কলকাতা

‘খালিস্তানি বিতর্ক’ থেকে ‘আধার বাতিল’! ভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে ক্ষোভ প্রকাশ মুখ্যমন্ত্রীর

একুশে ফেব্রুয়ারি, আন্তর্জাতিক ভাষা দিবসের দিনেও আধার কার্ড ডি-অ্যাক্টিভেট করা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে একহাত নিলেন মমতা৷ পাশাপাশি, পঞ্জাবি অফিসারের বিরুদ্ধে ‘খালিস্তানি’ মন্তব্য নিয়েও প্রতিবাদে সরব হলেন তিনি৷ মাতৃভাষা বাংলার পাশাপাশি জানালেন ইংরেজি শেখার গুরুত্বও৷ ‘বাংলার সংস্কৃতিকে ছিন্নভিন্ন করে, কোনও কিছু একটা চাপিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে’। খালিস্তানি বিতর্কে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী। বার্তা দিলেন, ‘শপথ নিন, আমরা আমাদের সংস্কৃতিকে ছিন্নবিছিন্ন করতে দেব না। অপমান করতে দেব না এবং চক্রান্ত করে আমাদের উপর কারও বোঝা চাপিয়ে দেব না’।বুধবার ছিল আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। কলকাতার দেশপ্রিয় পার্কে এক অনুষ্ঠানে মুখ্য়মন্ত্রী বলেন, ‘একটা পঞ্জাবি অফিসার কী দোষ ছিল তাঁর! সে ডিউটি করছে। পঞ্জাবি রেজিমেন্ট নেই, গোর্খা রেজিমেন্ট নেই! হ্যাঁ, বাঙালি রেজিমেন্ট নেই। যদিও সবচেয়ে বেশি আন্দোলন বাংলার লোকেরাই করেছে। পঞ্জাবি পাগড়ি পরে বলে তুমি তাঁকে খালিস্তানি বলে দেবে! কত মুসলিম অফিসাররা আছে, IPS, IAS, WBSC আছে। মুসলিম অফিসারকে পাকিস্তানি বলে দেবে’।মুখ্যমন্ত্রী কথায়, ‘২-১ গজিয়ে উঠেছে, সবচেয়ে বড় কলঙ্ক বাংলার! যারা বাংলাকে কলুষিত করছে। তাঁদের আমি বলি, আগামিদিন ভালো থাকবেন। আপনারা আমাদের খারাপ চাইলেও, আমরা কিন্তু আপনাদের খারাপ চাই না। কিন্তু বাংলা অধিকার-মর্যাদা কীভাবে রক্ষা করতে হয়, আমরা জানি। আমরা মাথা উঁচু করে চলি’।ঘটনাটি ঠিক কী? তখনও হাইকোর্টের অনুমতি আসেনি। কলকাতা থেকে সন্দেশখালি উদ্দেশ্যে রওনা হন শুভেন্দু অধিকারী। সঙ্গে ছিলেন অগ্নিমিত্রা পল, শংকর ঘোষ-সহ বিজেপি প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। ধামাখালিতে তাঁদের আটকায় পুলিশ। ব্যারিকেড করে দেওয়া হয় রাস্তায়। এরপর পুলিশের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়, তখন পাগরি পরা এক পুলিস আধিকারিকদের উদ্দেশ্য করে খালিস্থানি মন্তব্য করা হয় বলে অভিযোগ।  মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, ‘‘কেউ যদি ভাবেন চ্যানেলে বসে বাংলা ভাষা কে অপমান করবেন, পঞ্জাবি অফিসার কী দোষ করল, তুমি একটা পঞ্জাবি অফিসার আছে বলে তুমি তাকে খালিস্তানি বলে দেবে? দু’একজন গজিয়ে উঠছে যাঁরা বাংলাকে লাঞ্ছনা করছে, আমি তাঁদের বলে রাখি আগামী দিনে আপনারা ভাল থাকুন। আমরা মাথানত করতে জানি না।’’ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে বাংলা ভাষা নিয়েও বিশেষ বার্তা দিতে দেখা যায় মুখ্যমন্ত্রীকে৷ তিনি বলেন, ‘‘কিছুদিন আগে প্রতুল দা অসুস্থ ছিলেন। সব ভাষার তার নিজস্বতা আছে। সব ভাষাকে আমরা সম্মান করি। সবার মত প্রকাশের স্বাধীনতা আছে। আমি অলচিকি ভাষায় লিখেছি৷ আজ একটা প্রবণতা চলছে বাংলার সংস্কৃতিকে ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করে৷ যে ভরসা যোগায়, বিশ্বাস যোগায়, সেই সংস্কৃতিকে লাঞ্ছনা করে কোনো কিছু একটা চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। তাই আমি বলব আজ শপথ নিন বাংলার এই চক্রান্তকে ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করতে দেব না।’’এদিন আধার বাতিল করা নিয়ে সরব হন মমতা৷ বলেন, ‘‘আধার নিয়ে যা হল, আমরা এটা রুখে দিয়েছি। বাংলাই পারে। আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। সব মতুয়াদের আধার কার্ড ডি-অ্যাক্টিভেট করে দিয়েছে। কেন কাটল, কারণ ওরা বলে (ওঁরা) বিদেশি। ৫ বছর বাদে শুনতে হবে বিদেশি বিদেশি। আমি ভোটের অঙ্কে বিশ্বাস করি না, মানবিকতায় বিশ্বাস করি।’’