শহর কলকাতায় যাতে বিদ্যুৎ পৃষ্ট হয়ে আর কোন মানুষের মৃত্যু না হয় তা নিশ্চিত করতে এবার আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল কলকাতা পুরসভা। যে বা যারা অনৈতিকভাবে বিদ্যুৎ চুরি করছে, হুকিং করছে, অনৈতিকভাবে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হচ্ছে, এমন তার বিদ্যুৎ এরপোলগুলিতে খোলা অবস্থায় ঝুলিয়ে রাখছে তাদের চিহ্নিত করে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে কড়া শাস্তির ব্যবস্থা করবে কলকাতা পুলিশ। পাশাপাশি এই ধরনের অবৈধ বিদ্যুতের কারবারিদের চিহ্নিত করে এবং যাদের অনৈতিক কাজের জন্য মানুষের প্রাণহানি ঘটবে- তাদের বিরুদ্ধে ৩০৭ ধারা বা মার্ডার চার্জ আনা যায় কিনা তা খতিয়ে দেখার পরামর্শ দিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। সম্প্রতি একবালপুরে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হওয়ার ঘটনার জেরে কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম একটি জয়েন্ট মেকানিজম গ্রুপ গঠনের লক্ষ্যে এদিন উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বসলেন। কলকাতা পুলিশ কমিশনার সহ উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের পাশাপাশি এদিন সিইএসসি, রাজ্য বিদ্যুৎ পর্ষদ, কলকাতা পুরসভার বিদ্যুৎ বিভাগ এর আধিকারিক এবং কলকাতা পুরসভার পুর কমিশনার বিনোদ কুমারের উপস্থিতিতে এই উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকটি হয়। আসন্ন বর্ষার কথা মাথায় রেখে, শহর কলকাতার মানুষকে জল যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিতে এবার সমস্ত রকম ভাবে প্রস্তুতি চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বসেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র, ফিরহাদ হাকিম। মূলত, শহর কলকাতা জুড়ে যে সমস্ত নিকাশি খাল গুলি রয়েছে সেই খাল গুলি সংস্কার এর কাজের গতিপ্রকৃতি এবং কতটা কাজ এখনো পর্যন্ত শেষ হয়েছে ও কতটা কাজ এখনো বাকি রয়েছে রাজ্য শেষ দপ্তরের কাছ থেকে তার খতিয়ান নেওয়া। শহর কলকাতায় ভারী বর্ষণ হলে অতি দ্রুত জল বের করার জন্য প্রতিটি খালের সঙ্গে সংযুক্ত লক গেট গুলির প্রপার রক্ষণাবেক্ষণ এর কাজ শেষ করা, শহরের সমস্ত পাম্পিং স্টেশনের পাম্প মেশিনগুলি এর রক্ষণাবেক্ষণের কাজ দ্রুত শেষ করে তা প্রস্তুত করে রাখা, যেকোনো ধরনের বিপর্যয় মোকাবিলায় উদ্ধার কার্য যাতে দ্রুত করা যায় তার জন্য ফায়ার সার্ভিস ও ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট গ্রুপকে প্রস্তুত রাখা। আইনশৃঙ্খলা ও জনজীবনকে সচল রাখার লক্ষ্যে কলকাতা পুলিশের তৎপরতা ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা সহ একাধিক বিষয় নিশ্চিত করার লক্ষ্যে একটি জয়েন্ট মেকানিজম গঠন করে কাজ শুরু করা ও প্রস্তুত রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয় এদিনের বৈঠকে। এদিন কলকাতা পুরসভায় মেয়র ফিরহাদ হাকিমের নেতৃত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য সরকারের সেচ দপ্তর, কলকাতা পুলিশ, কে আই টি, কে আইপি, কেএমডিএ, ফায়ার সার্ভিস, কলকাতা পুরসভার নিকাশী ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, আবহাওয়া দপ্তরের আধিকারিকগণ, কে এম আর সি এল, কলকাতা মেট্রো রেলওয়ে, পূর্ব রেলওয়ে, সহ বিভিন্ন বিভাগের শীর্ষ আধিকারিকগণ।শহর কলকাতার জল জমার বিষয়টি নিষ্পত্তি করার লক্ষ্যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মেনে এদিন একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এবার থেকে কলকাতা পুরসভার কন্ট্রোলরুমে বর্ষা এ রাজ্যে প্রবেশ করা সময় থেকে বর্ষার শেষ পর্যন্ত নিকাশি খাল গুলির বিভিন্ন বিষয়ে মনিটরিং করার লক্ষ্যে একজন আধিকারিক এই কন্ট্রোলরুমে ডিউটি করবেন বলে এদিন জানান রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম।