কলকাতা

বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে ডিভিসি-কে তোপ, ত্রাণ নিয়েও বঞ্চনার অভিযোগ মমতার 

ডিভিসি জল ছাড়ছে, বাংলা ডুবছে, আর কেন্দ্র নীরব ! আবারও সেই পুরনো ক্ষোভ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায় ৷ মঙ্গলবার নবান্নে দুর্যোগ পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে বিভিন্ন দফতরকে নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন তিনি ৷ পর্যালোচনা বৈঠক শেষে মমতা অভিযোগ করলেন, ডিভিসি রাজ্য সরকারের কথা শুনছে না ৷ এমনকি তিনি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়ার পরেও কোনও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রীর ৷ মঙ্গলবার রাজ্যের বিভিন্ন জেলার বন্যা পরিস্থিতি, ত্রাণ ও উদ্ধারকাজ নিয়ে জেলা প্রশাসনগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয় ৷ সেখানেই কেন্দ্রীয় বঞ্চনা ও সহযোগিতার অভাব নিয়ে বিস্তর অভিযোগ করেন মমতা ৷ তাঁর অভিযোগ, “অসম বন্যায় টাকা পায়, বাংলা পায় না ৷ গঙ্গা ভাঙনে টাকা নেই, নদী ভাঙনেও টাকা বন্ধ ৷ কয়েকটা জেলা পুরো ডুবে যাওয়ার পরেও যদি কেন্দ্র সাহায্য না-করে, তাহলে বুঝতে হবে ভোটের সময় ছাড়া ওদের বাংলার কথা মনে পড়ে না ৷”মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন, 18 জুন থেকে আজ পর্যন্ত ডিভিসি 27 লক্ষ কিউবিক মিটার জল ছেড়েছে। তাঁর বক্তব্য, “কেউ নিজেকে বাঁচাতে জল ছেড়ে দিচ্ছে, আর বাংলা ডুবে যাচ্ছে ৷ এটা 15 বছর ধরে চলছে ৷ যদি, পলি তুলতো ঠিকমতো, তাহলে আরও 4 লক্ষ কিউসেক জল ধরে রাখতে পারত ৷ কিন্তু, কেউ দায় নিচ্ছে না ৷” এই জলছাড়ার ফলে ঘাটাল, খানাকুল, কেশপুর, ঝাড়গ্রাম, চন্দ্রকোনা, পাঁশকুড়া, গোঘাট-সহ বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে গিয়েছে ৷রাজ্যের তরফে সাধ্যমতো সবরকম প্রস্তুতির আশ্বাসও দিলেন মমতা ৷ তিনি জানান, প্রতিটি জেলার জন্য তিনজন করে প্রিন্সিপাল সেক্রেটারিকে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে ৷ যাঁরা সাত দিন সংশ্লিষ্ট জেলায় থেকে পরিস্থিতি সামলাবেন ৷ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, মন্ত্রী, পুলিশ-প্রশাসনকে একযোগে কাজ করার নির্দেশ দেন তিনি ৷ পুরসভাগুলিকে নির্দেশ দেন- ঘরে বসে থাকলে চলবে না ৷ নিকাশি বন্ধ থাকলে সমস্যা হবে ৷ সেই সঙ্গে বাড়ি তৈরির নির্মাণ সামগ্রী রাস্তায় ফেলে রাখতেও নিষেধ করলেন ৷ত্রাণশিবিরে খাবার, জামাকাপড়, ওআরএস, ওষুধপত্র, শিশু খাদ্য- সবকিছু মজুত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকেও কাজে লাগাতে বললেন ৷ এ দিন সাংবাদিক বৈঠকে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির কাছে সরাসরি আবেদন রাখেন মমতা ৷ বলেন, “এই সময় প্রশাসন ব্যস্ত থাকবে, তাঁদের অন্য কাজে ব্যস্ত করবেন না ৷ সরকারকে সহযোগিতা করুন, মানুষের পাশে দাঁড়ান ৷ আমি আশা করি, সব দল সহযোগিতা করবে ৷” বিপর্যয় মোকাবিলায় এনডিআরএফ ও এসডিআরএফ মোতায়েন করা হবে বলেও জানান তিনি ৷ রাজ্যের প্রত্যেক বিএসকে কেন্দ্র, ব্লক অফিস, জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেন, মানুষের যেকোনও দরকারে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর দফতর বা সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক স্তরে যোগাযোগ করতে ৷