইস্টবেঙ্গল যখন লেফ্ট আউট ছিল, আপনাদের মনে অনেক দুঃখ ছিল। কী ছিল তো? রোজ সংবাদমাধ্যমে দেখছি, কর্তারা এখানে-ওখানে যাচ্ছেন। কিন্তু কোনও কুল-কিনারা পাচ্ছিল না। গত বারের দিনগুলো আমার মনে আছে। একেবারে শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত নিয়ে একজনকে রাজি করিয়ে ইস্টবেঙ্গলকে আইএসএলে খেলতে পাঠানো হল।’ ক্লাবের পরিকাঠামো উন্নয়ণের জন্য ইস্টবেঙ্গলের জন্য ৫০ লক্ষ টাকা অনুদান ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি মহমেডানে স্পোর্টিং ক্লাবের জন্যও ৫০ লক্ষ অনুদান ঘোষণা করেন। অন্যদিকে, ক্রীড়া বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে বলতে গিয়ে এ দিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমি একটু আগেই একজনের সঙ্গে ফোনে কথা বলছিলাম । তিনি আর কেউ নন, আমাদের শিক্ষামন্ত্রী । আমি যে কোনও কাজ করার আগে যে দায়িত্বে আছে তাঁকে ছুঁয়ে নিই । সেই মতো আমি শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে নিলাম । আমি গোয়েঙ্কাদের সঙ্গেও কথা বলে নিয়েছি । আমাদের সব আছে কিন্তু কোনও স্পোর্টস ইউনিভার্সিটি নেই । আসুন একটা স্পোর্টস ইউনিভার্সিটি তৈরি করি ।” মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “আগামী দিনে এখান থেকে অনেক ছেলেমেয়ে ক্রীড়া নিয়ে পড়াশোনা করতে পারবে । আগামিদিনে একাধিক স্পোর্টস স্কুল তৈরি হবে । আমরা জানি এভাবেই চিন তাদের দেশে স্পোর্টস স্কুল তৈরি করেছিল । আসুন, এই বাংলায় একটা সরকারি ক্রীড়া বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করি । সেখানে ইমামিরাও সঙ্গে থাকবে । চুঁচুড়ায় ইতিমধ্যেই সত্যমদের এ ধরনের একটা বিশ্ববিদ্যালয় করার কথা বলেছি । সেটা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে ।” মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের জায়গা নিয়ে চিন্তা করার দরকার নেই তিনি দেখে নেবেন । তাঁর মতে, ক্রীড়া বিশ্ববিদ্যালয় হলে ছেলেমেয়েরা ছোটবেলা থেকেই খেলাধুলায় প্রশিক্ষিত হবে । এখানে ওখানে ঘুরে বেড়াতে হবে না ।