দেশ

বালেশ্বর কলেজে ছাত্রী মৃত্যুতে অগ্নিগর্ভ ওড়িশা, প্রতিবাদ থামাতে চলল জলকামান, বনধের ডাক কংগ্রেসের

নিজের সম্মান বাঁচাতে দ্বারস্থ হয়েছিলেন কলেজ কর্তৃপক্ষের। সাড়া মেলেনি। বসেছিলেন পথে। মেলেনি সমাধান। শেষমেষ অন্যায়ের প্রতিবাদে নিজের গায়েই আগুন লাগিয়েছিলেন ওড়িশার বিএড পাঠরতা। জীবন্ত দগ্ধ হয়েছিলেন কলেজ ক্যাম্পাসে। শরীরের ৯০ শতাংশ জ্বলে-গলে গিয়েছিল। চিকিৎসকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে মঙ্গলবার রাতেই মারা গিয়েছেন বালেশ্বরের ফকির মোহন কলেজের বি.এডের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। তারপর থেকেই অগ্নিগর্ভ বাংলার প্রতিবেশী রাজ্য। বিজেপি শাসিত ওড়িশার এই ভয়ঙ্কর ঘটনা গোটা দেশে তোলপাড় ফেলে দিয়েছে। ‘জাস্টিস’ চেয়ে রাজপথে নেমেছেন ছাত্রছাত্রীরা। প্রতিবাদের আগুন দিকে দিকে। বালেশ্বর কলেজের ছাত্রী মৃত্যু ঘটনায় উত্তপ্ত হচ্ছে ওডিশার রাজনীতি। এই ঘটনায় দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন ওডিশার মুখ্যমন্ত্রী মোহনচরণ মাঝি। কিন্তু তাতে সন্তুষ্ট নয় কংগ্রেস, বিজেডি-সহ একাধিক বিরোধী রাজনৈতিক দল। ওই ছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার ওড়িশা বন‍ধের ডাক দিয়েছে কংগ্রেস-সহ একাধিক বিরোধী দল। অন্য দিকে, এই ঘটনা নিয়ে রাজনীতি না করার আবেদন করেছেন ছাত্রীর বাবা। বালেশ্বরের ফকির মোহন কলেজের এক অধ্যাপকের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ ওঠে। এই অভিযোগ করেন ওই কলেজেরই এক ছাত্রী। অভিযুক্ত অধ্যাপকের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হয়নি বলে অভিযোগ করে শনিবার কলেজ ক্যাম্পাসেই গায়ে

আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ওই ছাত্রী। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে ভর্তি করা হয় ভুবনেশ্বর AIIMS-এ। সোমবার রাতে সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে ওই কলেজের অধ্যাপক সমীরকুমার সাহু এবং কলেজের অধ্যক্ষ দিলীপকুমার ঘোষকে। দোষীদের কড়া শাস্তির আশ্বাস দিয়েছেন বিজেপি-শাসিত ওডিশার মুখ্যমন্ত্রী মোহনচরণ মাঝি। পুলিশের পাশাপাশি তদন্ত শুরু করেছে ওডিশার উচ্চশিক্ষা দপ্তর। তবে এর পরেও সরব হয়েছে কংগ্রেস এবং বিভিন্ন বিরোধী দল। ছাত্রীর মৃত্যুর ঘটানর প্রতিবাদে মঙ্গলবার বিরোধীদের বিক্ষোভে উত্তাল হয় ভুবনেশ্বর। এরই পাশপাশি, বৃহস্পতিবার ওডিশা বন‍ধের ডাক দিয়েছে কংগ্রেস-সহ একাধিক বিরোধী দল। এই ঘটনায় বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবি করেছেন ওডিশার বিজেডি দলের বিধায়ক দেবীরঞ্জন ত্রিপাঠি। সেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং উচ্চ শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেন তিনি। ওই ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার রাতেই হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ দেখায় কংগ্রেসও। কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়ঙ্কা গান্ধীও সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই ছাত্রীর মৃত্যু নিয়ে সরব হয়েছেন। তাঁর দাবি, কলেজের এক ছাত্রী তাঁর ওপর হওয়া অত্যাচারের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছিলেন। কিন্তু ন্যায়বিচার পাওয়ার পরিবর্তে তিনি অপমান এবং হয়রানির শিকার হন। এই কারণেই গায়ে আগুন লাগাতে বাধ্য হন ওই পড়ুয়া। মঙ্গলবারই বালেশ্বরের নিজের গ্রামে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় ওই ছাত্রীর।