উত্তরপ্রদেশ-সহ আসন্ন পাঁচ রাজ্যের বিধাসভা নির্বাচনে হিন্দুভোট নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গঙ্গায় ডুব দিয়েছিলেন। স্নানের পর হাজির হয়েছিলেন কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরে। আর মোদির এই পদক্ষেপ নিয়ে নেটমহলে শুরু হয়েছে গুঞ্জন। আর ঠিক সেই দিন বিকেলে মোদি এবং তাঁর ব্রিগেডের বিরুদ্ধে সরব হতে দেখা গেল বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়কে। কারা হিন্দু, হিন্দুদের বৈশিষ্ট্য কী, সেটাও খুব কম কথার মধ্য দিয়ে ব্যাখ্যা করলেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘হিন্দু ধর্ম বিনয়ী হতে শেখায়। হিন্দু ধর্মের বৈশিষ্ট্য হল মানুষের হৃদয় জয় করা। এই ধর্ম কাউকে উগ্র করে তোলে না। এই গুণ যাদের মধ্যে রয়েছে, একমাত্র তারাই নিজেদের হিন্দু বলে দাবি করতে পারে।’ সেই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, তৃণমূল কংগ্রেস একমাত্র ধর্মনিরপেক্ষদল। বিজেপির বিরুদ্ধে কেউ যদি লড়াই করার ক্ষমতা রাখে, তাহলে সেই দলের নাম তৃণমূল।রাজনৈতিকমহলের একাংশের মতে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বকলমে বুঝিয়ে দিলেন মোদি এবং তাঁর বাহিনী নিজেদের যতই হিন্দু বলে দাবি করুক, সেটা স্রেফ ভাঁওতাবাজি। আর দেশবাসী সেই ভাঁওতাবাজি ধরে ফেলেছে। বিজেপি মানেই যে সাম্প্রদায়িক দল, সেটা আর কারও জানতে বাকি নেই। বিজেপিকে যেমন রেয়াত করেননি, রেয়াত করেননি কংগ্রেসকেও। জনসভা থেকে মুখ্য়মন্ত্রী বলেন, একসময় তিনিও কংগ্রেসে ছিলেন। কংগ্রেস করতে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন শাসকদলের হাতে মারও খেতে হয়েছে। কিন্তু লড়াইয়ের ময়দান থেকে কখনও সরে আসেনি। কিন্তু পরবর্তী কালে যখন দেখলেন কংগ্রেসে থেকে লডাই করা সম্ভব হবে না, তখন দলত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন। প্রথম সেই লডা়ই ছিল বাম অপশাসনের বিরুদ্ধে। এখন লড়াই বিজেপির বিরুদ্ধে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট বার্তা, ‘ভোট বিভাজন করতে আসিনি। মুখ্যমন্ত্রী হতে আসিনি। গোয়ার লোককে সামনে রেখেই কাজ করব। অভিজ্ঞতা দিয়ে সাহায্য করব’। এমনকী, নাম না করে ‘জোট-বার্তা’ দিলেন কংগ্রেসকেও। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘বিজেপির একমাত্র বিকল্প তৃণমূল। আমরা লড়াই করব, কিন্তু ঝুঁকব না’। তাঁর কথায়, ‘বাংলায় এখন দেশের এক নম্বর রাজ্য। বাংলায় ৪৭ শতাংশ বেকারত্ব কমেছে। স্বাস্থ্য ও শিক্ষা পরিষেবা বিনামূল্যে পাওয়া যায়। ঘরে ঘরে রেশন পৌঁছয়। সরাসরি ধান কিনে নেয় সরকার। গোয়ায় তৃণমূল জিতলে উন্নয়ন হবে’। আর বিজেপি? তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, ‘বিজেপি ভিডিয়ো বানায়। বাংলাদেশের ভিডিয়ো বাংলায় ছড়িয়ে দেয়। সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করেছি। মামলাটি এখনও বিচারাধীন। মানবাধিকার কমিশনে বিজেপির লোক বসিয়ে দিয়েছে। কথায় সিবিআই-ইডি-ইনকাম ট্যাক্স পাঠিয়ে দেয়’। রাজ্যপালকে কটাক্ষ, ‘রাজভবনে একজন রাজা বসে। কিনা না বলে! বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতির থেকে বড়’!